চলছে বিএনপি-জামায়াতের তৃতীয় দফার অবরোধ
- আপডেট সময় : ০৬:১৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪৩০ বার পড়া হয়েছে
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সারা দেশে বিএনপির তৃতীয় দফা অবরোধ শুরু। আজ বুধবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়ে অবরোধ চলবে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে টহলে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে, সোমবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে। আমাদের অবরোধ কর্মসূচি জনগণের দাবি আদায়ে। অতীতের মতো সব বাধা উপেক্ষা করে রাজপথে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।
২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র পুলিশ ও নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর থেকেই তালাবদ্ধ নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। গত ১২ দিনের গ্রেপ্তার এড়াতে দলের কার্যালয়ে আসেননি কোনো নেতাকর্মী। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সারাদেশে ৮ হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দলটি।
গত ১২ দিনে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা না গেলেও ২৪ ঘণ্টা কার্যালয়ে দুপাশে পালাক্রমে অবস্থান নিয়ে রেখেছে পুলিশ। এছাড়া কার্যালয়ে পাশে রাখা হয়েছে লোহার বক্ল। নির্বাচন কমিশন থেকে বিএনপিকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেওয়া একটি চিঠি এখনো পড়ে আছে কার্যালয়ে প্রবেশ মুখে একটি চেয়ারে।
বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলোর তৃতীয় দফায় দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিন আজ রাজপথে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
৪৮ ঘণ্টার অবরোধের শুরুতে বুধবার (৮ নভেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকে তৃতীয় দফার সর্বাত্মক অবরোধের প্রথম দিনে পিকেটিংয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার (৮ নভেম্বর) সকালে উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সড়ক অবরোধ করে পিকেটিং করেন রিজভী।
এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কফিল উদ্দিন, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক এবিএম আবদুর রাজ্জাক, দক্ষিণখান থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল মোতালেব, বিএনপি নেতা জাহিদ মাস্টারসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা অবরোধে জনগণের জানমাল রক্ষায় র্যাবের ৪৬০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকায় ১৬০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) সকালে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত জানান।
তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীতে র্যাব ফোর্সেসের ১৬০টি টহল দলসহ সারাদেশে ৪৬০টি টহল দল মোতায়েন রয়েছে।
৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনেই অবরোধের প্রভাব পড়েনি রাজধানীর সড়কে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছিল গাড়ির চাপ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরো বাড়তে থাকে। একইসঙ্গে কোথাও কোথাও যানজটও দেখা গেছে।
রাজধানীর মিরপুর রোডের সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, এলিফ্যান্ট রোড ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই চলাচল করছে গণপরিবহন, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, স্টাফবাস, মোটরসাইকেল ও সিএনজি। একইসঙ্গে গাড়ির চাপ বেশি থাকায় তৈরি হচ্ছে যানজটও। মোড়গুলোতে দিতে হচ্ছে সিগন্যাল। সকাল থেকেই স্বাভাবিক সময়ের মতোই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের।
এছাড়া দেখা গেছে, ধানমন্ডি থেকে নিউমার্কেট অভিমুখ আসা প্রতিটি বাসই যাত্রীতে পরিপূর্ণ। অবরোধের শুরুর দিকে যেমন ফাঁকা সড়ক ও গণপরিবহন স্বল্পতা ছিল আজ তা নেই। সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে চারসড়কের গাড়ির ক্রসিং এর জন্য একটু পর পর দিতে হচ্ছে সিগন্যাল। যাত্রীদেরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে না গাড়ির জন্য।
এদিকে অবরোধ ঘিরে নাশকতা ঠেকাতে সড়কে টহল দিতে দেখা গেছে নিউমার্কেট ও ধানমন্ডি মডেল থানা পুলিশ সদস্যদের। এছাড়াও সকাল থেকেই মার্কেট ও শপিং সেন্টার অধ্যুষিত জনবহুল এই এলাকায় দোকানি ও ব্যবসায়ীদেরও নিজেদের প্রতিষ্ঠানে যেতে দেখা গেছে।
সায়েন্স ল্যাবরেটরি বাসস্ট্যান্ডে জাহিদ হাসান নামে চাকরিজীবী বলেন, গত অবরোধের দিন এবং আজকে প্রায় স্বাভাবিক বাস চলাচল করছে। শুরুর দিকে গণপরিবহনের সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। তখন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবে বাসে হুটহাট আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় মানুষের মনে একটা আতঙ্ক তো রয়েছেই।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে টহলে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। গত কয়েকদিন ধরে অবরোধে রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
অবরোধের প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়কে অবস্থান নিয়ে পিকেটিং, বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে জামায়াতে ইসলামী। সরকারের পদত্যাগ, আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাদের মুক্তি ও কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে তৃতীয় দফায় ৮ ও ৯ নভেম্বর ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকে জামায়াতে ইসলামী।
প্রথম দিনে সড়ক, নৌ এবং রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর রমনায় সড়ক অবরোধ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামী। অবরোধ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য শাহীন আহমদ খান, মুতাসিম বিল্লাহ, মুহাম্মদ নুরুদ্দিন, ইমাম হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা।
সেখানে সংক্ষিপ্ত পথসভায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, অবৈধ সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অবরোধ চলবে। সংগ্রামী দেশবাসীকে বলতে চাই, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের এই অবরোধ চলছে। এই আওয়ামী লীগ ভোট চোরের বিরুদ্ধে জামায়াতের অবরোধ। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন, না হলে আমাদের এই অবরোধ আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।
