নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যু বেড়ে ১৩২
- আপডেট সময় : ০৬:২৭:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪৩৮ বার পড়া হয়েছে
আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নেপাল। হিমালয়কন্যা নামে পরিচিত এই দেশটির সঙ্গে ‘ভূমিকম্প’ শব্দটি যেন ললাটলিপির মতো সেঁটে গেছে। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে পশ্চিম নেপালের জাজারকোট এলাকায়। এতে এখন পর্যন্ত ১৩২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নেপালের সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। নেপালের জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট বলেছে, জাজারকোটের পার্শ্ববর্তী পশ্চিম রুকুম এলাকাও এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ভূমিকম্পে বেশ কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের কম্পন ৫০০ কিলোমিটার দূরের নয়াদিল্লিতেও অনুভূত হয়েছে।
মার্কিন ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নেপালের জুমলা থেকে ৪২ কিলোমিটার দূরে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। গভীরতা ছিল ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার।
নেপালের জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল পশ্চিম নেপালের জাজারকোট এলাকা। শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে পার্শ্ববর্তী পশ্চিম রুকুম এলাকাও এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহাল এঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে একটি নেপাল। হিমালয়ের পাদদেশের দেশ নেপাল বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় টেকটোনিক অঞ্চলে অবস্থিত। ফলে এটি ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা।
এর আগে গত বছরেও এই সময়ে নভেম্বরের ৯ তারিখে বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল নেপালে। ৫ দশমিক ৬ মাত্রার সেই ভূমিকম্পেও বহু মানুষ হতাহত হয়েছিল বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি ও। তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে নেপালে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ওই দিন ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। আহত হয়েছিল ২২ হাজার ৩০৯জন।
নেপাল–বিহার ভূমিকম্প: ১৯৩৪ সালের ১৫ জানুয়ারি নেপাল–বিহার সীমান্তে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৮। মানুষ মারা গিয়েছিল অন্তত ১২ হাজার।
নেপাল–ভারত সীমান্তে ভূমিকম্প: ১৯৮০ সালের ২৯ জুলাই নেপাল–ভারত সীমান্তে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। ওই ভূমিকম্পে মানুষ মারা গিয়েছিল ২০০ এবং আহত হয়েছিল ৫ হাজার ৬০০জন।
কাঠমান্ডু ভূমিকম্প: ১৯৮৮ সালের ২১ আগস্ট কাঠমান্ডুতে ভূমিকম্প হয়েছিল। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৯। ওই ভূমিকম্পে মানুষ মারা গিয়েছিল ৭০৯জন এবং আহত হয়েছিল এক হাজারের বেশি।
গতকালের ভূমিকম্পের পর নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন।
২০১৫ সালের এপ্রিলে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৮ হাজার জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। আহত হয় ২১ হাজারের বেশি।