ঢাকা ০১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বঙ্গবন্ধু টানেলের দুয়ার খুলছে ২৮ অক্টোবর

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৮:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪৩১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে তৈরি হওয়া বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু টানেলের দুয়ার খুলছে ২৮ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করবেন স্বপ্নের এই মেগা প্রকল্প। উদ্বোধন ঘিরে এরই মধ্যে সাজ সাজ রব বন্দরনগরীতে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতুর পর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন গেমচেঞ্জার হতে যাচ্ছে এই টানেল।

ভুতুড়ে অন্ধকারে ডুবে থাকা পতেঙ্গায় এখন উৎসবের আমেজ। বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে নানা রঙের আলোর ঝলকানি। শুরু থেকেই কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা প্রকল্প এলাকায় এখন কড়াকড়ি আরও বেশি। তবে দূর থেকেই টানেলের ফটক জানান দেয় আত্মমর্যাদায় আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবার।

যুগান্তকারী এই প্রকল্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাসহ রক্ষণাবেক্ষণেও থাকছে বিশেষ পদক্ষেপ। টানেলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে দুর্ঘটনা বা অগ্নিকান্ড প্রতিরোধ ব্যবস্থা।

এ টানেলে দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলায় থাকছে বিশ্বের সর্বাধুনিক সরঞ্জাম সমৃদ্ধ রেসপন্ডার টিম ও দুটি ফায়ার স্টেশন। তারপরও দুই প্রান্তে থাকবে দুটি পূর্ণাঙ্গ ফায়ারস্টেশন। এছাড়া দুই প্রান্তে নিরাপত্তা দেবে দুটি থানা।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. আবদুল হালিম জানান, এই টানেলে আগুন লাগার সম্ভাবনা খুবই কম। যদি কোন কোন কারণে আগুন লাগে যায় তাহলে এখানে অত্যাধুনিক ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে যা ইতোমধ্যে চালু হয়েছে।

এক সেকেন্ডের জন্যও বিদ্যুতহীন হওয়ার সুযোগ নেই টানেল। তাই তিনধাপে করা হচ্ছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা। এখন দুই প্রান্তে দুটি সাবস্টেশনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রীড থেকে বিদ্যুত দেয়া হচ্ছে। তবে বিকল্প হিসেবে থাকছে ২ ঘণ্টা ব্যাকআপ দেয়ার মতো ইউপিএস। এর বাইরে আছে নিজস্ব জেনারেটর। টানেলে সার্বক্ষণিক প্রয়োজন প্রায় ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

কর্তৃপক্ষ বলছে, চট্টগ্রামকে চীনের সাংহাই শহরের আদলে নদীর দুইপাড়ে বিস্তৃত ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ ধারণাকে সামনে রেখে বানানো হয়েছে এই টানেল। দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মহেশখালীর সাথে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগের অন্যতম করিডোর হতে চলেছে এই টানেল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ জানান, এই টানেল নির্মাণের ফলে টাউন এক্সটেনশন হবে। এতে করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে।

টানেলকে ঘিরে কর্ণফুলি নদীর ওপারের কোরিয়ান ইপিজেড, চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে কলকারখানা সম্প্রসারণে দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। এই জনপদের লবণ, মাছ, কৃষিজ পণ্যের বাইরেও পর্যটন নিয়ে এখনই দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারকে ঘিরে যে ২৫টি মেগা প্রকল্প হচ্ছে এগুলোর কানেক্টিভিটি দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গা থেকে অপর প্রান্তে আনোয়ারা পর্যন্ত দুই টিউব সংবলিত মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার। আর এ টানেলের ভেতর দিয়ে নদীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ ৬ মিনিট সময় লাগবে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, টানেলকে ঘিরে দুই ধরনের নিরাপত্তার কথা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। একটা হলো টেনেলের ভেতেরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অন্যটি হল টানেল যারা ব্যবহার করবে বা টানেলকে ঘিরে দুই পাড়ে যে শিল্পায়ন বা উন্নয়ন হবে। তার ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে দুই পাড়ে দুইটি পূর্ণাঙ্গ থানার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

এর বাইরে টানেলে যানবাহন ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিকভাবে পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

