ঢাকা ০৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কাপুরুষের কাছে রাজনীতি শোভা পায় না: কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:২২:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিএনপি ৭ নভেম্বর নিজেদের জাতীয় দিবসের কর্মসূচি স্থগিত করে ভীরু কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ‘৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

কাদের বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ৭ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তাঁর সেই হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারাবাহিকতা বহন করছে তার উত্তরসুরি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। তারাই দেশে আগুন সন্ত্রাসের সূচনা করেছে। তারা এখন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের ক্ষমতায় চেপে বসতে চায়। দলটি তাদের ৭ নভেম্বর জাতীয় দিবসের কর্মসূচি স্থগিত করে কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ থেকে বোঝা যায় তাদের আন্দোলন করার সাহস কত! নিজেদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করার সাহসও পায়নি। এ কাপুরুষের কাছে রাজনীতি শোভা পায় না। তাদের কাছে কি রাজনীতি মানায়?’

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের তাৎপর্য দেশের তিন রাজনৈতিক দলের কাছে তিন রকম। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান ঘোষণা করেন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকেই সেনাবাহিনীর একটি অংশে ক্রোধ দানা বাঁধতে থাকে। এই অংশের নেতৃত্বে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ।

নভেম্বরের শুরুতে খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি অংশ অভ্যুত্থানে অংশ নেয়। বন্দি করা হয় তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। এরপর সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব নেন খালেদ মোশাররফ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় সেনাবাহিনীর যে অংশটি জড়িত ছিল তারা বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। একপর্যায়ে জেলখানায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। এর চারদিন পরই কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে হয়ে যায় পাল্টা অভ্যুত্থান।

পাল্টা অভ্যুত্থানে মুক্ত করা হয় জিয়াউর রহমানকে। আর দুই সঙ্গীসহ হত্যা করা হয় খালেদ মোশাররফকে।

ঘটনাবহুল এই দিনটিকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’, জাসদ ‘সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ আর আওয়ামী লীগ পালন করে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে।

প্রতিবছর এই দিনটি ঘটা করে পালন করে বিএনপি। কিন্তু এবার দিবসটিকে ঘিরে কোনো আয়োজন নেই দলটির। গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশে সহিংসতার পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি যারা আছেন, তারাও প্রকাশ্যে আসছেন না।

এর মধ্যে হরতাল ও অবরোধের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করলেও দলটির নেতাদের মাঠে দেখা যায়নি। অবরোধের ঘোষণাও এসেছে অজ্ঞাত স্থান থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে।

সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘কোনো দেশ, ইউনিয়নের বিবৃতিতে কিছু আসে যায় না। অপরাধ করলে বিচার হতেই হবে। আমাদের দেশে অপরাধী, খুনি বিচার করতে পারব না এটা কোন গণতন্ত্র, কোথা থেকে এল এ আদেশ? আমাদের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা আছে। অপরাধী না হলে বিচারের মাধ্যমে নির্দোষ হলে জেল থেকে বের হবে।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নাম্বার কর্মসূচি, তাদের উত্থান দিবস যারা পালন করে না তাদের নাকি আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন করছে। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপি নিজেই যথেষ্ট। আওয়ামী লীগ এখনো ভয় দেখানো শুরু করেনি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

কাপুরুষের কাছে রাজনীতি শোভা পায় না: কাদের

আপডেট সময় : ০৪:২২:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০২৩

বিএনপি ৭ নভেম্বর নিজেদের জাতীয় দিবসের কর্মসূচি স্থগিত করে ভীরু কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ‘৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

কাদের বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ৭ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তাঁর সেই হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারাবাহিকতা বহন করছে তার উত্তরসুরি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। তারাই দেশে আগুন সন্ত্রাসের সূচনা করেছে। তারা এখন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের ক্ষমতায় চেপে বসতে চায়। দলটি তাদের ৭ নভেম্বর জাতীয় দিবসের কর্মসূচি স্থগিত করে কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ থেকে বোঝা যায় তাদের আন্দোলন করার সাহস কত! নিজেদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করার সাহসও পায়নি। এ কাপুরুষের কাছে রাজনীতি শোভা পায় না। তাদের কাছে কি রাজনীতি মানায়?’

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের তাৎপর্য দেশের তিন রাজনৈতিক দলের কাছে তিন রকম। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান ঘোষণা করেন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকেই সেনাবাহিনীর একটি অংশে ক্রোধ দানা বাঁধতে থাকে। এই অংশের নেতৃত্বে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ।

নভেম্বরের শুরুতে খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি অংশ অভ্যুত্থানে অংশ নেয়। বন্দি করা হয় তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। এরপর সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব নেন খালেদ মোশাররফ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় সেনাবাহিনীর যে অংশটি জড়িত ছিল তারা বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। একপর্যায়ে জেলখানায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। এর চারদিন পরই কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে হয়ে যায় পাল্টা অভ্যুত্থান।

পাল্টা অভ্যুত্থানে মুক্ত করা হয় জিয়াউর রহমানকে। আর দুই সঙ্গীসহ হত্যা করা হয় খালেদ মোশাররফকে।

ঘটনাবহুল এই দিনটিকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’, জাসদ ‘সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ আর আওয়ামী লীগ পালন করে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে।

প্রতিবছর এই দিনটি ঘটা করে পালন করে বিএনপি। কিন্তু এবার দিবসটিকে ঘিরে কোনো আয়োজন নেই দলটির। গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশে সহিংসতার পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি যারা আছেন, তারাও প্রকাশ্যে আসছেন না।

এর মধ্যে হরতাল ও অবরোধের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করলেও দলটির নেতাদের মাঠে দেখা যায়নি। অবরোধের ঘোষণাও এসেছে অজ্ঞাত স্থান থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে।

সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘কোনো দেশ, ইউনিয়নের বিবৃতিতে কিছু আসে যায় না। অপরাধ করলে বিচার হতেই হবে। আমাদের দেশে অপরাধী, খুনি বিচার করতে পারব না এটা কোন গণতন্ত্র, কোথা থেকে এল এ আদেশ? আমাদের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা আছে। অপরাধী না হলে বিচারের মাধ্যমে নির্দোষ হলে জেল থেকে বের হবে।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নাম্বার কর্মসূচি, তাদের উত্থান দিবস যারা পালন করে না তাদের নাকি আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন করছে। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপি নিজেই যথেষ্ট। আওয়ামী লীগ এখনো ভয় দেখানো শুরু করেনি।’