বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৪ নভেম্বর (১৮ দিন) পর্যন্ত ঢাকার ৫০টি থানায় মোট ১৫৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এক হাজার ৯৬৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনসের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন এসব তথ্য জানান।
ফারুক হোসেন জানান, রাজধানীতে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক হাজার ৯৬৫ জনকে। গতকাল ১৪ নভেম্বর একদিনে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৪৩ জন। এছাড়া ১৮ দিনে রাজধানীর ৫০ থানায় সহিংসতার ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৫৩টি।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর ১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১৩টি, ৭ নভেম্বর ২টি, ৮ নভেম্বর ৯টি, ৯ নভেম্বর ৭টি, ১০ নভেম্বর ২টি, ১১ নভেম্বর ৭টি, ১২ নভেম্বর ৭টি, ১৩ নভেম্বর ৭টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।’
পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ‘উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক দিনের বেলা থেকে রাতে (সন্ধ্যা ৬টা-সকাল ৬টা) অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটেছে। ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত দিনে ৬১টি ও রাতে ৯৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ‘উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক’ অগ্নিকাণ্ডে মোট ৯৪টি বাস, ৩টি মাইক্রোবাস, ২টি প্রাইভেটকার, ৮টি মোটরসাইকেল, ১৩টি ট্রাক, ৮টি কাভার্ড ভ্যান, ১টি অ্যাম্বুলেন্স, ২টি পিকআপ, ২টি সিএনজি, ১টি নছিমন, ১টি লেগুনা, ফায়ার সার্ভিস এর পানিবাহী গাড়ি ১টি, পুলিশের গাড়ি ১টি, বিএনপি অফিস ৫টি, আওয়ামী লীগ অফিস ১টি, পুলিশ বক্স ১টি, কাউন্সিলর অফিস ১টি, বিদ্যুৎ অফিস ২টি, বাস কাউন্টার ১টি, শোরুম ২টি পুড়ে যায়। এতে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গড়ে দিনে ৫টি করে বাস পোড়ানো হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায়। এ ছাড়া দেশের ২৫টি জেলায় আগুনের ঘটনা ঘটে। বাকি ৩৯ জেলায় কোনো অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ ফায়ার সার্ভিস পায়নি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ‘ঢাকা সিটিতে ৮২টি, ঢাকা বিভাগে ৩৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে ৯টি, বরিশাল বিভাগে ৬টি, রংপুর বিভাগে ৬টি, খুলনা বিভাগে ২টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ১টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তবে সিলেট বিভাগে উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পায়নি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।’
এদিকে জেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ‘গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এ জেলায় ১৫টি, চট্টগ্রামে ৮টি, নারায়ণগঞ্জে ৬টি, বগুড়ায় ৫টি, মানিকগঞ্জে ৪টি, ফরিদপুরে ৪টি, লালমনিরহাটে ৪টি করে আগুনের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।
পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে আরও দেখা যায়, ‘ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক অগ্নি নির্বাপণ কার্যক্রমে সারাদেশে ৫ জন (ফায়ার সার্ভিসের ২ জন ও সাধারণ ৩ জন) আহত উদ্ধার করা হয়। নিহতের ঘটনা ঘটেনি। আহত ৫ জনের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের একজন অফিসার ও ড্রাইভার আহত রয়েছেন। ২৮ অক্টোবর রাজধানীর শাহজাহানপুরে অগ্নি নির্বাপণ করার সময় উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক তারা মারধরের শিকার হন। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের একটি পানিবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়।’