আগামী রোববার (১৯ নভেম্বর) থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাহারের দাবিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
একই সময় দলের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষকে হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ঘোষণা করছি। এ সময় তিনি দেশব্যাপী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানান।
এর আগে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। আর লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (বীর বিক্রম)ও হরতাল পালনের আহ্বান জানান।
সেই সঙ্গে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে একতরফা অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান করে হরতাল ডেকেছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের ১১টি দল।
এর আগে তফসিল বাতিলের দাবিতে একই সময়ে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। গণতন্ত্র মঞ্চও দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি জানান, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ভাষণে সিইসি জানান, সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১-৪ ডিসেম্বর। আপিল ৬-১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। আর নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি ২০২৪ সকাল ৮টা পর্যন্ত।
তফসিল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি বলেছে, নির্বাচন কমিশন আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে দেশকে গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এছাড়া তফসিল প্রত্যাখ্যান করে রাতেই রাজধানীতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা।
এর আগে গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, হত্যা ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ২৯ অক্টোবর হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের শরিকরা।
তারপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায়, ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায়, ১১ ও ১২ নভেম্বর চতুর্থ দফায় অবরোধ পালন করা হয়। ১৫ নভেম্বর (বুধবার) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় পঞ্চম দফায় অবরোধ। শুক্রবার সকাল ৬টায় শেষ হবে এ কর্মসূচি।