ঢাকা ১০:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বিশ্বকাপ থেকে ইংলিশদের বিদায়

ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৪:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বেন স্টোকস আর মঈন আলী যতক্ষণ ছিলেন, ইংল্যান্ডের আশা বেঁচে ছিল। আশা বলতে, সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা কাগজে-কলমে থাকলেও সে আশা যে ইংলিশরাও করেননি, তা বোঝাই যায়, তবে অন্তত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পাশাপাশি পয়েন্ট তালিকার তলানি থেকে একটু ওপরে ওঠার আশা ছিল ইংল্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের বিদায় নিশ্চিত করল গেলবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৮৭ রানের লক্ষ্যে ফিফটি করা স্টোকস আউট হয়ে গেলেন ৩৬তম ওভারে, দলকে ১৬৯ রানে রেখে। ৪০তম ওভারে মঈনও ফিরলেন। দলের রান তখন ১৮৬, মঈন ফিরলেন ৪২ রান করে। ইংল্যান্ড এরপরও অবশ্য ক্রিস ওকস, ডেভিড উইলি আর আদিল রশিদের ব্যাটে লড়াই চালিয়ে গেছে। এমনকি অবিশ্বাসের জন্ম দিয়ে জিতে যাওয়ার সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল। কিন্তু ওই সম্ভাবনা জাগানো পর্যন্তই।

শেষ পর্যন্ত ৪৮তম ওভারের শেষ ও ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে পরপর দুই উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রানে অলআউট হয়ে গেছে। ৩৩ রানে হেরে কাগজে-কলমেও বিশ্বকাপ থেকে ইংল্যান্ডের বাড়ি ফেরা নিশ্চিত হয়ে গেছে।

আর বাংলাদেশ অন্তত আরেকটি দিনের জন্য স্বস্তি পেল। ইংল্যান্ড এখনো পয়েন্ট তালিকার তলানিতেই থাকছে, সে ‘অবনমন’ বাংলাদেশের এখনো হয়নি। স্বস্তি বটে!

বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণার পর এটি বারুদে ম্যাচ হবে বলেই ধারণা ছিল সবার। একে তো দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই, তারওপর গ্রুপ পর্বের শেষদিকে এসে – সেমিফাইনালে ওঠার ধুন্দুমার লড়াই এ ম্যাচে থাকবে, এমনটা ধরে নেওয়া মানুষের সংখ্যাই নিশ্চিতভাবে বেশি ছিল। সেমিফাইনালের সমীকরণ ছিল বটে, তবে তা অস্ট্রেলিয়ার জন্যই। ইংল্যান্ডের ধস তো আগেই যা হওয়ার হয়ে গেছে।

জিতে অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট হলো ৭ ম্যাচে ১০। এই পয়েন্টই তাদের সেমিফাইনালের দৌড়ে এগিয়ে রেখেছে। তাদের এর পরের দুই ম্যাচ আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে – সে দুই ম্যাচের অন্তত একটিতে অস্ট্রেলিয়া জিতবে, এটা ধরে নেওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি হবে। আর ওই দুই ম্যাচের একটিতে জিতলেই সেমিফাইনালে উঠে যাবে অস্ট্রেলিয়া।

টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া অস্ট্রেলিয়া আজ দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড (১১) ও ডেভিড ওয়ার্নারকে (১৫) হারিয়েছে ৬ ওভারের মধ্যে, ৩৮ রানে। এরপর তৃতীয় উইকেটে স্টিভেন স্মিথের (৪৪) সঙ্গে ৮১ রানের জুটি গড়েন চারে নামা মারনাস লাবুশেন (৭১)। মিডল অর্ডারে ক্যামেরন গ্রিন (৪৭) ও মার্কাস স্টয়নিস (৩৫) অস্ট্রেলিয়ার রানকে আড়াই শ-র কাছাকাছি নিয়ে যান। আর ২৮০ পার করিয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা (১৯ বলে ২৯)।

অস্ট্রেলিয়ার ২৮৬ রানের জবাবে ইংল্যান্ডের শুরুটা হলো দু:স্বপ্নের মতো। প্রথম বলেই স্টার্ক ফেরালেন বেয়ারস্টোকে। চতুর্থ ওভারের মধ্যে দলকে ১৯ রানে রেখে ফিরলেন রুট। স্টোকস চারে নেমে তৃতীয় উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়লেন ম্যালানের (৫০) সঙ্গে। কিন্তু ইংল্যান্ডের জয়ের আশা জাগতেই আবার জোড়া উইকেট পতন। ২৩তম ওভারে দলকে ১০৩ রানে রেখে ম্যালান আউট হলেন, এরপর অধিনায়ক বাটলার তা-ই করলেন যা তিনি এই বিশ্বকাপে নিয়ম মেনে করে আসছেন – উইকেটে নেমেই দ্রুত ড্রেসিংরুমের পথ ধরা।

স্টোকস আর মঈনের জুটি এরপর আবার ইংল্যান্ডকে আশা দেখিয়েছে। ৭৪ বলে ফিফটিতে পৌঁছানো স্টোকস ধীরে ধীরে হাত খুলছিলেন, মঈন শুরু থেকে রানে-বলে সমতা রেখে খেলছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চার উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা জাম্পার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৬৯ রানে আউট হলেন স্টোকস, সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন শর্ট ফাইন লেগে।

ইংল্যান্ডের এর পরের গল্পটা মূলত আশা হারিয়েও লড়ে যাওয়ার।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিশ্বকাপ থেকে ইংলিশদের বিদায়

