ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে কৌশলী অবস্থান নিয়েছে চীন। ইসরায়েলের সাথে ভালো ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও ফিলিস্তিনের সাথে কৌশলগত অংশীদারিত্ব টিকিয়ে রাখতে চলমান সংঘাতে নিজেদের নিরপেক্ষ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে দেশটি।গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে মধ্যস্থতারও প্রস্তাব দিয়েছে বেইজিং।
ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধে সরাসরি কোন পক্ষ সমর্থনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দেয়নি চীন। মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে চেষ্টা করে দেশটি। তবে গাজায় ইসরায়েলের হামলার সমালোচনা করেছে বেইজিং।
হামাসের সাথে সম্পর্ক না থাকলেও ফিলিস্তিনের সাথে চীনের ভালো কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে। তাই সংঘাত নিরসনে যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে শান্তি আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়েছে চীন। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের দ্বন্দ্ব নিরসনে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানকে সমর্থন করছে বেইজিং।
আবার 'এক চীন নীতি'র প্রতি সম্মান জানিয়ে, শিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের ওপর চীন সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে নিরব থাকে ফিলিস্তিন। তাই দেশটির সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।
চীনের প্রধান ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েল। তাই ইসরায়েলকে পশ্চিমা-বিরোধী জোট শক্তিশালী করার পরিকল্পনার বিপক্ষে অবস্থানকারী পক্ষ হিসেবে দেখছে চীন।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চীনের ভূমিকার সুনাম রয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সাথে ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হয়েছিল। ২০১৯ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন চীনের বিশেষ দূত ঝাই জুন। ইসরায়েলের সাথে আরব দেশগুলোর সম্পর্কোন্নয়নে চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। এছাড়া ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সংঘাত নিরসনে বিভিন্ন পক্ষের সাথে কথা বলেছেন ঝাই জুন।
তবে, অতীতে ইসরায়েলের সাথে চীনের সম্পর্ক খারাপ থাকলেও কয়েক দশক ধরে তারা ভালো ব্যবসায়িক অংশীদার। ১৯৯২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে এবছর পর্যন্ত চীন ও ইসরায়েল প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য বাণিজ্য করেছে। আগামীতে যৌথ উদ্ভাবন ও উচ্চ প্রযুক্তি বিষয়ক ব্যবসায়িক খাতে কাজ করতে চায় তারা।