ইসরায়েল বিএনপির ওপর সন্তুষ্ট, সে কারণে এজেন্ট পাঠিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৩:৪৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৩
- / ৪২৯ বার পড়া হয়েছে
জো বাইডেনের উপদেষ্টা হাজিরের গুজব নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিভিন্ন সূত্র বলছে, সেই ব্যক্তিটি ইসরায়েলের একজন এজেন্ট। আপনারা জানেন, ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিএনপি–জামায়াত কিছু বলেনি। এ জন্য ইসরায়েল বিএনপির ওপর সন্তুষ্ট। সে কারণে ইসরায়েলি এজেন্টকে তারা পাঠিয়েছে, যাকে নিয়ে বিএনপি গতকাল সভা করেছে।’
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন একজন ব্যক্তি একটু ইংরেজি বলতে পারে তাও তিনি যে নেটিভ আমেরিকান নন, সেটা তার উচ্চারণে বোঝা যায়। তাকে নিয়ে গিয়ে তারা সেখানে সংবাদ সম্মেলন করিয়েছে এবং পরিচয় দিয়েছে জো বাইডেনের উপদেষ্টা। মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি দিয়ে বলেছে, সে সরকারের কেউ নয় এবং মির্জা ফখরুল সাহেবও বলেছে তার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। বিএনপি যে শুধু সন্ত্রাসী নয়, জালিয়াত রাজনৈতিক দল, এটি তারই প্রমাণ। তারা ইতিপূর্বে কংগ্রেসম্যানদের সই জাল করে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছিল।’
‘২৮ অক্টোবর সমাবেশের নামে হাসপাতাল, পথচারী, সাংবাদিক, পুলিশ এবং বিভিন্ন স্থাপনায় বিএনপির হামলাকে’ ইসরায়েলি বাহিনী ও একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতার সাথে তুলনা করেছেন ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হাসপাতালে হামলা চালিয়ে প্রায় ৮০০ মানুষকে হত্যা করার পরও বিএনপি ও জামায়াত এই বর্বরতার বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। বরং ইসরায়েলি বাহিনীর অনুকরণে তারা শনিবার হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। আর একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাজারবাগে হামলা চালিয়েছিল, শনিবার বিএনপি-জামায়াতও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, বিশটির বেশি অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিয়েছে। দেশের ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দল হাসপাতালে এ রকম হামলা করেছে বলে আমার জানা নেই।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির কর্মীরা সমাবেশের নামে নাইটিঙ্গেল মোড়, কাকরাইল, বিজয়নগর, ফকিরাপুলসহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে একজন পুলিশকে পিটিয়ে পরে চাপাতি দিয়ে কোপ দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। তাদের হামলায় আরও এক শ’র বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে এবং এদের দুইজনের অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়া আনসারের ২৫ জন এবং ২১ জন সাংবাদিক আহত হয়েছে। তারা প্রায় শতাধিক গাড়ি পুড়িয়েছে। শনিবার রাতে আমরা ঢাকা মেডিকেল ও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে গেছি। দেখেছি বহু পুলিশ সদস্য যন্ত্রণায় ছটফট করছে। বিএনপির কর্মীরা বেশিরভাগ পুলিশের মাথায় আঘাত করেছে, যাতে মৃত্যু হয় এবং যে পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তার খুলি নামিয়ে ফেলা হয়েছে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য।’
দেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে কখনো এর আগে হামলা হয়নি উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের কথা বলে বিএনপি সমাবেশ শুরুর আগেই প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। প্রধান বিচারপতি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন, প্রধান বিচারপতি একটি প্রতিষ্ঠান, বিচার বিভাগের প্রধান, তার বাসভবনে তারা হামলা চালিয়েছে এবং সেখানে ঢুকে পড়েছে। ইতিপূর্বে বিএনপির আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির খাস কামরায় লাথি মেরেছিল। সেটিও বিচার বিভাগকে তাদের তোয়াক্কা না করার প্রমাণ।’
সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যে হামলা বিএনপি–জামায়াত চালিয়েছে আমি সেটির তীব্র নিন্দা জানাই। গণমাধ্যমকর্মীরা কোনো দলের পক্ষ হয়ে সেখানে যায়নি, নিউজ কাভার করতে গেছে এবং তারা বিএনপি বিটের সাংবাদিক, তাদের ওপর কেন হামলা হলো? গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। এগুলোর বিচার হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব গতকাল নিহত শামীম মিয়াকে যুবদল নেতা বলে দাবি করেছেন। অথচ নিহতের পরিবার বলছে, তিনি কোনো রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না এবং তার গায়ে কোনো আঘাত নাই। হাসপাতাল বলছে, তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। অর্থাৎ হত্যার দায় এড়ানোর জন্য বিএনপি আবারও মিথ্যাচার করছে।’
আমেরিকা শনিবার সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে—এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও সহিংসতার নিন্দা জানাচ্ছি। এবং আশা করব, যারা পুলিশ মেরেছে, পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে, যারা জাজেস কমপ্লেক্সে, হাসপাতালে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি প্রয়োগ হবে।’