রবিবার (২৯ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “লস অ্যান্ড ড্যামেজ” তহবিল পুরোপুরি চালু করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিলটি সম্পূর্ণরূপে চালু করতে হবে।’
ইউএনওপিএস (প্রকল্প পরিষেবার জন্য জাতিসংঘের অফিস) আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এন্ড এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জর্জ মরিয়েরা দ্য সিলভা রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি একথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডের লক্ষ্য জলবায়ু পরিবর্তনের অনিবার্য ঝুঁকি থেকে উদ্ভূত নেতিবাচক পরিণতি মোকাবেলা করার জন্য দরিদ্র দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা- যেমন: ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, চরম তাপপ্রবাহ, মরুকরণ, বনের আগুন, ফসল অনুৎপাদন প্রভৃতি। ধনী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি পালন না করায় প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
আলোচনাকালে ইউএনওপির আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল কপ২৮-এর ইস্যুটি উত্থাপন করলে শেখ হাসিনা তিনি বলেন, ‘ধনী দেশগুলো থেকে এখনও ক্ষয়-ক্ষতির তহবিলের জন্য পর্যাপ্ত সাড়া পাওয়া যায়নি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার বাংলাদেশকে একটি জলবায়ু সহনশীল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে যার মধ্যে নিজস্ব সম্পদ দিয়ে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, তাঁরা আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় কক্সবাজারের খুরুসকুলে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের বাড়ি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গ্রিন বেল্ট তৈরি করেছে, কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট এবং বিপুল সংখ্যক বৃক্ষ রোপণ করার পাশাপাশি জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে জনগণকে বাড়ি দিয়েছে।
ইউএনওপিএসের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশেষ করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এবং ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন যে ইউএনওপিএস স্বাস্থ্য পরিষেবার মহাপরিচালকের সহযোগিতায় বাংলাদেশের ২৯টি হাসপাতালের জন্য মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্ল্যান্ট নির্মাণ করছে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় প্লান্ট নির্মাণ করা হলে ভালো হবে। প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সময় এবং ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন মানবিক প্রয়োজনে সাড়া দেওয়ার জন্য ইউএনওপিএসকে ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রকল্প পরিচালনার ইউএনওপিএস এর দক্ষতার প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় ইউএনওপিএস-এর প্রমাণিত দক্ষতা বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্কৃতিকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। অ্যাম্বাসেডর এ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।