প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে আইনের শাসন ও প্রতিটি মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
শনিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আইনজীবী মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। আইনজীবী মহাসমাবেশে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ভার্চুয়ালি কোর্ট ব্যবস্থা চালু করেছি। কারাগারে ডিজিটাল ব্যবস্থা করেছি। তাই যেসব আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে আনা সম্ভব হচ্ছে না, তাদের জন্য ভার্চুয়ালি বিচার শুরু করতে হবে। বিচার ব্যবস্থাকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলে হবে। জাতির পিতা শুধু আমাদের সংবিধানই দেননি। তিনি আইনজীবীদের জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করে সেখানে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে যান। দেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে শিল্প কারখানা তৈরি করেছেন। পাকিস্তান আমলে জুডিসিয়াল সার্ভিস কাউন্সিলে মহিলারা যেতে পারত না। বঙ্গবন্ধু আইন সংশোধন করেই নারীদের জুডিসিয়াল সার্ভিসে যোগদানের সুযোগ করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি, এদেশের নাগরিক হিসেবে বিচার পাওয়া আমাদের অধিকার ছিল না। কিন্তু সে অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। ইনডেমনিটি আইন জারি করে। শুধু ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়নি, জিয়াউর রহমান জনগণের ভোট চুরি করে নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংস করেছে। তার হ্যাঁ/না ভোট। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংবিধান এবং মিলিটারি আইন ভঙ্গ করে নিজে সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এরপর দল গঠনের মধ্য দিয়ে জনগণের সঙ্গে কারচুপি করে।
তিনি আরও বলেন, ’৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করে তখন থেকে আমাদের লক্ষ্য যেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ছয় দফা দিয়েছিল। ছয় দফা যখন দিয়েছিল তখনও তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষ গণঅভ্যুত্থান চালিয়ে জাতির পিতাকে উদ্ধার করেছিল। তিনি বারবার গ্রেপ্তার হয়েছেন, অনেক সময় তাকে সাজাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি থেমে যান নাই। সত্তরের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সত্ত্বেও পাকিস্তানিরা বাঙ্গালিদের ক্ষমতায় আসতে দেবে না। জাতির পিতা জানতেন এবং তার প্রস্তুতিও ছিল। ২৫ মার্চ যখন পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা করে, সঙ্গে সঙ্গে জাতির পিতা শেখ মুজিব যুদ্ধের ঘোষণা দেন। এরপর সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। জাতির পিতা নির্দেশ ও আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রু মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া। শুধু বিচার হীনতার সংস্কৃতি নয়, হ্যা-না ভোটের মধ্যদিয়ে নিয়ম ভেঙে সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় ভোট করে, দেশে ভোট কারচুপির সংস্কৃতির চালুও করে জিয়া।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে বিজয় স্বাধীনতা আমার বাবা এনেছিল, তা যেন ব্যর্থ না হয়, সেজন্যই ৮১ তে আমার ফিরে আসা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনের শাসন, বিচার পাওয়ার অধিকার যেন প্রতিটি মানুষ পায়, সেটি নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭২ সালে স্বাধীনতার দশ মাসের মধ্যে একটি সংবিধান তিনি উপহার দেন। সারা বিশ্বের কোন দেশ এত দ্রুত সংবিধান দিতে পারেন নাই। জাতির পিতার হাত ধরেই বাংলাদেশের বিচার কার্যক্রমের গোড়াপত্তন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা অগ্নিসন্ত্রাসের সাথে জড়িত, যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে। এসব কাজের জন্য জেলায় জেলায় যেসব মামলা হয়েছে৷। সেগুলোর বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্য শেষ করতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনজীবীদের প্রতি আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগুন সন্ত্রাসীদের বিচার অবশ্যই বাংলাদেশে হতে হবে। এই বিচারের মধ্য দিয়েই বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হবে। আমাদের লক্ষ্য এদেশের মানুষ বিচার পাবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে।