বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের হিড়িক থামছেই না। তার দাবি, আবারও ভোটের আগের রাতে নৌকায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরার পরিকল্পনা চলছে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ শনিবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে এসব কথা বলেন রিজভী।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের হিড়িক থামছে না। আগের থেকে তা আরও জোরদার করা হয়েছে।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, ‘আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির উদ্যোগে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ উপলক্ষে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা ও জনগণকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা কর্মসূচি নিয়ে নানামুখী হুমকি দিচ্ছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যার তাদের যে ঐতিহ্য রয়েছে সেটিকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তারা এমনটি করছে।’
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হুমকি দিচ্ছেন জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘‘স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য সাঙ্গপাঙ্গরা বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে সরাসরি হত্যার হুমকি দিচ্ছে। ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে সরাসরি বলেছেন, ‘ডান্ডা মেরে ঠান্ডা’ করব না, মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দিয়ে ঠাণ্ডা করে দেব।’ আরেকজন মন্ত্রী বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘কেউ হুমকি দিলে কী করতে হবে, আওয়ামী লীগ সেটা জানে’।’’
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেন, ‘একদিকে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী নেতারা সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছেন। অন্যদিকে, তারা সহিংসতার হুমকি দিচ্ছেন। বিএনপির কর্মসূচি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তারা আওয়াজ তুলছেন। এই সমস্ত হুমকি কি সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্ব লক্ষণ? পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার সুরে সুর মিলিয়ে বলছেন, ২৮ অক্টোবর সহিংতা করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে দলবাজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না আসতে কী পরিমাণ নৃশংসতা চালাবে, তারই ইঙ্গিত এখনই পাওয়া যাচ্ছে। আবারও ভোটের আগের রাতে নৌকা মার্কায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলতে তারা সর্বোচ্চ সহিংসতায় লিপ্ত থাকবে। ইতোমধ্যেই দলবাজ প্রশাসনের মনোরঞ্জনের জন্য জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের উৎকোচ দেওয়া শুরু হয়েছে।’
সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা মামলার বিবরণ তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ১৮ অক্টোবর বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে মোট ৪৭ টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১২ হাজার ৭৩০ জনকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আমাদের ৪৬০ নেতাকর্মীকে।’