ঢাকা ১১:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অবরোধে পুড়েছে ৯৪টি বাস, বাদ যায়নি অ্যাম্বুলেন্সও

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:১৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪২৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপির ডাকা হরতাল-অবরোধ চলাকালীন সারা দেশে ১৫৪টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দিনে গড়ে ৫টি করে বাস পোড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে মোট ১৫৪টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে  ‘২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর ১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১৩টি, ৭ নভেম্বর ২টি, ৮ নভেম্বর ৯টি, ৯ নভেম্বর ৭টি, ১০ নভেম্বর ২টি, ১১ নভেম্বর ৭টি, ১২ নভেম্বর ৭টি, ১৩ নভেম্বর ৭টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।’

এ সময় সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা সিটিতে। তবে সিলেট বিভাগে কোনো আগুনের ঘটনা ঘটেনি। সবচেয়ে বেশি আগুন দেওয়া হয়েছে যাত্রীবাহী বাসে। আগুন থেকে বাদ যায়নি অ্যাম্বুলেন্সও।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, এসব আগুনের বেশিরভাগই হয়েছে রাতে। এসব ঘটনায় সারা দেশে ঘটেছে হতাহতের ঘটনাও।

এসব আগুনের ঘটনায় পুড়েছে ৯৪টি যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস ৩টি, প্রাইভেটকার ২টি, মোটরসাইকেল ৮টি, ট্রাক ১৩টি, কাভার্ডভ্যান ৮টি, অ্যাম্বুলেন্স একটি, পিকআপ ২টি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ২টি, নছিমন একটি, লেগুনা একটি, ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি একটি, পুলিশের গাড়ি একটি, বিএনপি অফিস ৫টি, আওয়ামী লীগ অফিস একটি, পুলিশ বক্স একটি, কাউন্সিলর অফিস একটি, বিদ্যুৎ অফিস দুটি, বাস কাউন্টার একটি ও দুটি শো-রুম।

ফায়ার সার্ভিস থেকে জানানো হয়েছে, এসময় সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায়। দেশের ২৫টি জেলায় আগুনের ঘটনা ঘটলেও বাকি ৩৯ জেলায় কোনো আগুনের খবর পায়নি ফায়ার সার্ভিস। এসময়ে সিলেট বিভাগেও কোনো আগুনের ঘটনা ঘটেনি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা সিটিতে ৮২টি, ঢাকা বিভাগে ৩৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে ৯টি, বরিশাল বিভাগে ৬টি, রংপুর বিভাগে ৬টি, খুলনা বিভাগে ২টি, ময়মনসিংহ বিভাগে একটি আগুনের ঘটনা ঘটে।

গত ২৮ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা ও সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। সমাবেশ শুরুর আগেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির নেতা–কর্মীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ বিএনপি কর্মীরা কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও জাজেস কমপ্লেক্সে হামলা চালায়। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালেও।

বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। আহত হন শতাধিক। এ সময় সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর ওপরও হামলা করা হয়। ভাংচুর করা হয় গণমাধ্যমের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল।

ওই দিন সন্ধ্যায় রোববার সারা দেশে সকাল–সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। হরতালের মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরে একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা তিনদিন সর্বাত্মক অবরোধ ডাকে বিএনপি। পরে দ্বিতীয় দফায় ৫ থেকে ৬ নভেম্বর, তৃতীয় দফায় ৮ থেকে ৯ নভেম্বর অবরোধের ডাক দেয়।

পরে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দিদের মুক্তির দাবিতে চতুর্থ বারের মতো ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক দেয় দলটি। রোববার (১২ নভেম্বর) ও সোমবার (১৩ নভেম্বর) সারা দেশে এই অবরোধ পালন করা হয়। পরে মঙ্গলবার বিরতি দিয়ে পঞ্চম দফায় বুধবার (১৫ নভেম্বর) থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।

এসব কর্মসূচিতে দলটির কোনো নেতা-কর্মীকে মাঠে দেখা যায়নি। ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার ঘটনায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাইরে যারা আছেন তারাও প্রকাশ্যে আসছেন না।

এদিকে ২৮ অক্টোবরের পর থেকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়টিও তালাবদ্ধ। হরতাল–অবরোধের কর্মসূচিগুলো আসছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে।

নিউজটি শেয়ার করুন

অবরোধে পুড়েছে ৯৪টি বাস, বাদ যায়নি অ্যাম্বুলেন্সও

আপডেট সময় : ০৮:১৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপির ডাকা হরতাল-অবরোধ চলাকালীন সারা দেশে ১৫৪টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দিনে গড়ে ৫টি করে বাস পোড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে মোট ১৫৪টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে  ‘২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর ১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১৩টি, ৭ নভেম্বর ২টি, ৮ নভেম্বর ৯টি, ৯ নভেম্বর ৭টি, ১০ নভেম্বর ২টি, ১১ নভেম্বর ৭টি, ১২ নভেম্বর ৭টি, ১৩ নভেম্বর ৭টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।’

এ সময় সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা সিটিতে। তবে সিলেট বিভাগে কোনো আগুনের ঘটনা ঘটেনি। সবচেয়ে বেশি আগুন দেওয়া হয়েছে যাত্রীবাহী বাসে। আগুন থেকে বাদ যায়নি অ্যাম্বুলেন্সও।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, এসব আগুনের বেশিরভাগই হয়েছে রাতে। এসব ঘটনায় সারা দেশে ঘটেছে হতাহতের ঘটনাও।

এসব আগুনের ঘটনায় পুড়েছে ৯৪টি যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস ৩টি, প্রাইভেটকার ২টি, মোটরসাইকেল ৮টি, ট্রাক ১৩টি, কাভার্ডভ্যান ৮টি, অ্যাম্বুলেন্স একটি, পিকআপ ২টি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ২টি, নছিমন একটি, লেগুনা একটি, ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি একটি, পুলিশের গাড়ি একটি, বিএনপি অফিস ৫টি, আওয়ামী লীগ অফিস একটি, পুলিশ বক্স একটি, কাউন্সিলর অফিস একটি, বিদ্যুৎ অফিস দুটি, বাস কাউন্টার একটি ও দুটি শো-রুম।

ফায়ার সার্ভিস থেকে জানানো হয়েছে, এসময় সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায়। দেশের ২৫টি জেলায় আগুনের ঘটনা ঘটলেও বাকি ৩৯ জেলায় কোনো আগুনের খবর পায়নি ফায়ার সার্ভিস। এসময়ে সিলেট বিভাগেও কোনো আগুনের ঘটনা ঘটেনি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা সিটিতে ৮২টি, ঢাকা বিভাগে ৩৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে ৯টি, বরিশাল বিভাগে ৬টি, রংপুর বিভাগে ৬টি, খুলনা বিভাগে ২টি, ময়মনসিংহ বিভাগে একটি আগুনের ঘটনা ঘটে।

গত ২৮ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা ও সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। সমাবেশ শুরুর আগেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির নেতা–কর্মীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ বিএনপি কর্মীরা কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও জাজেস কমপ্লেক্সে হামলা চালায়। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালেও।

বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। আহত হন শতাধিক। এ সময় সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর ওপরও হামলা করা হয়। ভাংচুর করা হয় গণমাধ্যমের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল।

ওই দিন সন্ধ্যায় রোববার সারা দেশে সকাল–সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। হরতালের মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরে একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা তিনদিন সর্বাত্মক অবরোধ ডাকে বিএনপি। পরে দ্বিতীয় দফায় ৫ থেকে ৬ নভেম্বর, তৃতীয় দফায় ৮ থেকে ৯ নভেম্বর অবরোধের ডাক দেয়।

পরে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দিদের মুক্তির দাবিতে চতুর্থ বারের মতো ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক দেয় দলটি। রোববার (১২ নভেম্বর) ও সোমবার (১৩ নভেম্বর) সারা দেশে এই অবরোধ পালন করা হয়। পরে মঙ্গলবার বিরতি দিয়ে পঞ্চম দফায় বুধবার (১৫ নভেম্বর) থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।

এসব কর্মসূচিতে দলটির কোনো নেতা-কর্মীকে মাঠে দেখা যায়নি। ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার ঘটনায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাইরে যারা আছেন তারাও প্রকাশ্যে আসছেন না।

এদিকে ২৮ অক্টোবরের পর থেকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়টিও তালাবদ্ধ। হরতাল–অবরোধের কর্মসূচিগুলো আসছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে।