জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মন্তব্যের জেরে এবার বিশ্বসংস্থাটির সব কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদের ভিসা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম আর্মি রেডিওকে এমনটি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, `তার (মহাসচিব) মন্তব্যের কারণে আমরা জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানাব।` খবর দ্য টাইমস অব ইসরায়েল। এর আগে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের পদত্যাগ চায় ইসরায়েল। ফিলিস্তিন ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের পক্ষে ‘সাফাই’ গাওয়ায় তার এ পদত্যাগ দাবি করা হয়।
আগের দিন মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, `ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলা অকারণে এবং অযথা হয়নি। দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় গাজাবাসীকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কারণেই তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।` এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরায়েল। তাৎক্ষণিক জাতিসংঘের মহাসচিবের পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা। দেশটির পক্ষে এ দাবি তুলেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি দূত গিলাড ইরদান।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধ ১৯তম দিনে গড়িয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের অতর্কিত হামলার জেরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় প্রতিদিন হতাহত হচ্ছে চার শতাধিক ফিলিস্তিনি শিশু। এমন তথ্য সামনে এনেছে জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। গাজা-ইসরায়েল সংঘাতে ২০০৬ সালের পর থেকে গত ১৮ দিনের সংঘাত ও হতাহত ছিল সবচেয়ে বেশি।
চলতি মাসের ৭ তারিখ সকাল থেকে গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের অবিরাম নির্বিচার এই হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। অর্থাৎ ইসরায়েলের হামলায় যেসব ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু।