চার শর্ত তুলে নিলে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হবে আওয়ামী লীগের
- আপডেট সময় : ১০:২৪:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩
- / ৪০৮ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চারটি শর্ত প্রত্যাহার করলে তাদের সঙ্গে সংলাপে বসার কথা ভাববেন তারা।
দেশের শীর্ষ একটি দৈনিক পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন বিএনপি চায় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচন কমিশন বাতিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। এই চারটি শর্ত প্রত্যাহার করলেই তাদের সঙ্গে সংলাপের চিন্তা করা যাবে। এর বাইরে অর্থাৎ শর্তযুক্ত সংলাপে যাবে না আওয়ামী লীগ।
তবে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে তার কোনো কথা হয়নি বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন বন্ধ করার খেলা খেলবে। তারা সব কিছু লন্ডভন্ড করে দিয়ে হলেও নির্বাচন বানচাল চায়। তবে সেটি কিছুতেই হতে দেওয়া হবে না। আগামী নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে। অবশ্য কথিত লাগাতার আন্দোলন, কঠোর আন্দোলন, এক দফার আন্দোলন– সব কিছু ব্যর্থ হওয়ার পরও তারা যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া ও উন্মত্ত হয়ে আছে। একটি জাতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যে সততা, দেশপ্রেম, সুদৃঢ় নেতৃত্ব ও আত্মপ্রত্যয় প্রয়োজন তার কোনো প্রকার রাজনৈতিক চর্চা বিএনপিতে নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপি অবরোধ করবে। সেই ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ হাঁ করে তাকিয়ে থাকবে? তারা জনজীবন বিধ্বস্ত করবে। আওয়ামী লীগ চুপ করে থাকবে? না, সেটি হবে না। অবশ্যই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। গণতান্ত্রিক চেতনা ও মূল্যবোধের প্রতি বিশ্বাস না রেখে উস্কানির মাধ্যমে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণও তাদের ছাড় দেবে না। লাল কার্ড দেখাবে।
বিএনপি নির্বাচনে না এলে ভোটার উপস্থিতি কম হবে, এমন আশঙ্কার জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বিএনপি সাম্প্রতিক সময়ের সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারপরও ৪০ থেকে ৫০ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর চেয়েও বেশিসংখ্যক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
তবে কী বিএনপিকে বাদ দিয়েই নির্বাচনের কথা ভাবছে আওয়ামী লীগ—এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, অনেক রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। আওয়ামী লীগ চায়, বিএনপিও নির্বাচনে আসুক। তারা না এলে তো নির্বাচন থেমে থাকবে না। ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। ১৪ দলের বাইরেও অনেক রাজনৈতিক দল আসতে পারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জোটে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ওই সরকারের মন্ত্রিসভার আকার কেমন হবে, তা নির্ধারণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই মন্ত্রিসভা ছোট হবে না বড় হবে কিংবা একই রকম থাকবে সেটি নির্ধারণের এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না। অবশ্য শুধু বাংলাদেশেই নয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা দুনিয়ায় দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। এই সংকট গোটা বিশ্বের। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সরকার চিন্তায় আছে। তবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছেন। সুতরাং, দ্রব্যমূল্য কমে আসবে। এই কষ্ট থাকবে না।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের মুরব্বিদের সঙ্গে কথা হয়েছে, এই বক্তব্যের প্রসঙ্গে যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী কাদের বলেন , প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ মার্কিন প্রশাসনের খুবই উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের অনেক কথা হয়েছে। এ আলোচনার প্রসঙ্গ প্রকাশ্যে আনা হয়নি। সবকিছু প্রকাশ্যে হয় না। সব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনাও হয় না। অনানুষ্ঠানিকভাবেই সমস্যার সমাধান হয়। রাজনীতিতে সব কথা সবসময় বলা যায় না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ভারত কখনোই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে হস্তক্ষেপ করেনি। আশা করি, আমেরিকাও কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না। দেশি-বিদেশি যত চাপই আসুক না কেন, সরকার কখনোই সংবিধানের বাইরে যাবে না। কোনো বার্তা কিংবা আলটিমেটাম দিয়ে লাভ হবে না। কারও পরামর্শ কিংবা নির্দেশ মতো নির্বাচন হবে না।