১০:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের আগে তিন দলকে চিঠি: শর্তহীন সংলাপ চায় আমেরিকা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০৫:১১:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩
  • ৭৭ দেখেছেন

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে দেশের তিন প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি দিয়েছে আমেরিকা। এই চিঠিতে নির্বাচন নিয়ে মার্কিন সরকারের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।

সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাস জানায়, আমেরিকার সরকারের পক্ষে এই তিন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাছে মার্কিন এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

চিঠির বক্তব্য তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরিচালিত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় আমেরিকা। এতে সবপক্ষকে সহিংসতা পরিহার ও সহনশীল থাকার অনুরোধ জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, আমেরিকা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ নেয় না। এছাড়াও সবগুলো পক্ষকে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বানও জানানো হয়েছে চিঠিতে।

নির্বাচনে বাধা দেওয়াদের জন্য মার্কিন ভিসানীতির বিষয়টিও চিঠিতে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমান একাদশ সংসদের মেয়াদ প্রায় শেষ। এখন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন সামনে রেখে দেশে তৎপরতা বাড়িয়েছে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো। দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নিয়মিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। এসব ঘটনায় সরকার প্রধান থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ আছে।

গত ৮ নভেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কারও নাম উল্লেখ না করে রাষ্ট্রদূতদের সীমালঙ্ঘন না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘তাদের শুধু কালচারাল স্পেস দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশই নেবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ মুহূর্তে বিদেশি কূটনীতিকদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।’

আমেরিকা বলে আসছে, সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দেখতে চায় তারা। নির্বাচনে বাধা দেওয়াদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে দেশটি। এরই মধ্যে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে বলে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক বৈঠকে দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তিকে সংলাপের আহ্বান জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তবে তার এ বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৩১ অক্টোবর গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংলাপের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুনিদের সঙ্গে কোনো ডায়লগ নয়।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে রেষারেষি ততই বাড়ছে। নির্বাচন নিয়ে সমঝোতার কোনো আলামত এখন পর্যন্ত নেই। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্বাচন হতে হবে এ বছরের নভেম্বর থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না হলেও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এই নভেম্বরেই হতে পারে নির্বাচনের তফসিল আর ভোট হবে জানুয়ারির প্রথমার্ধে।

এ অবস্থায় সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে নির্বাচন নিয়ে দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন পিটার হাস। অবশ্য বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো সুযোগ নেই।

অবশ্য নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও তাদের জোট সঙ্গীদের আনতে আওয়ামী লীগের ওপর চাপ আছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমঝোতায় সংলাপ বা আলোচনার বিকল্প কোনো পথ দেখা যাচ্ছে না।

বিএনপি বলে আসছে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে তারা অংশ নেবে না। এর অংশ হিসেবে গত কয়েক বছরে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, সেগুলোতে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের অনেককেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে রাজপথে নানা কর্মসূচি পালন করছেন দলটির নেতা–কর্মীরা।

আওয়ামী লীগও বলে আসছে, উচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ায় এটি আর ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। আগামী নির্বাচন হবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদে রেখে, নির্বাচন কমিশনের অধীনে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ অনুমোদন

নির্বাচনের আগে তিন দলকে চিঠি: শর্তহীন সংলাপ চায় আমেরিকা

আপডেট : ০৫:১১:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে দেশের তিন প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি দিয়েছে আমেরিকা। এই চিঠিতে নির্বাচন নিয়ে মার্কিন সরকারের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।

সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাস জানায়, আমেরিকার সরকারের পক্ষে এই তিন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাছে মার্কিন এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

চিঠির বক্তব্য তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরিচালিত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় আমেরিকা। এতে সবপক্ষকে সহিংসতা পরিহার ও সহনশীল থাকার অনুরোধ জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, আমেরিকা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ নেয় না। এছাড়াও সবগুলো পক্ষকে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বানও জানানো হয়েছে চিঠিতে।

নির্বাচনে বাধা দেওয়াদের জন্য মার্কিন ভিসানীতির বিষয়টিও চিঠিতে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমান একাদশ সংসদের মেয়াদ প্রায় শেষ। এখন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন সামনে রেখে দেশে তৎপরতা বাড়িয়েছে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো। দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নিয়মিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। এসব ঘটনায় সরকার প্রধান থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ আছে।

গত ৮ নভেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কারও নাম উল্লেখ না করে রাষ্ট্রদূতদের সীমালঙ্ঘন না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘তাদের শুধু কালচারাল স্পেস দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশই নেবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ মুহূর্তে বিদেশি কূটনীতিকদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।’

আমেরিকা বলে আসছে, সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দেখতে চায় তারা। নির্বাচনে বাধা দেওয়াদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে দেশটি। এরই মধ্যে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে বলে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক বৈঠকে দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তিকে সংলাপের আহ্বান জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তবে তার এ বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৩১ অক্টোবর গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংলাপের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুনিদের সঙ্গে কোনো ডায়লগ নয়।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে রেষারেষি ততই বাড়ছে। নির্বাচন নিয়ে সমঝোতার কোনো আলামত এখন পর্যন্ত নেই। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্বাচন হতে হবে এ বছরের নভেম্বর থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না হলেও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এই নভেম্বরেই হতে পারে নির্বাচনের তফসিল আর ভোট হবে জানুয়ারির প্রথমার্ধে।

এ অবস্থায় সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে নির্বাচন নিয়ে দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন পিটার হাস। অবশ্য বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো সুযোগ নেই।

অবশ্য নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও তাদের জোট সঙ্গীদের আনতে আওয়ামী লীগের ওপর চাপ আছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমঝোতায় সংলাপ বা আলোচনার বিকল্প কোনো পথ দেখা যাচ্ছে না।

বিএনপি বলে আসছে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে তারা অংশ নেবে না। এর অংশ হিসেবে গত কয়েক বছরে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, সেগুলোতে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের অনেককেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে রাজপথে নানা কর্মসূচি পালন করছেন দলটির নেতা–কর্মীরা।

আওয়ামী লীগও বলে আসছে, উচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ায় এটি আর ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। আগামী নির্বাচন হবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদে রেখে, নির্বাচন কমিশনের অধীনে।