ঢাকা ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০১:০৩:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ১২টা থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এটি দেশের ১১টি উপকূলীয় অঞ্চলের ১১টি জেলায় আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টার মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘মিধিলি’।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ১১টি জেলায় এই ঘূর্ণিঝড়টির আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম।

তিনি বলেন, এটি এখন মোংলা ও পায়রা বন্দর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এর এগিয়ে যাওয়ার গতি বিশ্লেষণ করলে বলা যেতে পারে, ঘূর্ণিঝড় হিসেবে এটি আগামীকাল দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানবে।

তিনি জানান, যেহেতু এখন পূর্ণিমা নেই এবং বাতাসের গতিবেগও কম, সেজন্য জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কাও অনেক কম। আবহাওয়া দপ্তর থেকে বিপৎসংকেত দেওয়া হবে। সেটা সাত মাত্রায় উঠলেই যেন দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেব, তারা যেন আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখেন।

আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার ও নিরাপদ খাবার পানি ব্যবস্থা রাখতেও নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, হামুন ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রতিটি জেলায় নগদ টাকা, শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য ও গোখাদ্যের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আশা করছি, সেই অর্থ ব্যবহার করে আরও কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের জানালে ব্যবস্থা করে দেব।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, এমন আশঙ্কায় সাতক্ষীরায় প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপকূলীয় দুটি উপজেলায় সকল আশ্রয়কেন্দ্র।

জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহম্মাদ হুমায়ুন কবির।

এ সময় তিনি জানান, যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির সকল আশ্রয়কেন্দ্রগুলোসহ সিপিপি ভলেন্টিয়ারদের। জনস্বাস্থ্য অধিদফতরকে সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, ত্রানের চাউল ও নগদ টাকাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

এ সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রাণালয় সাতক্ষীরার উপপরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহি প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন, সিভিল সার্জন প্রতিনিধি ডা. ফরহাদ জামিল, সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকবৃন্দ।

এদিকে, নিম্নচাপের প্রভাপে সাতক্ষীরায় দুপুর থেকে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি দেড় থেকে ২ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন উপকূলবাসী। ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভাঙন আতংকে রয়েছেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে

আপডেট সময় : ০১:০৩:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ১২টা থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এটি দেশের ১১টি উপকূলীয় অঞ্চলের ১১টি জেলায় আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টার মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘মিধিলি’।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ১১টি জেলায় এই ঘূর্ণিঝড়টির আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম।

তিনি বলেন, এটি এখন মোংলা ও পায়রা বন্দর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এর এগিয়ে যাওয়ার গতি বিশ্লেষণ করলে বলা যেতে পারে, ঘূর্ণিঝড় হিসেবে এটি আগামীকাল দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানবে।

তিনি জানান, যেহেতু এখন পূর্ণিমা নেই এবং বাতাসের গতিবেগও কম, সেজন্য জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কাও অনেক কম। আবহাওয়া দপ্তর থেকে বিপৎসংকেত দেওয়া হবে। সেটা সাত মাত্রায় উঠলেই যেন দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেব, তারা যেন আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখেন।

আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার ও নিরাপদ খাবার পানি ব্যবস্থা রাখতেও নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, হামুন ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রতিটি জেলায় নগদ টাকা, শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য ও গোখাদ্যের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আশা করছি, সেই অর্থ ব্যবহার করে আরও কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের জানালে ব্যবস্থা করে দেব।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, এমন আশঙ্কায় সাতক্ষীরায় প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপকূলীয় দুটি উপজেলায় সকল আশ্রয়কেন্দ্র।

জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহম্মাদ হুমায়ুন কবির।

এ সময় তিনি জানান, যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির সকল আশ্রয়কেন্দ্রগুলোসহ সিপিপি ভলেন্টিয়ারদের। জনস্বাস্থ্য অধিদফতরকে সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, ত্রানের চাউল ও নগদ টাকাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

এ সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রাণালয় সাতক্ষীরার উপপরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহি প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন, সিভিল সার্জন প্রতিনিধি ডা. ফরহাদ জামিল, সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকবৃন্দ।

এদিকে, নিম্নচাপের প্রভাপে সাতক্ষীরায় দুপুর থেকে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি দেড় থেকে ২ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন উপকূলবাসী। ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভাঙন আতংকে রয়েছেন তারা।