বাবুবাজার-নয়াবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের নেতাকর্মীরা। যাত্রাবাড়ী এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে জামায়াত নেতাকর্মীরা। রাজধানীর ডেমরায় মহাসড়ক অবরোধ করে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বাসাবো বিশ্বরোড এলাকায় সড়ক অবরোধ করে জামায়াত।
তবে অবরোধের প্রথম দিন সকালে ফাঁকা দেখা গেছে গাবতলী বাস টার্মিনাল। সবসময় ‘জেগে থাকা’ গুরুত্বপূর্ণ এ টার্মিনালে সকালে লোকজনের তেমন একটা আনাগোনা নেই।
গাবতলী টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ফাঁকা রয়েছে গাবতলী বাস টার্মিনাল। নেই লোকজনের চলাচল। ছেড়ে যাচ্ছে না দূরপাল্লার কোনো বাস, অধিকাংশ কাউন্টারও বন্ধ। যাত্রী যদিও দু-একজন আসছেন, কিন্তু বাস না ছাড়ায় তারাও পড়েছেন বিপাকে।
কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা জানান, অবরোধ এলে যেমন যাত্রীর সংখ্যা কমে যায়, তেমনি ঝুঁকি বিবেচনায় মালিকরা গাড়ি ছাড়তে চায় না।
চুয়াডাঙ্গাগামী সিডি এক্সপ্লোর পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, অবরোধ এলে মালিকরা ভয়ে গাড়ি ছাড়তে চায় না। যাত্রীরাও বুঝে গেছে যে অবরোধে গাড়ি পাওয়া যাবে না। তাই আজ কোনো লোকজন নেই।
মাগুরাগামী জে আর পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শাহজাহান বলেন, অবরোধের কারণে যাত্রীও নেই, ফলে বাসও ছাড়া হয় না। আমরাও পড়ছি বিপদে, স্টাফদের দৈনিক খরচ দিতে পারছি না।
নারায়ণগঞ্জ
বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। এদিন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের সমর্থকরা মহাসড়কে মিছিল ও পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তৃতীয় দফার অবরোধের প্রথম দিন মিছিল বের করার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন জানান, কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনালে নাশকতা করার সময় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব টিপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বগুড়া
৪৮ ঘণ্টা অবরোধের প্রথম দিনে বগুড়ার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বুধবার (৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার দ্বিতীয় বাইপাস সুজাবাদ এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা এই কর্মসূচি পালন করেন। এদিন সকাল পৌনে আটটার দিকে দ্বিতীয় বাইপাস মহাসড়কের সাবগ্রাম এলাকায় জামায়াত সমর্থিত অবরোধকারীরা মিছিল করতে এলে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধের সমর্থনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার নেতৃত্বে সকাল আটটার দিকে ঢাকা রংপুর মহাসড়কের দ্বিতীয় বাইপাস সুজাবাদ এলাকায় অবস্থান নেন। এ সময় তারা ভোটাধিকার ও সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। পরে সুজাবাদে প্রায় ৩০০ মিটার সড়কের মধ্যে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এদিকে অবরোধে বগুড়া সদরে মহাসড়ক অবরোধের সমর্থনে মিছিলে ‘পুলিশের ছররা গুলিতে’ দশজন আহত হওয়ার দাবি করেছে জামায়াতে ইসলামী। তবে গুলি করার বিষয়টি স্বীকার করে পুলিশের দাবি, নিজেদের ছোড়া হাত বোমার বিস্ফোরণে জামায়াত নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছেন। বুধবার (৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ২য় বাইপাস সাবগ্রাম ও বাঘোপাড়াতে ওই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সদরের ঢাকা-রংপুর ২য় বাইপাস মহাসড়কের সাবগ্রামে বগুড়া শহর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আবিদুর রহমানের নেতৃত্বে দুই শতাধিক নেতা-কর্মী লাঠিসোটা হাতে মিছিল শেষে মহাসড়ক অবরোধ করে। পুলিশ তাদের বাধা দিতে গেলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়৷ একপর্যায়ে পুলিশ জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও শটগান থেকে দুই রাউন্ড ছররা গুলি ছুড়ে। এতে জামায়াত-শিবিরের ১০ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তারা কয়েকটি হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
অবরোধে সহিংসতায় স্কুলে কমছে শিক্ষার্থী উপস্থিতি। আতঙ্কিত শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। শিক্ষা গবেষকরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা গবেষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ধারা স্বাভাবিক রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীরা যেন ঠিকভাবে পরীক্ষা দিতে পারে, ঠিক সময়ে ভর্তি হতে পারে সেটা নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি।’
দুই দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার আগেই সোমবার (৬ নভেম্বর) নতুন করে আরও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডেকেছে বিএনপি। বুধবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
মহাসমাবেশের দিন ২৮ অক্টোবর থেকে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিতে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন সড়কে বাস, ট্রাক, অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর করার খবর এসেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফায় রোববার ও সোমবার সর্বাত্মক অবরোধ চলার সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ২১টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি বাস, দুটি ট্রাক, একটি প্রাইভেটকার, একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি লেগুনা পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
২৮ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১১০টি অগ্নিসংযোগের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর একটি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর সাতটি, ৪ নভেম্বর ছয়টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি এবং ৬ নভেম্বর ১০টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এদিকে র্যাব জানিয়েছে, অবরোধের নামে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের জড়িতদের ধরতে বাহিনীটি কঠোর নজরদারি করবে। তাদের গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হবে।
বিএনপির দাবি, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এবং পরবর্তীতে নয় দিনে ১৩২টি মামলায় তাদের পাঁচ হাজার ৫৫৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।