ঢাকা ১১:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রিয়াদ সম্মেলন থেকে এলো না ইসরায়েলবিরোধী কঠোর বিবৃতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৯:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪১২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যখন ইহুদিবাদী ইসরাইল নিরীহ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ গণহত্যা চালাচ্ছে তখন ৫৭টি মুসলিম দেশের শীর্ষ নেতারা রিয়াদ সম্মেলনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে একমত হতে পারেননি।

সম্মেলনে ইরানের পক্ষ থেকে ইসরাইলি বাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ ঘোষণা করার এবং সিরিয়ার পক্ষ থেকে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু এই দু’টি প্রস্তাবের কোনোটিই সম্মেলনে গৃহিত হয়নি।

ইরানসহ ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিদার দেশগুলো আশা করেছিল, ফিলিস্তিনি মুসলমানদের দুর্দশা চলমান থাকায় হয়তো রিয়াদ সম্মেলন থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়া হবে। কিন্তু মুসলিম নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে আরব নেতারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে উম্মাহর স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়ার সিদ্ধান্তে বরাবরের মতোই অটল থাকেন।

ওআইসি সম্মেলনে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি আরব কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, আরব লীগের দুই সদস্যদেশ লেবানন ও আলজেরিয়া ইসরাইলকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার প্রস্তাব দেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী গত সপ্তাহে ইসরাইলে তেল ও খাদ্যসহ সব পণ্য সরবরাহ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু রিয়াদ সম্মেলনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের বিরোধিতার কারণে এই প্রস্তাব গৃহিত হয়নি। আরব আমিরাত ও বাহরাইন উভয়ে ২০২০ সালে ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

ওআইসি সম্মেলনে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি শনিবারের রিয়াদ সম্মেলনে শীর্ষ নেতাদের ভাষণ শেষ হওয়ার পর এটি থেকে একটি চূড়ান্ত বিবৃতি প্রকাশে দেরি হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়, ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে মতৈক্য নেই।

মুসলিম বিশ্বের কথিত এসব নেতা নিজেরা কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়ে এমন একটি দাবি চূড়ান্ত করেন যা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা সুদূরপরাহত। দাবিটি হচ্ছে, গাজার ওপর আগ্রাসন বন্ধ করতে ইসরাইলকে বাধ্য করার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস করতে হবে।

ওআইসি সম্মেলনে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ সিসি’র সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদে অত্যন্ত নরম ভাষায় ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর জন্য বেশ কয়েকবার প্রস্তাব উত্থাপন করা সত্ত্বেও আমেরিকার ভেটোর কারণে তা পাস করা যায়নি। ইহুদিবাদী ইসরাইল বলছে, হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি বন্দিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত গাজায় সামরিক আগ্রসন বন্ধ হবে না। অন্যদিকে হামাস নেতা ওসামা হামদান বলেছেন, আগ্রাসন বন্ধ না হলে বন্দিদের মুক্ত করা সম্ভব নয়।

নিঃসন্দেহে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের এমনকি সামরিক হামলা চালানোর হুমকি দেয়ার মতো ক্ষমতা ওআইসিভুক্ত ৫৭ দেশের ছিল। কিন্তু নিজের চেয়ে ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষায় বেশি সচেষ্ট আরব নেতাদের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

রিয়াদ সম্মেলন থেকে এলো না ইসরায়েলবিরোধী কঠোর বিবৃতি

আপডেট সময় : ০৬:৫৯:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যখন ইহুদিবাদী ইসরাইল নিরীহ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ গণহত্যা চালাচ্ছে তখন ৫৭টি মুসলিম দেশের শীর্ষ নেতারা রিয়াদ সম্মেলনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে একমত হতে পারেননি।

সম্মেলনে ইরানের পক্ষ থেকে ইসরাইলি বাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ ঘোষণা করার এবং সিরিয়ার পক্ষ থেকে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু এই দু’টি প্রস্তাবের কোনোটিই সম্মেলনে গৃহিত হয়নি।

ইরানসহ ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিদার দেশগুলো আশা করেছিল, ফিলিস্তিনি মুসলমানদের দুর্দশা চলমান থাকায় হয়তো রিয়াদ সম্মেলন থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়া হবে। কিন্তু মুসলিম নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে আরব নেতারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে উম্মাহর স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়ার সিদ্ধান্তে বরাবরের মতোই অটল থাকেন।

ওআইসি সম্মেলনে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি আরব কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, আরব লীগের দুই সদস্যদেশ লেবানন ও আলজেরিয়া ইসরাইলকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার প্রস্তাব দেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী গত সপ্তাহে ইসরাইলে তেল ও খাদ্যসহ সব পণ্য সরবরাহ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু রিয়াদ সম্মেলনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের বিরোধিতার কারণে এই প্রস্তাব গৃহিত হয়নি। আরব আমিরাত ও বাহরাইন উভয়ে ২০২০ সালে ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

ওআইসি সম্মেলনে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি শনিবারের রিয়াদ সম্মেলনে শীর্ষ নেতাদের ভাষণ শেষ হওয়ার পর এটি থেকে একটি চূড়ান্ত বিবৃতি প্রকাশে দেরি হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়, ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে মতৈক্য নেই।

মুসলিম বিশ্বের কথিত এসব নেতা নিজেরা কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়ে এমন একটি দাবি চূড়ান্ত করেন যা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা সুদূরপরাহত। দাবিটি হচ্ছে, গাজার ওপর আগ্রাসন বন্ধ করতে ইসরাইলকে বাধ্য করার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস করতে হবে।

ওআইসি সম্মেলনে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ সিসি’র সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদে অত্যন্ত নরম ভাষায় ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর জন্য বেশ কয়েকবার প্রস্তাব উত্থাপন করা সত্ত্বেও আমেরিকার ভেটোর কারণে তা পাস করা যায়নি। ইহুদিবাদী ইসরাইল বলছে, হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি বন্দিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত গাজায় সামরিক আগ্রসন বন্ধ হবে না। অন্যদিকে হামাস নেতা ওসামা হামদান বলেছেন, আগ্রাসন বন্ধ না হলে বন্দিদের মুক্ত করা সম্ভব নয়।

নিঃসন্দেহে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের এমনকি সামরিক হামলা চালানোর হুমকি দেয়ার মতো ক্ষমতা ওআইসিভুক্ত ৫৭ দেশের ছিল। কিন্তু নিজের চেয়ে ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষায় বেশি সচেষ্ট আরব নেতাদের কারণে তা সম্ভব হয়নি।