ঘূর্ণিঝড়ে ৭ জনের মৃত্যু, ট্রলারডুবিতে ৮ জন নিখোঁজ
- আপডেট সময় : ০৮:০৭:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪৩৬ বার পড়া হয়েছে
বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করে ভারতের ত্রিপুরায় চলে গেছে। এটি শুক্রবার পটুয়াখালী হয়ে বাংলাদেশের উপকূলের স্থলভাগে প্রবেশ করে। যা বৃষ্টি ঝরিয়ে দেশের স্থলভাগেই আরও দুর্বল হয় বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে, কক্সবাজারে ভারী বর্ষণে দেয়াল ধসে মা-মেয়েসহ একই পরিবারের চার জন মারা গেছেন। এছাড়া গাছ চাপা পড়ে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে, মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে ও টাঙ্গাইলে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কবলে পড়ে মায়ের দোয়া নামের একটি ট্রালারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ট্রলারে থাকা ১২ জেলের ৮ জন জেলে নিখোঁজ হয়েছেন। ৪ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ট্রলারডুবির বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে মায়ের দোয়া নামের একটি ট্রলারে ১২ জন জেলে মাছ শিকার করতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এসময় ৪ জন জেলেকে ভাসমান অবস্থায় অন্য আরেকটি মাছধরা ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করে পটুয়াখালীর মহিপুরে নিয়ে যায়। বাকি ৮ জেলের এখনও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাদের মধ্যে নিখোঁজ এক জেলের নাম জানা গেছে। তিনি হলেন, পাথরঘাটা উপজেলার বড় টেংরা এলাকার জেলে আবুল কালাম কালু। এবং বাকি জেলেদের বাড়ি বরগুনার বিভিন্ন এলাকায়।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় চলে যাওয়ার পর রাতেই চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য উঠা নামা শুরু হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে একটি লাইটার জাহাজ পতেঙ্গা এলাকায় তীরে আটকা পড়েছে।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি শুক্রবার দুপুরের দিকে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। বিকেল নাগাদ তা উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে। এসময় দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়টি নিম্নচাপে পরিণত হয়।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এটি স্থলভাগের আরও উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে দেশের স্থলভাগেই আরও দুর্বল হয়ে রাতেই ত্রিপুরায় চলে যায়।
বাতাসের গতিবেগ কম হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় মিধিলি উপকূল অতিক্রম করার সময় তেমন ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
নিম্নচাপের প্রভাবে ঢাকা, খুলনা বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রেখেছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ।
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ভাটির সময় স্থলভাগ অতিক্রম করায় ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে। তারপরও উপকূলীয় এলাকার গাছপালা ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক। উপকূলীয় অনেক এলাকার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও পানির চাপ কম থাকায় ক্ষতি হয়নি। বাতাসের কারণে মোংলার পশুর নদীতে ডুবে গেছে কয়লা বোঝাই লাইটার জাহাজ। তবে, সাঁতরে কুলে উঠেছে জাহাজে থাকা ১১জন।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মৌলভী বাজারের মরিচ্যাঘোনা এলাকায় রাতভর ভারী বর্ষণে বসতবাড়ির মাটির দেয়াল ধসে একই পরিবারের মা-মেয়েসহ ৪ জন মারা গেছেন। এছাড়া গাছ চাপা পড়ে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে ও টাঙ্গাইলে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, ত্রাণের চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দের কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।