১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ, কীসের বৈঠক: প্রধানমন্ত্রী

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের শর্তহীন সংলাপের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ, কীসের বৈঠক।’ আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করেছি। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। যারা আমাদের উন্নয়নকে ধ্বংস করছে। আমাদের পুলিশকে পিটিয়ে যেভাবে হত্যা করেছে, এতজন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করেছে, সে বিষয়ে কেন কোন কথা বলেননি তিনি।’

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বেলজিয়ামে তিনদিনের সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সরকার প্র্রধান।

নির্বাচনে কোনো আন্তর্জাতিক চোখ রাঙানি আছে কি না—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কে চোখ রাঙাল কে রাঙাল না তা নিয়ে আওয়ামী লীগ ভাবে না। নির্বাচন যথা সময়ে হবে। যারা হত্যা খুন করার পরেও বলে সংলাপ করতে হবে। ট্রাম্পের সঙ্গে কি বাইডেন সংলাপ করছে। যেদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেন সংলাপ করবে, সেদিন আমরা সংলাপ করব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধী দল বলতে পার্লামেন্টে যাদের প্রতিনিধি আছে, তাঁদেরই বিরোধী দল বলে। তাঁরা যাদের সঙ্গে সংলাপ করতে বলছেন, তারা তো বিরোধী না। তাঁকে একটা প্রশ্ন করা হলো না কেন—এতগুলো পুলিশ, সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করল, সে বিষয়ে তিনি কেন নিন্দা জ্ঞাপন করলেন না।’

গত শনিবার সমাবেশে সহিংসতা করায় বিএনপি নিজেদের সন্ত্রাসী দল হিসেবে পরিচিত করেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত শনিবারের বিএনপির সমাবেশ কর্মসূচির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি–জামায়াত যে সন্ত্রাসী দল এটাই তারা আবার প্রমাণ করল। কানাডার আদালত কিন্তু কয়েকবার এ কথা বলেছে। মাঝে কিছুটা রাজনৈতিক কর্মসূচি করছিল। সরকার কোনো বাধা দেয়নি। তবে একটাই শর্ত ছিল ভাংচুর করবে না। মানুষের আস্থাও তাঁরা পাচ্ছিল। ২৮ তারিখ যে ঘটনা তারা ঘটাল; যেভাবে পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর জনগণের ধিক্কার ছাড়া আর কিছুই জুটবে না। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়েছে। ইসরায়েল যেভাবে গাজায় হাসপাতালে হামলা করল, তার সাথে তফাৎ দেখতে পাচ্ছি না। এরপর নিজেরাই পালাল, এখন আবার অবরোধ। কিসের অবরোধ? কার জন্য অবরোধ?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২৮ তারিখ উপমহাদেশে নদীর নিচে এত বড় টানেল আমরা করলাম। এটা দক্ষিণ এশিয়ায় আগে হয়নি। চট্টগ্রাম ব্যবসার কেন্দ্র। যখন উদ্বোধন তখন মানুষের ওপর হামলা। মানুষ খুন করছে। একদিকে পুলিশ অন্যদিকে সাংবাদিক। তাদের ওপরেই হামলা করছে। কারা করেছে নাম টাম সব। যা করেছে তা তো প্রকাশ্যে করেছে। গতকাল লালমনটিরহাটে যুবলীগের একজনকে হত্যা করেছে।’

বিএনপির স্বভাব বদলাবে না জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর যেভাবে চড়াও হয়েছে, বুঝলাম না কেন। তারা তো তাদের (বিএনপি) পক্ষেই কথা বলছিল। এত রাগ কেন তাদের ওপর বুঝলাম না। কোনো কোনো টিভিতে আমি তো চার নম্বর পাঁচ নম্বরে থাকি। তারা (বিএনপি) তো যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছিল। তাহলে কেন? এদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ নেই। যতই ভালো ব্যবহার করি স্বভাব বদলাবে না।’

বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চায় জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে আমার ধারণা, এরা নির্বাচন চায় না। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চায়। গত কয়েক বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, এটা তো অস্বীকার করতে পারবেন না। কেউ কাজ করলেই খেতে পায়। মানুষকে কষ্ট দেওয়াই এদের চরিত্র। সন্ত্রাসীদের কিভাবে শিক্ষা দিতে হবে, সেটাই দেওয়া উচিত। এটাই আমরা দেব।’

গত ২৪ অক্টোবর ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইনের আমন্ত্রণে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস সফরে যান প্রধানমন্ত্রী। সফর শেষে গত শুক্রবার দেশে ফেরেন তিনি।

খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ, কীসের বৈঠক: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট : ১০:৫৪:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৩

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের শর্তহীন সংলাপের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ, কীসের বৈঠক।’ আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করেছি। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। যারা আমাদের উন্নয়নকে ধ্বংস করছে। আমাদের পুলিশকে পিটিয়ে যেভাবে হত্যা করেছে, এতজন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করেছে, সে বিষয়ে কেন কোন কথা বলেননি তিনি।’

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বেলজিয়ামে তিনদিনের সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সরকার প্র্রধান।

নির্বাচনে কোনো আন্তর্জাতিক চোখ রাঙানি আছে কি না—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কে চোখ রাঙাল কে রাঙাল না তা নিয়ে আওয়ামী লীগ ভাবে না। নির্বাচন যথা সময়ে হবে। যারা হত্যা খুন করার পরেও বলে সংলাপ করতে হবে। ট্রাম্পের সঙ্গে কি বাইডেন সংলাপ করছে। যেদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেন সংলাপ করবে, সেদিন আমরা সংলাপ করব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধী দল বলতে পার্লামেন্টে যাদের প্রতিনিধি আছে, তাঁদেরই বিরোধী দল বলে। তাঁরা যাদের সঙ্গে সংলাপ করতে বলছেন, তারা তো বিরোধী না। তাঁকে একটা প্রশ্ন করা হলো না কেন—এতগুলো পুলিশ, সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করল, সে বিষয়ে তিনি কেন নিন্দা জ্ঞাপন করলেন না।’

গত শনিবার সমাবেশে সহিংসতা করায় বিএনপি নিজেদের সন্ত্রাসী দল হিসেবে পরিচিত করেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত শনিবারের বিএনপির সমাবেশ কর্মসূচির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি–জামায়াত যে সন্ত্রাসী দল এটাই তারা আবার প্রমাণ করল। কানাডার আদালত কিন্তু কয়েকবার এ কথা বলেছে। মাঝে কিছুটা রাজনৈতিক কর্মসূচি করছিল। সরকার কোনো বাধা দেয়নি। তবে একটাই শর্ত ছিল ভাংচুর করবে না। মানুষের আস্থাও তাঁরা পাচ্ছিল। ২৮ তারিখ যে ঘটনা তারা ঘটাল; যেভাবে পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর জনগণের ধিক্কার ছাড়া আর কিছুই জুটবে না। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়েছে। ইসরায়েল যেভাবে গাজায় হাসপাতালে হামলা করল, তার সাথে তফাৎ দেখতে পাচ্ছি না। এরপর নিজেরাই পালাল, এখন আবার অবরোধ। কিসের অবরোধ? কার জন্য অবরোধ?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২৮ তারিখ উপমহাদেশে নদীর নিচে এত বড় টানেল আমরা করলাম। এটা দক্ষিণ এশিয়ায় আগে হয়নি। চট্টগ্রাম ব্যবসার কেন্দ্র। যখন উদ্বোধন তখন মানুষের ওপর হামলা। মানুষ খুন করছে। একদিকে পুলিশ অন্যদিকে সাংবাদিক। তাদের ওপরেই হামলা করছে। কারা করেছে নাম টাম সব। যা করেছে তা তো প্রকাশ্যে করেছে। গতকাল লালমনটিরহাটে যুবলীগের একজনকে হত্যা করেছে।’

বিএনপির স্বভাব বদলাবে না জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর যেভাবে চড়াও হয়েছে, বুঝলাম না কেন। তারা তো তাদের (বিএনপি) পক্ষেই কথা বলছিল। এত রাগ কেন তাদের ওপর বুঝলাম না। কোনো কোনো টিভিতে আমি তো চার নম্বর পাঁচ নম্বরে থাকি। তারা (বিএনপি) তো যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছিল। তাহলে কেন? এদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ নেই। যতই ভালো ব্যবহার করি স্বভাব বদলাবে না।’

বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চায় জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে আমার ধারণা, এরা নির্বাচন চায় না। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চায়। গত কয়েক বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, এটা তো অস্বীকার করতে পারবেন না। কেউ কাজ করলেই খেতে পায়। মানুষকে কষ্ট দেওয়াই এদের চরিত্র। সন্ত্রাসীদের কিভাবে শিক্ষা দিতে হবে, সেটাই দেওয়া উচিত। এটাই আমরা দেব।’

গত ২৪ অক্টোবর ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইনের আমন্ত্রণে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস সফরে যান প্রধানমন্ত্রী। সফর শেষে গত শুক্রবার দেশে ফেরেন তিনি।