চতুর্থ দফা অবরোধের শেষ দিন চলছে ঢিলেঢালাভাবে
- আপডেট সময় : ০৬:২৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪১৯ বার পড়া হয়েছে
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা চতুর্থ দফার ৪৮ ঘন্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিন চলছে। তবে অবরোধ উপেক্ষা করে রাস্তায়ে বেড়েছে যানবাহন চলাচল।
চতুর্থ দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে রাজধানীতে যানবাহন কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে কিছুটা বেড়েছে। গণপরিবহনের সংখ্যা কম থাকলেও বরাবরের মত রিক্সা, অটোরিক্সা, সিএনজি ও ব্যক্তিগত গাড়ির দখলে রাজপথ।
তবে যাত্রীর অভাবে রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী থেকে ছেড়ে যায়নি দুরপাল্লার বাস। অফিসগামী আর দিনমজুররা ছুটছেন নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে। বলছেন, জীবিকার তাগিদেই বের হতে হচ্ছে তাদের।
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকায় বের হয়েছেন শিক্ষার্থীরাও। তবে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানান তারা। নাশকতা রুখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। দ্বিতীয় দিনের অবরোধ শেষ হবে সোমবার ভোর ৬ টায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আজ ভোর থেকে সড়কে যানবাহন কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে। বাসের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশাতেও চাকরিজীবী ও কর্মজীবীরা তাদের গন্তব্যে যায়।
যাত্রীরা জানান, আতঙ্ক থাকলেও জীবিকার তাগিদেই বাইরে বেরিয়েছেন তাঁরা। তবে বাস চালকদের দাবি, অবরোধের কারণে সড়কে যাত্রী কম।
অবরোধের কারণে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে টহল দিচ্ছে পুলিশ। যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রয়েছে বাড়তি নজরদারি। সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারে ঢাকার আশপাশের জেলায়ও মোতায়েন করা রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য।
এদিকে অবরোধের সমর্থনে রাজধানীর মহাখালী, বনানী, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও সাভারের বলিয়ারপুরে বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার রাতে এসব ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে বনানীতে দগ্ধ একজনকে ভর্তি করা হয়েছে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে।
তেজগাঁও ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ নাজিমুদ্দিন সরকার জানিয়েছেন, রাত ৮টা ২০ মিনিটে মহাখালীর নাবিস্কো কারখানার সামনে শ্যামলী বাংলা পরিবহনের বাসে আগুনের খবর পাওয়া যায়। পরে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ছাড়া রাত ১০টার দিকে বনানীতে বাংলাদেশ বিমানের স্টাফ বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে মানিক দাস নামে একজন দগ্ধ হয়েছেন। তিনি বিমানের ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন। আবার রাজধানীর মুগদায় একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশের দিন থেকে ৯ নভেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত পর্যন্ত সারা দেশে মোট ১২৩টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর ১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১০টি এবং ৮ ও ৯ নভেম্বর মোট ১৩টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে পুলিশ হামলার অভিযোগ করে ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতাল ডাকে দলটি। পরে সেই হরতালে সমর্থন জানান জামায়াতে ইসলামী।
একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা তিনদিন সর্বাত্মক অবরোধ ডাকে দল দুটি। পরে দ্বিতীয় দফায় ৫ থেকে ৬ নভেম্বর এবং তৃতীয় দফায় ৮ থেকে ৯ নভেম্বর অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি-জামায়াত। পরে তৃতীয় দফা অবরোধের শেষদিন বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন করে রোববার (১২ নভেম্বর) ও সোমবার (১৩ নভেম্বর) টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন রুহুল কবির রিজভী।