তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপার্সন শমসের মুবিন চৌধুরী বলেছেন, তার দল আসন্ন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবেন বলে জানান তিনি।
বুধবার (৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তৃণমূল বিএনপির যোগদান অনুষ্ঠানে এসব বলেন সাবেক এই আমলা। বলেন, তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনমূখী দল।
শমসের মুবিন বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আইনে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। বলেন, তৃণমূল বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি কিংবা লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ মারা রাজনীতি সমর্থন করে না। তার দাবি একদল ক্ষমতায় থাকতে আরেকদল ক্ষমতায় যেতে আন্দোলন করছে। তবে তৃণমূল বিএনপি ক্ষমতায় যেতে রাজনীতি করছে না বলে মন্তব্য তার।
শমসের মুবিন চৌধুরী জানান, আগামী নির্বাচনে ৩০০ সংসদ আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তাঁর দল। তবে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শমসের মুবিন। তিনি বলেন, ‘আপনারা এগিয়ে আসেন। বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে এগিয়ে আসেন, যাতে প্রতিটি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারেন। যাতে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ সে নারী হোক, পুরুষ হোক, যে ধর্মেরই হোক, অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি। এদেশে প্রতিটি মানুষের অধিকার সমান।’
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায় তৃণমূল বিএনপি। দলটির প্রতীক সোনালি আঁশ। তৃণমুল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা বিএনপির সাবেক নেতা নাজমুল হুদা। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে দুই দফায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০১২ সালে তিনি বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিএনএফ নামে নতুন একটি দল গঠন করেন। সেখান থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর ২০১৫ সালে গঠন করেন তৃণমূল বিএনপি।
গত সেপ্টেম্বরে জাতীয় কাউন্সিলে দলটির নেতৃত্বে আসেন বিএনপির আরও দুই নেতা। এর মধ্যে চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী, আর মহাসচিব হন বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার।
শমসের মুবিন চৌধুরী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতও। অবসরের পর ২০০৮ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। এর পরের বছরই দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত হন তিনি।
২০১৫ সালের অক্টোবরে তিনি হঠাৎ করেই বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে আসেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে যোগ দেন বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সঙ্গে। তিনি এখনো দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে তৈমুর আলম খন্দকার দীর্ঘসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাও হন। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটির প্রথম নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। ২০২২ সালে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।