দেশে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি একযুগের মধ্যে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। একইসঙ্গে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দুই অঙ্ক ছুঁইছুঁই করছে। গেল অক্টোবর মাসে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ফলে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ ডিমসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস আরও দীর্ঘ হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেছে।
বলে রাখা ভালো অর্থনীতিবিদরা আগের বছর বা মাসের সঙ্গে অথবা কোন নির্দিষ্ট সময়কালের সঙ্গে বর্তমানের তুলনা করে খাদ্য, কাপড়, পোশাক, বাড়ি, সেবা ইত্যাদি বিভিন্ন উপাদানের মূল্য বৃদ্ধির যে পার্থক্য যাচাই করেন তাকেই মূল্যস্ফীতি বলা হয়।
বিবিএস জানায়, অক্টোবরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ ছাড়া অক্টোবরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার ৮ দশমকি ৩০ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ।
গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি শহরাঞ্চলকে ছাড়িয়ে গেছে। গ্রামীণ এলাকায় মূল্যস্ফীতির হার সেপ্টেম্বরের ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে অক্টোবরে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশে উঠেছে।
এর আগে গত মার্চ থেকে দেশের সাধারণ মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে ৯ শতাংশের উপরে অবস্থান করছে। আগস্ট মাসে তা ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে পৌঁছে যায়, যা ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এরপর সেপ্টেম্বরে সামান্য কমে মূল্যস্ফীতির হার হয় ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এক মাসের মাথায় তা আবারও বেড়ে আগস্টের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেল।
গত মাসে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত দুই খাতেই মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। এর মধ্যে খাদ্য খাতের মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বরের ১২ দশমিক ৩৭ থেকে বেড়ে অক্টোবরে হয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভিূত খাতে মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বর মাসের ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ০১ শতাংশ হয়েছে।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অক্টোবরে বিশেষ করে ডিম, পেঁয়াজ এবং আলুসহ শীতকালীন সবজি ও তরকারির দাম বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
এর আগে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশে উঠেছিল। প্রায় ১২ বছরের মধ্যে অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশে উঠে নতুন রেকর্ড তৈরি করল। গত আগস্ট মাসে প্রথমবারের মতো খাদ্য মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে উঠে যায়। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ২ শতাংশ। এখন আবার তা ১০ ছুঁইছুঁই অবস্থায় রয়েছে।