নিউজটি শেয়ার করুন

বঙ্গবন্ধু টানেলের দুয়ার খুলছে ২৮ অক্টোবর

আপডেট সময় : ০৬:৪৮:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০২৩

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে তৈরি হওয়া বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু টানেলের দুয়ার খুলছে ২৮ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করবেন স্বপ্নের এই মেগা প্রকল্প। উদ্বোধন ঘিরে এরই মধ্যে সাজ সাজ রব বন্দরনগরীতে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতুর পর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন গেমচেঞ্জার হতে যাচ্ছে এই টানেল।

ভুতুড়ে অন্ধকারে ডুবে থাকা পতেঙ্গায় এখন উৎসবের আমেজ। বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে নানা রঙের আলোর ঝলকানি। শুরু থেকেই কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা প্রকল্প এলাকায় এখন কড়াকড়ি আরও বেশি। তবে দূর থেকেই টানেলের ফটক জানান দেয় আত্মমর্যাদায় আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবার।

যুগান্তকারী এই প্রকল্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাসহ রক্ষণাবেক্ষণেও থাকছে বিশেষ পদক্ষেপ। টানেলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে দুর্ঘটনা বা অগ্নিকান্ড প্রতিরোধ ব্যবস্থা।

এ টানেলে দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলায় থাকছে বিশ্বের সর্বাধুনিক সরঞ্জাম সমৃদ্ধ রেসপন্ডার টিম ও দুটি ফায়ার স্টেশন। তারপরও দুই প্রান্তে থাকবে দুটি পূর্ণাঙ্গ ফায়ারস্টেশন। এছাড়া দুই প্রান্তে নিরাপত্তা দেবে দুটি থানা।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. আবদুল হালিম জানান, এই টানেলে আগুন লাগার সম্ভাবনা খুবই কম। যদি কোন কোন কারণে আগুন লাগে যায় তাহলে এখানে অত্যাধুনিক ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে যা ইতোমধ্যে চালু হয়েছে।

এক সেকেন্ডের জন্যও বিদ্যুতহীন হওয়ার সুযোগ নেই টানেল। তাই তিনধাপে করা হচ্ছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা। এখন দুই প্রান্তে দুটি সাবস্টেশনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রীড থেকে বিদ্যুত দেয়া হচ্ছে। তবে বিকল্প হিসেবে থাকছে ২ ঘণ্টা ব্যাকআপ দেয়ার মতো ইউপিএস। এর বাইরে আছে নিজস্ব জেনারেটর। টানেলে সার্বক্ষণিক প্রয়োজন প্রায় ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

কর্তৃপক্ষ বলছে, চট্টগ্রামকে চীনের সাংহাই শহরের আদলে নদীর দুইপাড়ে বিস্তৃত ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ ধারণাকে সামনে রেখে বানানো হয়েছে এই টানেল। দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মহেশখালীর সাথে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগের অন্যতম করিডোর হতে চলেছে এই টানেল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ জানান, এই টানেল নির্মাণের ফলে টাউন এক্সটেনশন হবে। এতে করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে।

টানেলকে ঘিরে কর্ণফুলি নদীর ওপারের কোরিয়ান ইপিজেড, চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে কলকারখানা সম্প্রসারণে দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। এই জনপদের লবণ, মাছ, কৃষিজ পণ্যের বাইরেও পর্যটন নিয়ে এখনই দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারকে ঘিরে যে ২৫টি মেগা প্রকল্প হচ্ছে এগুলোর কানেক্টিভিটি দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গা থেকে অপর প্রান্তে আনোয়ারা পর্যন্ত দুই টিউব সংবলিত মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার। আর এ টানেলের ভেতর দিয়ে নদীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ ৬ মিনিট সময় লাগবে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, টানেলকে ঘিরে দুই ধরনের নিরাপত্তার কথা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। একটা হলো টেনেলের ভেতেরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অন্যটি হল টানেল যারা ব্যবহার করবে বা টানেলকে ঘিরে দুই পাড়ে যে শিল্পায়ন বা উন্নয়ন হবে। তার ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে দুই পাড়ে দুইটি পূর্ণাঙ্গ থানার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

এর বাইরে টানেলে যানবাহন ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিকভাবে পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।