‘আপনি যেকোনো খেলোয়াড়কে যা করতে দেখেন, পেলে সেটা প্রথমেই করেছিলেন’। পেলেকে নিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা র স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ড। ক্রীড়াজগতের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তির জন্মদিন আজ। গতবছরই পরপারে পাড়ি জমিয়েছিলেন এই ফুটবল কিংবদন্তি।
পেলে ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরের ট্রেস কোরাকয়েসের এক বস্তিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার মা-বাবা নাম রেখেছিলেন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনের সঙ্গে মিল রেখে। পেলের পুরো নাম ‘এডসন অরান্তেস দো নাসিমেন্তো’। অবশ্য বস্তির বন্ধুরা পেলেকে চিনত ‘ডিকো’ নামে। তবে তিনি ‘কালোমানিক’ নামেও বিখ্যাত।
বস্তির অলিতে-গলিতে ফুটবল খেলে খুব ছোট বেলাতেই দৃষ্টিকাড়েন পেলে। অর্থাভাবে অনুশীলনের জন্য একটি বলও কিনতে পারতেন না তিনি। তাই পুরোনো মোজায় খবরের কাগজ মুড়িয়ে ফুটবল বানিয়ে খেলতেন। তার প্রতিভা দেখে চোখে পড়ে যায় সান্তোসের গ্রেট ওয়ালডেমার ডি ব্রিটোর। পেলে জীবনের মোড় ঘুরে যায় তখনই। সে সময় পেলের বয়স ছিল ১৫ বছর। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সান্তোস ক্লাবে, যোগ দেন ‘বি’ টিমে। সহজাত প্রতিভা দেখিয়ে এক বছরের মধ্যেই মূল দলে নিজের জায়গা করে নেন পেলে। আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
কথিত আছে, পেলের আবির্ভাবের আগে ‘১০’ নম্বর জার্সি ছিল নিতান্তই একটা সংখ্যা। কিন্তু পেলের আবির্ভাবের পর এই ‘১০’ সংখ্যাটি অন্য রকম এক মহিমা পেয়েছে। ফুটবলে পরবর্তীতে ১০ নম্বর জার্সি পরে খেলেছেন অনেক কিংবদন্তিই।
একুশ বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারে পেলে ১,৩৬৩টি ম্যাচে নেমেছেন এবং গোল দিয়েছেন ১,২৮২টি, যা বিশ্ব রেকর্ড। এর মধ্যে নিজের দেশের হয়ে ৯২টি ম্যাচে খেলেছেন তিনি, যেখানে তার গোলের সংখ্যা ৭৭। তিনি একমাত্র ফুটবলার যিনি বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের গৌরব অর্জন করেছেন তিন বার- ১৯৫৮, ১৯৬২ এবং ১৯৭০ সালে। ২০০০ সালে পেলে ফিফার শতাব্দী সেরা ফুটবলারের খেতাব পান।
কিংবদন্তি এই ফুটবলার পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর।