জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৫:০৫:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪২৯ বার পড়া হয়েছে
২০২২ সালে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখায় ২৭ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এ বছর আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন প্রয়াত অভিনেতা কামরুল আলম খান খসরু ও অভিনেত্রী রওশন আরা রোজিনা। মঞ্চে খসরুর পক্ষ থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পদক ও ক্রেস্ট গ্রহণ করেছেন অভিনেতা আলমগীর। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক ও ক্রেস্ট নিয়েছেন (রওশন আর রোজিনা) রোজিনা।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার যুগ্মভাবে পেয়েছে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ও ‘পরাণ’। প্রধান চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন সুচিন্ত্য চৌধুরী (চঞ্চল চৌধুরী)। ‘হাওয়া’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন।
আর প্রধান চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন জয়া আহসান ও রিকিতা নন্দিনী শিমু। যথাক্রমে ‘বিউটি সার্কাস’ ও ‘শিমু’ সিনেমার জন্য তারা এ পুরস্কার পেয়েছেন।
শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন। ‘শিমু’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি এ পুরস্কারটি পেয়েছেন। এছাড়া পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন খান, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হয়েছেন আফসানা করিম (আফসানা মিমি)। ‘পরাণ’ ও ‘পাপ-পুণ্য’র জন্য তারা এ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে এস. এম. কামরুল আহসানের ‘ঘরে ফেরা’। আর শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র হয়েছে ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়ার ‘বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’।
খল চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন সুভাশিষ ভৌমিক, ‘দেশান্তর’ সিনেমার জন্য। আর শ্রেষ্ঠ কৌতুক চরিত্রে পুরস্কার পেয়েছেন সাইফুল ইমাম (দিপু ইমাম), ‘অপারেশন সুন্দরবন’ চলচ্চিত্রের জন্য।
যুগ্মভাবে শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী হয়েছে যথাক্রমে ‘রোহিঙ্গা’ ও ‘বীরত্ব’ সিনেমার জন্য বৃষ্টি আক্তার ও মুনতাহা এমিলিয়া। শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক মাহমুদুল ইসলাশ খান (রিপন খান), ‘পায়ের ছাপ’ চলচ্চিত্রের জন্য। শ্রেষ্ঠ গায়ক শুভাশীষ মজুমদার বাপ্পা (বাপ্পা মজুমদার)। ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এ ‘এ মন ভিজে যায়…’ গানের জন্য তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। শ্রেষ্ঠ গায়িকা হয়েছেন আতিয়া আক্তার আনিসা। শ্রেষ্ঠ গীতিকার রবিউল ইসলাম জীবন ও শ্রেষ্ঠ সুরকার শওকত আলী ইমন।
এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছেন- শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার ফারজিনা আক্তার ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’, শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার যুগ্নভাবে ফরিদুর রেজা সাগর ‘দামাল’ ও খোরশেদ আলম খসরু ‘গলুই’, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার মুহাম্মদ আবদুল কাইউম ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’, শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা এস এ হক অলীক ‘গলুই’, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক আসাদুজ্জামান মজনু ‘রোহিঙ্গা’, ‘শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক রিপন নাথ ‘হাওয়া’, শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান খোকন মোল্লা ‘অপারেশন সুন্দরবন’, শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জায় তানসিনা শাওন ‘শিমু’, শ্রেষ্ঠ সম্পাদক সুজন মাহমুদ ‘শিমু’, শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক হিমাদ্রি বড়ুয়া ‘রোহিঙ্গা’।
পুরস্কার হিসেবে নির্বাচিত সবাইকে দেওয়া হয়েছে ১৮ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের সোনা দিয়ে তৈরি একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও এককালীন সম্মানী ও সম্মাননাপত্র। আজীবন সম্মাননার জন্য ৩ লাখ, শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালকের জন্য ২ লাখ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দেওয়া হয় ১ লাখ টাকা করে।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবির খন্দকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন রেদওয়ান সাঈদুল হাসান ও শামীম খান। তারকাদের মধ্যে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডলি জহুর, আলমগীর, সুবর্ণা মুস্তাফা, মমতাজ, রিয়াজ আহমেদ, আরিফিন শুভ, খোরশেদ আলম খসরু, শাহীন সুমন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২ বিজয়ীদের নাম ঘোষিত হয়। এ বছর ২৭টি বিভাগে ৩১ জনকে দেওয়া হয় এ পুরস্কার।
একনজরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২
আজীবন সম্মাননা: খসরু ও রোজিনা
অভিনেতা: চঞ্চল চৌধুরী
অভিনেত্রী: জয়া আহসান ও রিকিতা নন্দীনী শিমু
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ঘরে ফেরা
প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পার্শ্ব অভিনেতা: নাসির উদ্দিন খান (পরাণ)
পার্শ্ব অভিনেত্রী: আফসানা মিমি (পাপ পুণ্য)
কৌতুক চরিত্রে: দিপু ইমাম (অপারেশন সুন্দরবন)
শিশুশিল্পী: বৃষ্টি আক্তার (রোহিঙ্গা) ও মুনতাহা এমিলিয়া (বীরত্ব)
সংগীত: রিপন খান (পায়ের ছাপ)
গায়ক: বাপ্পা মজুমদার (অপারেশন সুন্দরবন) ও চন্দন সিনহা (হৃদিতা)
গায়িকা: আতিয়া আনিসা (পায়ের ছাপ)
গীতিকার: রবিউল ইসলাম জীবন (পরাণ)
সুরকার: শওকত আলী ইমন (পায়ের ছাপ)
কাহিনিকার: ফরিদুর রেজা সাগর (দামাল) ও খোরশেদ আলম (গলুই)
চিত্রনাট্যকার: মুহাম্মদ আব্দুল কাইউম (কুড়া পক্ষীর শূণ্যে উড়া)
সংলাপ: রচয়িতা এস এ হক অলিক (গলুই)
সম্পাদক: সুজন মাহমুদ (শিমু)
শিল্প নির্দেশক: হিমাদ্রি বড়ুয়া (রোহিঙ্গা)
চিত্রগ্রাহক: আসাদুজ্জামান (রোহিঙ্গা)
শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (হাওয়া)
পোশাক ও সাজ-সজ্জা: তানসিনা শাওন (শিমু)
মেকআপম্যান: খোকন মোল্লা (অপারেশন সুন্দরবন)