ঢাকা ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তলানিতে ঠেকছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:১৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪২৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনে দিনে তলানিতে ঠেকছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য বিদেশি মুদ্রার সঞ্চায়ন নেমেছে ১৭ বিলিয়ন ডলারের নিচে। এ দিয়ে ৩ মাসের আমদানির দায় মেটানো যাবে। বিশ্ব পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশ পর্যাপ্ত রিজার্ভ সংরক্ষণ করতে পেরেছে। তবে ভুল নীতির কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত নিম্নমুখী।

২ বছর আগেও রিজার্ভ নিয়ে আত্মতুষ্টির শেষ ছিল না বাংলাদেশের। কিন্তু বর্তমানে যেন এটিই হয়ে উঠেছে দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, বর্তমানে এ অঙ্ক ২৭ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নিয়মে তা ২১-এর নিচে। আর তা থেকে সোয়া ৪ বিলিয়ন ডলারের দায় বাদ দিলে ব্যবহারযোগ্য মজুত মাত্র ১৭ বিলিয়ন। যেটা ১৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের। সে হিসাবে, প্রতি মাসের গড় সোয়া ৫ বিলিয়ন। ফলে রিজার্ভের অর্থ দিয়ে দায় মেটানো যাবে মাত্র ৩ মাসের।

বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শক ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ৩ মাসের আমদানি খরচ মেটানোর মতো রিজার্ভ হাতে আছে। কিন্তু যেটা প্রয়োজন, সেখানে যেতে হলে এটা আরও বাড়াতে হবে। আমরা যদি এখন কঠোর মুদ্রানীতি গ্রহণ করি, তাহলে রিজার্ভ আরও কমবে। কারণ, আমদানির জন্য ব্যয় করতে হবে। ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

রিজার্ভ বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হলেও আর্থিক ও চলতি হিসাবে ভারসাম্যে বড় পার্থক্য থাকায় তা কাজে আসছে না। উল্টো চাহিদা মেটাতে প্রতিমাসে মজুত থেকে বিক্রি করতে হচ্ছে গড়ে ১ বিলিয়নের ওপরে। অথচ এর বিপরীতে সুবিধাজনক অবস্থানে ভারত, নেপালের মতো দেশ।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক দিন ধরে আমরা প্রতি ডলারের মূল্য ৮৬ টাকায় ধরে রেখেছি। এটার পুঞ্জিভূত প্রভাবটা একবারে আমাদের ওপর এসে পড়েছে। ফলে হঠাৎ করে মার্কিন মুদ্রার বিপরীতে টাকার মান কমেছে। যেটা অন্যান্য দেশে হয়নি। তারা বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলেছে। ডলারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের মুদ্রার মান ধীরে ধীরে কমিয়েছে।

প্রায় শূন্য থেকে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ানোর পথে দেউলিয়া হওয়া শ্রীলঙ্কাও। প্রশ্ন হলো, আর্থিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সেই দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য কোথায়? বিশেষজ্ঞদের মতে, ডলারের দরে বড় পার্থক্য থাকায় বেড়েছে হুণ্ডির প্রবণতা। যা ঠেকাতে কার্যকর উদ্যোগের পরামর্শ তাদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

তলানিতে ঠেকছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ!

আপডেট সময় : ০৮:১৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৩

দিনে দিনে তলানিতে ঠেকছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য বিদেশি মুদ্রার সঞ্চায়ন নেমেছে ১৭ বিলিয়ন ডলারের নিচে। এ দিয়ে ৩ মাসের আমদানির দায় মেটানো যাবে। বিশ্ব পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশ পর্যাপ্ত রিজার্ভ সংরক্ষণ করতে পেরেছে। তবে ভুল নীতির কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত নিম্নমুখী।

২ বছর আগেও রিজার্ভ নিয়ে আত্মতুষ্টির শেষ ছিল না বাংলাদেশের। কিন্তু বর্তমানে যেন এটিই হয়ে উঠেছে দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, বর্তমানে এ অঙ্ক ২৭ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নিয়মে তা ২১-এর নিচে। আর তা থেকে সোয়া ৪ বিলিয়ন ডলারের দায় বাদ দিলে ব্যবহারযোগ্য মজুত মাত্র ১৭ বিলিয়ন। যেটা ১৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের। সে হিসাবে, প্রতি মাসের গড় সোয়া ৫ বিলিয়ন। ফলে রিজার্ভের অর্থ দিয়ে দায় মেটানো যাবে মাত্র ৩ মাসের।

বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শক ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ৩ মাসের আমদানি খরচ মেটানোর মতো রিজার্ভ হাতে আছে। কিন্তু যেটা প্রয়োজন, সেখানে যেতে হলে এটা আরও বাড়াতে হবে। আমরা যদি এখন কঠোর মুদ্রানীতি গ্রহণ করি, তাহলে রিজার্ভ আরও কমবে। কারণ, আমদানির জন্য ব্যয় করতে হবে। ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

রিজার্ভ বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হলেও আর্থিক ও চলতি হিসাবে ভারসাম্যে বড় পার্থক্য থাকায় তা কাজে আসছে না। উল্টো চাহিদা মেটাতে প্রতিমাসে মজুত থেকে বিক্রি করতে হচ্ছে গড়ে ১ বিলিয়নের ওপরে। অথচ এর বিপরীতে সুবিধাজনক অবস্থানে ভারত, নেপালের মতো দেশ।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক দিন ধরে আমরা প্রতি ডলারের মূল্য ৮৬ টাকায় ধরে রেখেছি। এটার পুঞ্জিভূত প্রভাবটা একবারে আমাদের ওপর এসে পড়েছে। ফলে হঠাৎ করে মার্কিন মুদ্রার বিপরীতে টাকার মান কমেছে। যেটা অন্যান্য দেশে হয়নি। তারা বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলেছে। ডলারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের মুদ্রার মান ধীরে ধীরে কমিয়েছে।

প্রায় শূন্য থেকে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ানোর পথে দেউলিয়া হওয়া শ্রীলঙ্কাও। প্রশ্ন হলো, আর্থিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সেই দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য কোথায়? বিশেষজ্ঞদের মতে, ডলারের দরে বড় পার্থক্য থাকায় বেড়েছে হুণ্ডির প্রবণতা। যা ঠেকাতে কার্যকর উদ্যোগের পরামর্শ তাদের।