২৪ দিনে ১৯৭ যানবাহন–স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ
- আপডেট সময় : ১১:২৮:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪৫০ বার পড়া হয়েছে
বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধ পালনকালে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ২৪ দিনে মোট ১৯৭টি যানবাহন ও স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া যানবাহনের মধ্যে অধিকাংশই বাস। গত ২৪ দিনে প্রতিদিন গড়ে ৭টি করে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, যার গড়ে ৫টি করে বাস। অগ্নিসংযোগের ঘটনা বেশি ঘটেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়। এর মধ্য মিরপুরে বেশি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী গত ২৮শে অক্টোবর থেকে ২০শে নভেম্বর পর্যন্ত দেওয়া আগুনে মোট ১৮৫টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনা পুড়েছে। যানবাহনের মধ্যে বাস ১১৮টি, ট্রাক ২৬টি, কাভার্ড ভ্যান ১৩টি, মোটরসাইকেল আটটি, প্রাইভেটকার দুটি, মাইক্রোবাস তিনটি, পিকআপ তিনটি, সিএনজিচালিত অটোরিকশ তিনটি, ট্রেন দুটি, নছিমন একটি, লেগুনা তিনটি, ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি একটি, পুলিশের গাড়ি একটি, অ্যাম্বুলেন্স একটি। এছাড়া বিএনপির দলীয় কার্যালয় পাঁচটি, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় একটি, পুলিশ বক্স একটি, কাউন্সিলর অফিস একটি, বিদ্যুৎ অফিস দুটি, বাস কাউন্টার একটি এবং ২টি শোরুমসহ আরও দুটি স্থাপনা পুড়েছে।
এসব ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৪১টি ইউনিট ও এক হাজার ৮৮৮ জন কর্মী কাজ করেছেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা তালহা বিন জসীম জানান, সারাদেশের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মধ্যে মিরপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এই সময়ে সবমিলিয়ে মোট ৩৪ জেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বাকি ৩০টি জেলায় আগুনের ঘটনা ঘটেনি।
আর উপজেলার হিসাবে দেশের ৬০টি উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বাকি ৪৩৫টি উপজেলায় কোনও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেনি। জেলা হিসেবে গাজীপুরে, উপজেলা হিসেবে বগুড়া সদরে আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি।
ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা সিটিতে ৯৫টি, ঢাকা বিভাগে ৩৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২২টি, রাজশাহী বিভাগে ২৪টি, বরিশাল বিভাগে সাতটি, রংপুর বিভাগে সাতটি, খুলনা বিভাগে দু’টি, ময়মনসিংহ বিভাগে দু’টি এবং সিলেট বিভাগে একটি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬০টি, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৫টি অগ্নিসসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এলাকাভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মিরপুরে এলাকায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। মিরপুর এলাকায় ১৭টি, গুলিস্তানে ৯টি, নয়াপল্টন-কাকরাইল এলাকায় সাতটি, খিলগাঁও-মুগদা এলাকায় সাতটি, পোস্তাগোলা-যাত্রাবাড়ী এলাকায় সাতটি, মতিঝিল-আরামবাগ এলাকায় পাঁচটি, মোহাম্মদ চারটি ও বারিধারা চারটি করে আগুনের ঘটনা ঘটে।
এদিকে জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। গাজীপুরে ১৬টি, চট্টগ্রামে ১৪টি, বগুড়া ১৩টি, নারায়ণগঞ্জ ছয়টি, মানিকগঞ্জ চারটি, ফরিদপুর চারটি, লালমনিরহাট চারটি ও নাটোর চারটি করে আগুনের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।
এছাড়া উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বগুড়া সদর উপজেলায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। বগুড়া সদরে আটটি, গাজীপুর সদরে ছয়টি, নারায়ণগঞ্জ সদরে চারটি, ফেনী সদরে তিনটি এবং কালিয়াকৈর উপজেলায় চারটি করে আগুনের ঘটনা ঘটে।
অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রমে সারা দেশে ফায়ার সার্ভিসের দুই কর্মী ও তিন জন সাধারণ মানুষকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে এসব অগ্নিকাণ্ডে নিহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলেও জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।