ঢাকা ০১:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নিহতদের দাফনের কেউ নেই, লাশ খাচ্ছে কুকুর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:২৮:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪৬২ বার পড়া হয়েছে

গাজার আল–শিফা হাসপাতালে আহত এক ব্যক্তি। ছবি: রয়টার্স

৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাজায় হাসপাতালগুলোতে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরই মধ্যে জ্বালানি সংকটে তিনটি হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংকটে আছে আল–শিফার রোগী ও স্বজনেরা। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, একের পর এক ইসরায়েলি বোমার কারণে ওই হাসপাতালের সামনে পড়ে থাকা মরদেহের দাফনের সাহস পাচ্ছে না কেউ। নেড়ি কুকুর এসে সেসব লাশ কামড়ে খাচ্ছে।

সোমবার সকালে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা মুনির আল–বুরসের সঙ্গে। ওই সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। মুনির আল–বুরস বলেন, ‘হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পড়ে আছে অনেক মরদেহ। দাফনের লোক নেই। কে সাহস করে দাফন করতে যাবে? এ কারণে নেড়ি কুকুর এসে সেই মরদেহ কামড়ে খাচ্ছে।’

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই বলছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া হাসপাতালগুলোর মধ্যে এই আল–শিফার অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। এই হাসপাতালের প্রাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান আহমদ মুখাল্লাদি বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো পানি নেই। বিদ্যুৎ তো সেই কবে থেকেই নেই। যে অল্প পরিমাণ খাবার আর জ্বালানি আসতো তা এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে।’

নিহত প্রায় ১০০ মানুষের দাফনের জন্য আল–শিফায় আপাতত হামলা বন্ধ রাখার জোর অনুরোধ জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এক্সে করা এক সাংবাদিকের পোস্টের বরাতে করাচিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, লাশগুলো পচে যাচ্ছে। তাদের সর্বাঙ্গে কৃমি। নেড়ি কুকুর তাদের মাংস খাচ্ছে। গন্ধ অসহনীয়।

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরকে প্রায় একই রকম কথা বলেছেন ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল–কাইলা। তিনি বলেন, ‘আল–শিফা হাসপাতালের শিশু, নারীসহ সবাই মৃত্যুর মুখে। তাদের উদ্ধারের কথা বলে রাস্তায় ফেলে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। বোমা হামলা বন্ধই করছে না।’

ইসরায়েল গত শনিবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা শিশুদের সরিয়ে নিতে সাহায্য করবে। কিন্তু হাসপাতালটি ইসরায়েলের স্থল আক্রমণে আটকা পড়ায় তা আর হয়নি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের স্থল সৈন্যরা ‘জরুরি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে’ হাসপাতালে ৩০০ লিটার জ্বালানি পৌঁছে দিয়েছে।

ইসরায়েলের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এগুলো সংগ্রহ করেনি। কারণ প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যে ক্ষোভের কারণে হামাস হাসপাতালটিকে জ্বালানি নিতে বাধা দিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের এই দাবি প্রত্যাখান করেছেন আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া। তিনি বলেন, ইসরায়েল সেনারা যথাস্থানে জ্বালানি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এই হামলার পর থেকে গাজায় অব্যাহত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

নিহতদের দাফনের কেউ নেই, লাশ খাচ্ছে কুকুর

আপডেট সময় : ০৫:২৮:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

গাজায় হাসপাতালগুলোতে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরই মধ্যে জ্বালানি সংকটে তিনটি হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংকটে আছে আল–শিফার রোগী ও স্বজনেরা। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, একের পর এক ইসরায়েলি বোমার কারণে ওই হাসপাতালের সামনে পড়ে থাকা মরদেহের দাফনের সাহস পাচ্ছে না কেউ। নেড়ি কুকুর এসে সেসব লাশ কামড়ে খাচ্ছে।

সোমবার সকালে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা মুনির আল–বুরসের সঙ্গে। ওই সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। মুনির আল–বুরস বলেন, ‘হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পড়ে আছে অনেক মরদেহ। দাফনের লোক নেই। কে সাহস করে দাফন করতে যাবে? এ কারণে নেড়ি কুকুর এসে সেই মরদেহ কামড়ে খাচ্ছে।’

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই বলছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া হাসপাতালগুলোর মধ্যে এই আল–শিফার অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। এই হাসপাতালের প্রাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান আহমদ মুখাল্লাদি বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো পানি নেই। বিদ্যুৎ তো সেই কবে থেকেই নেই। যে অল্প পরিমাণ খাবার আর জ্বালানি আসতো তা এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে।’

নিহত প্রায় ১০০ মানুষের দাফনের জন্য আল–শিফায় আপাতত হামলা বন্ধ রাখার জোর অনুরোধ জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এক্সে করা এক সাংবাদিকের পোস্টের বরাতে করাচিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, লাশগুলো পচে যাচ্ছে। তাদের সর্বাঙ্গে কৃমি। নেড়ি কুকুর তাদের মাংস খাচ্ছে। গন্ধ অসহনীয়।

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরকে প্রায় একই রকম কথা বলেছেন ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল–কাইলা। তিনি বলেন, ‘আল–শিফা হাসপাতালের শিশু, নারীসহ সবাই মৃত্যুর মুখে। তাদের উদ্ধারের কথা বলে রাস্তায় ফেলে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। বোমা হামলা বন্ধই করছে না।’

ইসরায়েল গত শনিবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা শিশুদের সরিয়ে নিতে সাহায্য করবে। কিন্তু হাসপাতালটি ইসরায়েলের স্থল আক্রমণে আটকা পড়ায় তা আর হয়নি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের স্থল সৈন্যরা ‘জরুরি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে’ হাসপাতালে ৩০০ লিটার জ্বালানি পৌঁছে দিয়েছে।

ইসরায়েলের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এগুলো সংগ্রহ করেনি। কারণ প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যে ক্ষোভের কারণে হামাস হাসপাতালটিকে জ্বালানি নিতে বাধা দিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের এই দাবি প্রত্যাখান করেছেন আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া। তিনি বলেন, ইসরায়েল সেনারা যথাস্থানে জ্বালানি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এই হামলার পর থেকে গাজায় অব্যাহত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।