আপডেট সময় : ০৫:৩৪:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩

বেন স্টোকস আর মঈন আলী যতক্ষণ ছিলেন, ইংল্যান্ডের আশা বেঁচে ছিল। আশা বলতে, সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা কাগজে-কলমে থাকলেও সে আশা যে ইংলিশরাও করেননি, তা বোঝাই যায়, তবে অন্তত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পাশাপাশি পয়েন্ট তালিকার তলানি থেকে একটু ওপরে ওঠার আশা ছিল ইংল্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের বিদায় নিশ্চিত করল গেলবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৮৭ রানের লক্ষ্যে ফিফটি করা স্টোকস আউট হয়ে গেলেন ৩৬তম ওভারে, দলকে ১৬৯ রানে রেখে। ৪০তম ওভারে মঈনও ফিরলেন। দলের রান তখন ১৮৬, মঈন ফিরলেন ৪২ রান করে। ইংল্যান্ড এরপরও অবশ্য ক্রিস ওকস, ডেভিড উইলি আর আদিল রশিদের ব্যাটে লড়াই চালিয়ে গেছে। এমনকি অবিশ্বাসের জন্ম দিয়ে জিতে যাওয়ার সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল। কিন্তু ওই সম্ভাবনা জাগানো পর্যন্তই।

শেষ পর্যন্ত ৪৮তম ওভারের শেষ ও ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে পরপর দুই উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রানে অলআউট হয়ে গেছে। ৩৩ রানে হেরে কাগজে-কলমেও বিশ্বকাপ থেকে ইংল্যান্ডের বাড়ি ফেরা নিশ্চিত হয়ে গেছে।

আর বাংলাদেশ অন্তত আরেকটি দিনের জন্য স্বস্তি পেল। ইংল্যান্ড এখনো পয়েন্ট তালিকার তলানিতেই থাকছে, সে ‘অবনমন’ বাংলাদেশের এখনো হয়নি। স্বস্তি বটে!

বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণার পর এটি বারুদে ম্যাচ হবে বলেই ধারণা ছিল সবার। একে তো দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই, তারওপর গ্রুপ পর্বের শেষদিকে এসে – সেমিফাইনালে ওঠার ধুন্দুমার লড়াই এ ম্যাচে থাকবে, এমনটা ধরে নেওয়া মানুষের সংখ্যাই নিশ্চিতভাবে বেশি ছিল। সেমিফাইনালের সমীকরণ ছিল বটে, তবে তা অস্ট্রেলিয়ার জন্যই। ইংল্যান্ডের ধস তো আগেই যা হওয়ার হয়ে গেছে।

জিতে অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট হলো ৭ ম্যাচে ১০। এই পয়েন্টই তাদের সেমিফাইনালের দৌড়ে এগিয়ে রেখেছে। তাদের এর পরের দুই ম্যাচ আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে – সে দুই ম্যাচের অন্তত একটিতে অস্ট্রেলিয়া জিতবে, এটা ধরে নেওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি হবে। আর ওই দুই ম্যাচের একটিতে জিতলেই সেমিফাইনালে উঠে যাবে অস্ট্রেলিয়া।

টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া অস্ট্রেলিয়া আজ দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড (১১) ও ডেভিড ওয়ার্নারকে (১৫) হারিয়েছে ৬ ওভারের মধ্যে, ৩৮ রানে। এরপর তৃতীয় উইকেটে স্টিভেন স্মিথের (৪৪) সঙ্গে ৮১ রানের জুটি গড়েন চারে নামা মারনাস লাবুশেন (৭১)। মিডল অর্ডারে ক্যামেরন গ্রিন (৪৭) ও মার্কাস স্টয়নিস (৩৫) অস্ট্রেলিয়ার রানকে আড়াই শ-র কাছাকাছি নিয়ে যান। আর ২৮০ পার করিয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা (১৯ বলে ২৯)।

অস্ট্রেলিয়ার ২৮৬ রানের জবাবে ইংল্যান্ডের শুরুটা হলো দু:স্বপ্নের মতো। প্রথম বলেই স্টার্ক ফেরালেন বেয়ারস্টোকে। চতুর্থ ওভারের মধ্যে দলকে ১৯ রানে রেখে ফিরলেন রুট। স্টোকস চারে নেমে তৃতীয় উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়লেন ম্যালানের (৫০) সঙ্গে। কিন্তু ইংল্যান্ডের জয়ের আশা জাগতেই আবার জোড়া উইকেট পতন। ২৩তম ওভারে দলকে ১০৩ রানে রেখে ম্যালান আউট হলেন, এরপর অধিনায়ক বাটলার তা-ই করলেন যা তিনি এই বিশ্বকাপে নিয়ম মেনে করে আসছেন – উইকেটে নেমেই দ্রুত ড্রেসিংরুমের পথ ধরা।

স্টোকস আর মঈনের জুটি এরপর আবার ইংল্যান্ডকে আশা দেখিয়েছে। ৭৪ বলে ফিফটিতে পৌঁছানো স্টোকস ধীরে ধীরে হাত খুলছিলেন, মঈন শুরু থেকে রানে-বলে সমতা রেখে খেলছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চার উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা জাম্পার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৬৯ রানে আউট হলেন স্টোকস, সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন শর্ট ফাইন লেগে।

ইংল্যান্ডের এর পরের গল্পটা মূলত আশা হারিয়েও লড়ে যাওয়ার।