প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে-অগ্নিসন্ত্রাস করবে, তাদের পরিণতি ভালো হবে না। জনগণই এই সন্ত্রাদসীদের প্রতিহত করবে বলে জানান তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির উদ্বোধন করেন এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার (১৮ই নভেম্বর) সকাল দশটায় এই মনোনয়ন এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না তারাই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে, অগ্নিসন্ত্রাস করছে। নির্বাচন বানচালের এই চক্রান্ত ও অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধ করতে জনগণের প্রতি আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নি সন্ত্রাস করে, দেশের সম্পদ নষ্ট করে, ধ্বংসাতœক কাজ করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা কোন ধরনের রাজনীতি হতে পারে না।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ থেকে আমরা মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা দেওয়া শুরু করেছি। যারা প্রার্থী (হতে চান), মনোনয়ন ফরম কিনবেন। আমাদের মনোনয়ন বোর্ডে যাচাই বাছাই করে একজনকে মনোনয়ন দেবো। যোগ্য প্রার্থী অনেক, কিন্তু একজনকেই বেছে নিতে হবে। তৃণমূলসহ আমরা সবার মতামতের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেবো। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মনোনীত প্রার্থীকে জেতাতে কাজ করবে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এমন একটি সংগঠন, যে সংগঠনের জন্ম হয়েছিল দুঃখী মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে। শোষিত-বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য, ১৯৪৯ সালে এই সংগঠনের জন্ম। জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ তার গঠনতন্ত্র মেনে চলে, দেশের সংবিধান মেনে চলে, প্রতিটি কাজ অত্যন্ত সুচারুভাবে করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ যারা পার্টি থেকে প্রার্থী হবেন তারা এখান থেকে ফরম সংগ্রহ করবেন। তাদের জন্য আমরা আট বিভাগের দশটি বুথ তৈরি করে দিয়েছি। জাতীয় সংসদ সদস্যদের যে নম্বর থাকে বা সিরিয়াল থাকে, সেই সিরিয়াল অনুযায়ী ফরমগুলো সাজানো হবে। এভাবে প্রসেস করে মনোনয়ন বোর্ডে সেগুলো উপস্থাপন করা হবে। সংসদীয় বোর্ডের মাধ্যমে প্রার্থীর যোগ্যতা দেখে, তাদের জনপ্রিয়তা দেখে, তাদের কার্যক্রম বিবেচনা করে আমরা মনোনয়ন দিয়ে থাকি। আওয়ামী লীগ সব সময় সুসংগঠিতভাবে কাজ করে থাকে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালে আমরা দেখেছি নির্বাচন ঠেকানোর নামে বহু মানুষকে অগ্নিসন্ত্রাস করে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এটা কোন ধরনের রাজনীতি? আমরা চাই জনগণের ভোটের অধিকার অব্যাহত থাকবে। ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যা করার পর আমরা দেখেছি রাতের অন্ধকারে বন্দুক নিয়ে ক্ষমতা দখলের পালা চলছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, বৈধতা দেওয়ার জন্য জনগণের ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি, আমাদের বহু নেতা কর্মী জীবন দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে। কিন্তু আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে।’
দলের সভাপতি শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় কার্যালয় বের হয়ে যাওয়ার পর থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। টানা চারদিন অনলাইনে ও সরসরি কার্যালয় থেকে দলটির মনোনয়ন ফরম কেনা ও জমা দেওয়া যাবে।