ঢাকা ১২:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাজীপুরে পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরণ, আহত ৫

গাজীপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৭:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪৩১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাজীপুরে বেতন–ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছেন গার্মেন্টস শ্রমিকেরা। বুধবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের গাড়িতে সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণে বাহিনীর ৩ সদস্য আহত হয়েছেন।

বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

আহতরা হলেন— পুলিশ সদস্য ফুয়াদ (২৪), উপপরিদর্শক প্রবীর (৪৫) এবং পুলিশ সদস্য মোরশেদ (৩০)। এর মধ্যে ফুয়াদের ডান হাতের কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।

আহতদের ঢামেকের জরুরি বিভাগে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিয়ে আসেন সহকারী পুলিশ কমিশনার (এডিসি) নন্দিতা। তবে বিস্ফোরণের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘গাজীপুর থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজন পুলিশকে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে ফুয়াদ নামে এক পুলিশ সদস্যের ডান হাতের কবজি উড়ে গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকি দুজনেরও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে।’

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, আহতাবস্থায় পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত পুলিশ সদস্য প্রবীর, ফুয়াদ ও মোরশেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর দুই পুলিশ সদস্য আশিকুল (২৭) ও বিপুলকে (২৪) তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় পাঠানোদের মধ্যে ফুয়াদের অবস্থা বেশি গুরুতর। তাঁর ডান হাতের আঙ্গুল ও কবজির নিচের অংশে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।

গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে ছাত্রদল নেতা আটক গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে ছাত্রদল নেতা আটক
এদিকে বুধবার সকালে একদফা আন্দোলনের পর ফের দুপুরে আমবাগ এলাকায় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন। খবর পেয়ে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নাওজোড় এলাকায় বিক্ষোভে নামেন শত শত শ্রমিক। এ সময় তাঁরা ইসলামপুর এলাকায় নর্প নীটওয়্যার্স নামের একটি কারখানায় ভাংচুর চালায়। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তেজিত শ্রমিকেরা ঢিল ছুড়ে বেশ কিছু গাড়ির কাঁচ ভাংচুর করে।

পরে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করলে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। শ্রমিকদের সরে যাওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শ্রমিক আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের এপিসি কারের ভেতরে অসাবধানতায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যরা আহত হন। একজনের হাতের কবজি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই বিস্ফোরণেই।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘বুধবার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মোট আটজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সকালে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন ও বিকেলে নাওজোড় এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছেন।’

এপিসি কারের ভেতরে সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ নিয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু সাংবাদিকদের জানাননি। তবে তিনি এপিসি কারে বিস্ফোরণের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিকেলে যে পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, এদের মধ্যে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি এপিসি কারে বিস্ফোরণেও আহত হওয়ার ঘটনা আছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজীপুরে পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরণ, আহত ৫

আপডেট সময় : ০৪:৪৭:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩

গাজীপুরে বেতন–ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছেন গার্মেন্টস শ্রমিকেরা। বুধবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের গাড়িতে সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণে বাহিনীর ৩ সদস্য আহত হয়েছেন।

বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

আহতরা হলেন— পুলিশ সদস্য ফুয়াদ (২৪), উপপরিদর্শক প্রবীর (৪৫) এবং পুলিশ সদস্য মোরশেদ (৩০)। এর মধ্যে ফুয়াদের ডান হাতের কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।

আহতদের ঢামেকের জরুরি বিভাগে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিয়ে আসেন সহকারী পুলিশ কমিশনার (এডিসি) নন্দিতা। তবে বিস্ফোরণের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘গাজীপুর থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজন পুলিশকে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে ফুয়াদ নামে এক পুলিশ সদস্যের ডান হাতের কবজি উড়ে গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকি দুজনেরও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে।’

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, আহতাবস্থায় পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত পুলিশ সদস্য প্রবীর, ফুয়াদ ও মোরশেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর দুই পুলিশ সদস্য আশিকুল (২৭) ও বিপুলকে (২৪) তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় পাঠানোদের মধ্যে ফুয়াদের অবস্থা বেশি গুরুতর। তাঁর ডান হাতের আঙ্গুল ও কবজির নিচের অংশে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।

গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে ছাত্রদল নেতা আটক গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে ছাত্রদল নেতা আটক
এদিকে বুধবার সকালে একদফা আন্দোলনের পর ফের দুপুরে আমবাগ এলাকায় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন। খবর পেয়ে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নাওজোড় এলাকায় বিক্ষোভে নামেন শত শত শ্রমিক। এ সময় তাঁরা ইসলামপুর এলাকায় নর্প নীটওয়্যার্স নামের একটি কারখানায় ভাংচুর চালায়। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তেজিত শ্রমিকেরা ঢিল ছুড়ে বেশ কিছু গাড়ির কাঁচ ভাংচুর করে।

পরে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করলে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। শ্রমিকদের সরে যাওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শ্রমিক আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের এপিসি কারের ভেতরে অসাবধানতায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যরা আহত হন। একজনের হাতের কবজি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই বিস্ফোরণেই।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘বুধবার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মোট আটজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সকালে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন ও বিকেলে নাওজোড় এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছেন।’

এপিসি কারের ভেতরে সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ নিয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু সাংবাদিকদের জানাননি। তবে তিনি এপিসি কারে বিস্ফোরণের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিকেলে যে পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, এদের মধ্যে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি এপিসি কারে বিস্ফোরণেও আহত হওয়ার ঘটনা আছে।’