ঢাকা ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের বন্দর আব্বাসের গ্যাস স্থাপনা, ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেহরানের অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে: ইসরায়েলি মিডিয়া :::: ইরানের রাজধানী তেহরান, হরমোজগান, কেরমানশাহ, পশ্চিম আজারবাইজান, লোরেস্তান ও খুজেস্তানসহ ইরানের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে নতুন করে তীব্র হামলা চালিয়েছে ইসরাইল :::: ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক বলেছেন, কূটনৈতিক উপায় 'এখনো শেষ হয়ে যায়নি' :::: ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে আলোচনা করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারা :::: ইসরাইলি হামলায় ইরানের এসফাহান পরমাণু স্থাপনার চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: আইএইএ :::: ইরানে ইসরায়েলি হামলাকে 'অসহনীয়' বলল জাপান :::: ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বললেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ :::: ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন কাতারের শেখ তামিম :::: ইরানের সামরিক বাহিনী বলছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের ১০টি বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে :::: ইরানের গ্যাসক্ষেত্রে বেসামরিক অবকাঠামোতে ইসরাইলি হামলা ::: তেহরানে অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক হামলায় নিহত ৪০

টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:১৪:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪৭৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (নাগ) প্রতিরোধে রাষ্ট্র হিসেবে ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে মিয়ানমার। জান্তা সরকারের প্রেসিডেন্ট মিয়ন্ত সুয়ে বলেছেন, চীনের সঙ্গে সীমান্ত অঞ্চলে সহিংসতা দমনে অকার্যকর ব্যবস্থাপনা মিয়ানমার ভেঙে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

বৃহস্পতিবার রাজধানী নেইপিদোতে দেশটিতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে তিনি বলেন, ‘সীমান্ত অঞ্চলে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে, সরকার যদি তা নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারে— সেক্ষেত্রে এই সংঘাতের জেরে সামনে মিয়ানমার টুকরো টুকরো হয়ে যাবে এবং বেশ কিছু অঞ্চল স্বাধীনতা ঘোষণা করবে।’

জান্তার সঙ্গে লড়াইয়ের প্রথমদিকে চাপে থাকলেও বর্তমানে তা কাটিয়ে ওঠার আভাস দিচ্ছে নাগ। সম্প্রতি চীনের সঙ্গে সীমান্তবর্তী বেশ কিছু শহর দখল করে নিয়েছে নাগের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী। সর্বশেষ মঙ্গলবার দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ের কাওলিন জেলা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন নাগের যোদ্ধারা।

কাওলিন কৌশলগত দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর। কারণ কাওলিন জেলার সামরিক প্রশাসনিক কার্যালয়ের সদর দপ্তরের অবস্থান এই শহরে। প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন কাওলিনে।

যেহেতু জেলার সামরিক প্রশানিক কার্যালয়ের শহর কাওলিনে, তাই এই শহরটির দখল করা মানে এক অর্থে পুরো কাওলিন জেলার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।

এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের সাধারণ জনগন যেন সামরিক বাহিনীকে সমর্থন করে, সেজন্য পদক্ষেপ নিতে জান্তাকে পরামর্শও দিয়েছেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমারকে অখণ্ড রাখতে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন জরুরি। এ কারণে সরকারের উচিত হবে সতর্কতার সঙ্গে এই ইস্যুটি নিয়ন্ত্রণ করা।’

২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

ক্ষমতা দখলের পর বন্দি করা হয় এনএলডির শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চিসহ দলটির অধিকাংশ উচ্চ ও ও মাঝারি পর্যায়ের নেতা ও আইনপ্রণেতাদের। এখনও তারা কারাগারে রয়েছেন।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনগণ অবশ্য সামরিক বাহিনীর এ পদক্ষেপ একেবারেই মেনে নেয়নি। বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই রাজধানী নেইপিদো, প্রধান শহর ও বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ দেশটির ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণভাবে তা দমনের চেষ্টা করলেও একসময় বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা।

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে হাজারেরও অধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এক পর্যায়ে গণতন্ত্রপন্থীরা জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিতে থাকেন, গঠিত হয় ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা নাগ।

জান্তাবিরোধী এই রাজনৈতিক জোট নিজেদেরকে দেশটির ছায়া সরকার বলেও দাবি করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে মিয়ানমার

আপডেট সময় : ০৪:১৪:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৩

মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (নাগ) প্রতিরোধে রাষ্ট্র হিসেবে ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে মিয়ানমার। জান্তা সরকারের প্রেসিডেন্ট মিয়ন্ত সুয়ে বলেছেন, চীনের সঙ্গে সীমান্ত অঞ্চলে সহিংসতা দমনে অকার্যকর ব্যবস্থাপনা মিয়ানমার ভেঙে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

বৃহস্পতিবার রাজধানী নেইপিদোতে দেশটিতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে তিনি বলেন, ‘সীমান্ত অঞ্চলে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে, সরকার যদি তা নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারে— সেক্ষেত্রে এই সংঘাতের জেরে সামনে মিয়ানমার টুকরো টুকরো হয়ে যাবে এবং বেশ কিছু অঞ্চল স্বাধীনতা ঘোষণা করবে।’

জান্তার সঙ্গে লড়াইয়ের প্রথমদিকে চাপে থাকলেও বর্তমানে তা কাটিয়ে ওঠার আভাস দিচ্ছে নাগ। সম্প্রতি চীনের সঙ্গে সীমান্তবর্তী বেশ কিছু শহর দখল করে নিয়েছে নাগের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী। সর্বশেষ মঙ্গলবার দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ের কাওলিন জেলা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন নাগের যোদ্ধারা।

কাওলিন কৌশলগত দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর। কারণ কাওলিন জেলার সামরিক প্রশাসনিক কার্যালয়ের সদর দপ্তরের অবস্থান এই শহরে। প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন কাওলিনে।

যেহেতু জেলার সামরিক প্রশানিক কার্যালয়ের শহর কাওলিনে, তাই এই শহরটির দখল করা মানে এক অর্থে পুরো কাওলিন জেলার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।

এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের সাধারণ জনগন যেন সামরিক বাহিনীকে সমর্থন করে, সেজন্য পদক্ষেপ নিতে জান্তাকে পরামর্শও দিয়েছেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমারকে অখণ্ড রাখতে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন জরুরি। এ কারণে সরকারের উচিত হবে সতর্কতার সঙ্গে এই ইস্যুটি নিয়ন্ত্রণ করা।’

২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

ক্ষমতা দখলের পর বন্দি করা হয় এনএলডির শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চিসহ দলটির অধিকাংশ উচ্চ ও ও মাঝারি পর্যায়ের নেতা ও আইনপ্রণেতাদের। এখনও তারা কারাগারে রয়েছেন।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনগণ অবশ্য সামরিক বাহিনীর এ পদক্ষেপ একেবারেই মেনে নেয়নি। বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই রাজধানী নেইপিদো, প্রধান শহর ও বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ দেশটির ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণভাবে তা দমনের চেষ্টা করলেও একসময় বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা।

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে হাজারেরও অধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এক পর্যায়ে গণতন্ত্রপন্থীরা জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিতে থাকেন, গঠিত হয় ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা নাগ।

জান্তাবিরোধী এই রাজনৈতিক জোট নিজেদেরকে দেশটির ছায়া সরকার বলেও দাবি করে।