রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সাংবিধানিক রীতি-নীতি ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে কমিশনকে সাহসিকতা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বধীন কমিশন। আজ বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়। এতে সিইসি ছাড়াও চার জন নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।
এসময় নির্বাচন কমিশনাররা নির্বাচনের তারিখ ও প্রস্তুতি বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। এসময় রাষ্ট্রপতিও তাদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন।
বঙ্গভবন থেকে বের হয়ে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবগত করা হয়েছে। শিগগিরি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানান সিইসি। এসময় তিনি বলেন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন করতে হবে
সংবিধান অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ২৯ জানুয়ারি। তার আগের নব্বই দিনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সেই হিসেবে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসি। এক্ষেত্রে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছে সংস্থাটি। আগামি কয়েকদিনের মধ্যেই বাংলাদেশ টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন সিইসি।
তিনি জানান, সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছে। নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের মতামত প্রতিফলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন এবং প্রতিনিধির মাধ্যমেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়ে থাকে।
সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একসাথে চলে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হলে দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি আশা করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সরকার নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা দেবে। তিনি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সাংবিধানিক রীতিনীতি ও বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক কমিশনকে সাহসিকতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
নির্বাচন কমিশনার এবং রাষ্ট্রপতির সচিবরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, গত ৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বধীন কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, পরে তা পিছিয়ে ৯ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়।
জানা গেছে, সংসদ নির্বাচনের প্রায় সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে ইসি। ইতোমধ্যে ৩০০ আসন ভিত্তিক ভোটার তালিকাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের কয়েক দিনের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে তফসিল। আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন করবে ইসি।
সংবিধান অনুযায়ী, গত ৩১ অক্টোবর থেকে সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।