ঢাকা ১২:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অবস্থানে বিদ্রোহীদের হামলা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৫:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪১৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জাতিগত বিদ্রোহী জোট একযোগে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে আজ শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকালে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

বিদ্রোহীদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) যৌথভাবে একটি ‘সামরিক অভিযান’ চালায়।

বিস্তারিত কোনো বিবরণ উল্লেখ না করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো শান রাজ্যে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া এবং এই অঞ্চলে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানোর সামর্থ্যকে নস্যাৎ করে দেওয়া।’

নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উদ্ধারকর্মী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘শান রাজ্যের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে বিদ্রোহীরা ভোররাত ৪টা থেকে মর্টার শেল হামলা চালাতে থাকে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এ সময় কামানের গোলার মাধ্যমে পাল্টা জবাব দেয়।’

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর ফুটেজে দেখা যায়, হামলায় লাসিওর একটি টোল গেট ধ্বংস হয়ে গেছে। সেনা সমর্থনপুষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেল জানায়, বিদ্রোহীরা শান রাজ্যের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ১২টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। চীনের সঙ্গে সীমান্তজুড়ে থাকা ল্যাসিও ছাড়াও মুসে, চিনওয়েহাউ ও লাউকাই এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়। তবে, হামলার বিষয়ে জান্তা সরকারের মুখপাত্র তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় আসা সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের এই তিন সশস্ত্র সংগঠনের প্রায়ই সংঘর্ষ হয়। এই সংগঠনগুলোর প্রায় ১৫ হাজার যোদ্ধা রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন।

এ মাসের শুরুতে কাচিন রাজ্যে বাড়িঘর হারানো লোকজনের একটি শিবিরে হামলায় ৩০ জন নিহত এবং আহত হন অনেকে। কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) নামের জাতিগত বিদ্রোহীদের একটি সংগঠন এ হামলার জন্য জান্তা সরকারকে দায়ী করেছে।

কেআইএ’র সঙ্গে লড়াইয়ে বেশ কিছু সীমান্ত চৌকির নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর গত সপ্তাহে জান্তা সরকার ওইসব এলাকায় বিমান হামলা চালানোর নির্দেশ দেয় এবং চৌকিগুলো পুনরুদ্ধারে আরও সৈন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের কারণে নতুন করে চীনপন্থি জাতিগত বিদ্রোহী সংগঠনগুলো উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে হামলা শুরু করে। এই প্রদেশটিতে রয়েছে চীনের পরিকল্পিত বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, যা দেশটির বৈশ্বিক বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো প্রকল্পের অংশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অবস্থানে বিদ্রোহীদের হামলা

আপডেট সময় : ০৮:৩৫:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জাতিগত বিদ্রোহী জোট একযোগে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে আজ শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকালে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

বিদ্রোহীদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) যৌথভাবে একটি ‘সামরিক অভিযান’ চালায়।

বিস্তারিত কোনো বিবরণ উল্লেখ না করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো শান রাজ্যে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া এবং এই অঞ্চলে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানোর সামর্থ্যকে নস্যাৎ করে দেওয়া।’

নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উদ্ধারকর্মী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘শান রাজ্যের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে বিদ্রোহীরা ভোররাত ৪টা থেকে মর্টার শেল হামলা চালাতে থাকে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এ সময় কামানের গোলার মাধ্যমে পাল্টা জবাব দেয়।’

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর ফুটেজে দেখা যায়, হামলায় লাসিওর একটি টোল গেট ধ্বংস হয়ে গেছে। সেনা সমর্থনপুষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেল জানায়, বিদ্রোহীরা শান রাজ্যের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ১২টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। চীনের সঙ্গে সীমান্তজুড়ে থাকা ল্যাসিও ছাড়াও মুসে, চিনওয়েহাউ ও লাউকাই এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়। তবে, হামলার বিষয়ে জান্তা সরকারের মুখপাত্র তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় আসা সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের এই তিন সশস্ত্র সংগঠনের প্রায়ই সংঘর্ষ হয়। এই সংগঠনগুলোর প্রায় ১৫ হাজার যোদ্ধা রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন।

এ মাসের শুরুতে কাচিন রাজ্যে বাড়িঘর হারানো লোকজনের একটি শিবিরে হামলায় ৩০ জন নিহত এবং আহত হন অনেকে। কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) নামের জাতিগত বিদ্রোহীদের একটি সংগঠন এ হামলার জন্য জান্তা সরকারকে দায়ী করেছে।

কেআইএ’র সঙ্গে লড়াইয়ে বেশ কিছু সীমান্ত চৌকির নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর গত সপ্তাহে জান্তা সরকার ওইসব এলাকায় বিমান হামলা চালানোর নির্দেশ দেয় এবং চৌকিগুলো পুনরুদ্ধারে আরও সৈন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের কারণে নতুন করে চীনপন্থি জাতিগত বিদ্রোহী সংগঠনগুলো উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে হামলা শুরু করে। এই প্রদেশটিতে রয়েছে চীনের পরিকল্পিত বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, যা দেশটির বৈশ্বিক বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো প্রকল্পের অংশ।