১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভৈরবে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালগাড়ির সংঘর্ষ, বহু হতাহত

কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার জংশনে যাত্রীবাহী এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেসের সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় অন্তত ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে র‌্যাব-বিজিবি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী।

সোমবার বিকেল ৩টায় দুর্ঘটনাটি হয়। স্থানীয়রা বলছেন, এখনো বহুমানুষ ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযান চলছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নিহত ও আহতদের সংখ্যাও। যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস এবং জেলা ও রেলওয়ে পুলিশ। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে চলছে আহতদের আহাজারি। আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ঢাকা থেকে একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেন ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করছিল। তার আগ মুহূর্তে ভৈরব থেকে এগারসিন্ধুর ট্রেন ঢাকার দিকে রওনা হয়েছিল। কন্টেইনারবাহী ট্রেনটি জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এগারসিন্ধুর ট্রেনকে আঘাত করে।’

ভৈরব ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। ধারণা করা হচ্ছে, উল্টে যাওয়া বগির নিচে এখনো অনেকেই চাপা পড়ে আছেন। আমরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছি।’

ভৈরবের ঘটনাস্থল থেকে আমাদের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহত বা নিহতের সংখ্যা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। নিহতদের শনাক্তের কাজও এখনো শুরু হয়নি। ‘যাত্রীবাহী ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল। ভৈরব থেকে যখন এটি রওয়ানা দেয়, ঠিক তখনই এটার সাথে কন্টেইনারবাহী ট্রেনটির সংঘর্ষ হয়। এগারসিন্ধুরের যে যাত্রীরা ছিলেন তাদের বেশিরভাগই কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা। কিশোরগঞ্জ থেকে ভৈরবের যে দূরত্ব সেটা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার। এ কারণে স্বজনদের ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহগুলো শনাক্ত করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।’

প্রতিনিধি জানিয়েছে, ‘উদ্ধারকাজ চলছে। আহতদের ভৈরবের সরকারি হাসপাতাল এবং ভাগলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের সঙ্গে স্থানীয়রাও উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করছেন। সন্ধ্যার পর থেকে আলো জ্বেলে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আহত প্রায় সকলকেই বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। রাতের মধ্যেই আখাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন আসবে। উদ্ধারকারী ট্রেন আসলে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটি সরানো হবে।’

এদিকে দুর্ঘটনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন স্বাভাবিক রাখার জন্য ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন যাচ্ছে দুর্ঘটনাস্থলে। দুর্ঘটনার কারণে ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের রেল যোগাযোগ বন্ধ আছে।

তদন্ত কমিটি গঠন
ভৈরবে যাত্রীবাহী এগারসিন্ধুর টেনের সঙ্গে কন্টেইনারবাহী ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল বিভাগ। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।

রেলের ৪ সদস্যের ঢাকা বিভাগীয় তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকছেন ঢাকার বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা। এছাড়াও সদস্য হিসেবে থাকবেন বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার লোকমেটিভ, বিভাগীয় প্রকৌশলী -১ এবং বিভাগীয় সিগন্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন প্রকৌশলী।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বিভাগেও একটি ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রেলের সিওপিএস মোঃ শহিদুল ইসলাম। তার সঙ্গে সদস্য হিসেবে থাকছেন চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাকির হোসেন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার আরমান হোসেন, সিএসপি তুষার এবং চিফ মেডিকেল অফিসার আহাদ আলী সরকার।

শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

ভৈরবে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালগাড়ির সংঘর্ষ, বহু হতাহত

আপডেট : ০১:৪০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার জংশনে যাত্রীবাহী এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেসের সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় অন্তত ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে র‌্যাব-বিজিবি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী।

সোমবার বিকেল ৩টায় দুর্ঘটনাটি হয়। স্থানীয়রা বলছেন, এখনো বহুমানুষ ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযান চলছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নিহত ও আহতদের সংখ্যাও। যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস এবং জেলা ও রেলওয়ে পুলিশ। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে চলছে আহতদের আহাজারি। আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ঢাকা থেকে একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেন ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করছিল। তার আগ মুহূর্তে ভৈরব থেকে এগারসিন্ধুর ট্রেন ঢাকার দিকে রওনা হয়েছিল। কন্টেইনারবাহী ট্রেনটি জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এগারসিন্ধুর ট্রেনকে আঘাত করে।’

ভৈরব ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। ধারণা করা হচ্ছে, উল্টে যাওয়া বগির নিচে এখনো অনেকেই চাপা পড়ে আছেন। আমরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছি।’

ভৈরবের ঘটনাস্থল থেকে আমাদের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহত বা নিহতের সংখ্যা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। নিহতদের শনাক্তের কাজও এখনো শুরু হয়নি। ‘যাত্রীবাহী ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল। ভৈরব থেকে যখন এটি রওয়ানা দেয়, ঠিক তখনই এটার সাথে কন্টেইনারবাহী ট্রেনটির সংঘর্ষ হয়। এগারসিন্ধুরের যে যাত্রীরা ছিলেন তাদের বেশিরভাগই কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা। কিশোরগঞ্জ থেকে ভৈরবের যে দূরত্ব সেটা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার। এ কারণে স্বজনদের ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহগুলো শনাক্ত করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।’

প্রতিনিধি জানিয়েছে, ‘উদ্ধারকাজ চলছে। আহতদের ভৈরবের সরকারি হাসপাতাল এবং ভাগলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের সঙ্গে স্থানীয়রাও উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করছেন। সন্ধ্যার পর থেকে আলো জ্বেলে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আহত প্রায় সকলকেই বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। রাতের মধ্যেই আখাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন আসবে। উদ্ধারকারী ট্রেন আসলে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটি সরানো হবে।’

এদিকে দুর্ঘটনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন স্বাভাবিক রাখার জন্য ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন যাচ্ছে দুর্ঘটনাস্থলে। দুর্ঘটনার কারণে ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের রেল যোগাযোগ বন্ধ আছে।

তদন্ত কমিটি গঠন
ভৈরবে যাত্রীবাহী এগারসিন্ধুর টেনের সঙ্গে কন্টেইনারবাহী ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল বিভাগ। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।

রেলের ৪ সদস্যের ঢাকা বিভাগীয় তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকছেন ঢাকার বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা। এছাড়াও সদস্য হিসেবে থাকবেন বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার লোকমেটিভ, বিভাগীয় প্রকৌশলী -১ এবং বিভাগীয় সিগন্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন প্রকৌশলী।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বিভাগেও একটি ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রেলের সিওপিএস মোঃ শহিদুল ইসলাম। তার সঙ্গে সদস্য হিসেবে থাকছেন চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাকির হোসেন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার আরমান হোসেন, সিএসপি তুষার এবং চিফ মেডিকেল অফিসার আহাদ আলী সরকার।