মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে আজ শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মন্দিরে আজ শুক্রবার (২০শে অক্টোবর) সকালে পঞ্জিকা তিথি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয় ষষ্ঠিপূজা। সন্ধ্যায় হবে দেবীর বোধন ও আরতি। এর মধ্য দিয়ে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে পদার্পণ করলেন দেবী দুর্গা।
আগামী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব।
দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যূহ বা আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামে অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাঁকে ডাকলেই তিনি তাঁর কষ্ট দূর করেন।
পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সারা দেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ।
শনিবার মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। মহাঅষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে রাত ৮ টা ৬ মিনিটে। সোমবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে শুরু হবে নবমী পূজা। পরদিন মঙ্গলবার দশমী পূজা শুরু সকাল ৬টা ৩০মিনিট। পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটের মধ্যে। সন্ধ্যায় আরাত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনব্যাপি এ উৎসবের।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার জানিয়েছেন, এবার সারা দেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে ২৪৬টি মণ্ডপে। গতবছর সারা দেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি মন্দিরে এবং রাজধানীতে ২৪১টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর, ধর্ম মন্ত্রণালয়, মহানগর পুলিশ কমিশনার, নৌ-পুলিশের সঙ্গে নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে।