ঢাকা ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতার ঘটনা ক্ষমতাসীনরাই ঘটাচ্ছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪২৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সারা দেশে ‘অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতা’র ঘটনা ক্ষমতাসীনরাই ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগে করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, বুধবার (২২ নভেম্বর) ভোর থেকে ডাকা ৪৮ ঘন্টার র্সবাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালনে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জনগণের ভোটের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্যই এ আন্দোলন দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপি ন্যায়ের ও কল্যাণের পথে আছে। এই কর্মসূচি আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ।

রিজভী বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে ভীতির রাজত্ব কায়েমের অশুভ উদ্দেশ্যে প্রতিদিন নৈরাজ্যে লিপ্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতকারী কর্মীরা। তারা গণপরিবহণে অব্যাহতভাবে অগ্নিসংযোগ করছে আর নিরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জ্বালাও-পোড়াও করে অপরাধীরা খুব সহজেই ঘটনাস্থল থেকে শটকে পড়ছে। অথচ প্রত্যক্ষদর্শৗদের মতে অধিকাংশ ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বা বড় পুলিশ চেকপোস্টের কাছাকাছি ঘটছে।

নাশকতার উদাহরণ তুলে ধরে রিজভী বলেন, গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের চাতরি চৌমুহনী বাজারে পুলিশ বক্সের কাছে, ৩১ অক্টোবর ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছে, বাংলামোটর মোড়ে, ২৮ অক্টোবর কাকরাইলের কাছে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা এবং ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে একটি ট্রাকের আগুন দেওয়ার ঘটনায় ফেনীর স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল উদ্দিন টিপুকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার ও ১৪ নভেম্বর নাটোরের তাশরীক জামান রিফাত নামে আওয়ামী লীগকর্মীকে মুখোশসহ গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন রিজভী।

প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, দেশের সর্বত্র পুলিশ বা র‌্যাবের শত শত পেট্রোল টিম এবং বিজিবির শত শত প্লাটুন অস্ত্রসজ্জিত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র সহযোগে পুলিশের পূর্ণাঙ্গ সুসংহত টহল। বাংলাদেশ যেন পরিণত হয়েছে এক যুদ্ধক্ষেত্রে।

রিজভী বলেন, এই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও বিরোধী দলের সদস্য কোনো প্রকার সহিংসতা বা অগ্নিসংযোগে কাজে লিপ্ত হবে এই দাবি সর্বত্রই হাস্যকর। বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল উপস্থিতির উদ্দেশ্য হয়তো আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যেন তারা নিশ্চিন্তে যানবাহনে আগুন দিতে পারে, জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় নৈরাজ্যের প্রেক্ষাপট তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৪৭৫ জনের বেশি বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এবং বিভিন্ন মামলায় এক হাজার ৭২০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

৪৮ ঘণ্টার অবরোধ সফল করার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, আমাদের আগামীকাল বুধবার ভোর ৬টা থেকে যে অবরোধ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে সেই কর্মসূচিতে দেশের জনগণ, দলের নেতাকর্মী, সমমনা জোট ও দলের সকল নেতাকর্মীরা অবরোধ কর্মসূচিকে স্বার্থক করবেন, সাফল্যমণ্ডিত করবেন। এই অবরোধ কর্মসূচি আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ। আমরা সত্যের পথে আছি, আমরা ন্যায়ের পথে আছি, আমরা মানুষের কল্যাণের পথে আছি, আমরা গণতান্ত্রিক দর্শনের পক্ষে আছি।

সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপি বুধবার ভোর ৬টা থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। গত ২৮ অক্টোবরে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেওয়ার পর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিএনপি হরতাল-অবরোধের মতো টানা কর্মসূচি করে যাচ্ছে। গত রোববার থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের পর একদিন বিরতি দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতার ঘটনা ক্ষমতাসীনরাই ঘটাচ্ছে : রিজভী

আপডেট সময় : ০৫:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

সারা দেশে ‘অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতা’র ঘটনা ক্ষমতাসীনরাই ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগে করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, বুধবার (২২ নভেম্বর) ভোর থেকে ডাকা ৪৮ ঘন্টার র্সবাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালনে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জনগণের ভোটের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্যই এ আন্দোলন দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপি ন্যায়ের ও কল্যাণের পথে আছে। এই কর্মসূচি আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ।

রিজভী বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে ভীতির রাজত্ব কায়েমের অশুভ উদ্দেশ্যে প্রতিদিন নৈরাজ্যে লিপ্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতকারী কর্মীরা। তারা গণপরিবহণে অব্যাহতভাবে অগ্নিসংযোগ করছে আর নিরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জ্বালাও-পোড়াও করে অপরাধীরা খুব সহজেই ঘটনাস্থল থেকে শটকে পড়ছে। অথচ প্রত্যক্ষদর্শৗদের মতে অধিকাংশ ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বা বড় পুলিশ চেকপোস্টের কাছাকাছি ঘটছে।

নাশকতার উদাহরণ তুলে ধরে রিজভী বলেন, গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের চাতরি চৌমুহনী বাজারে পুলিশ বক্সের কাছে, ৩১ অক্টোবর ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছে, বাংলামোটর মোড়ে, ২৮ অক্টোবর কাকরাইলের কাছে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা এবং ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে একটি ট্রাকের আগুন দেওয়ার ঘটনায় ফেনীর স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল উদ্দিন টিপুকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার ও ১৪ নভেম্বর নাটোরের তাশরীক জামান রিফাত নামে আওয়ামী লীগকর্মীকে মুখোশসহ গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন রিজভী।

প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, দেশের সর্বত্র পুলিশ বা র‌্যাবের শত শত পেট্রোল টিম এবং বিজিবির শত শত প্লাটুন অস্ত্রসজ্জিত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র সহযোগে পুলিশের পূর্ণাঙ্গ সুসংহত টহল। বাংলাদেশ যেন পরিণত হয়েছে এক যুদ্ধক্ষেত্রে।

রিজভী বলেন, এই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও বিরোধী দলের সদস্য কোনো প্রকার সহিংসতা বা অগ্নিসংযোগে কাজে লিপ্ত হবে এই দাবি সর্বত্রই হাস্যকর। বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল উপস্থিতির উদ্দেশ্য হয়তো আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যেন তারা নিশ্চিন্তে যানবাহনে আগুন দিতে পারে, জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় নৈরাজ্যের প্রেক্ষাপট তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৪৭৫ জনের বেশি বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এবং বিভিন্ন মামলায় এক হাজার ৭২০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

৪৮ ঘণ্টার অবরোধ সফল করার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, আমাদের আগামীকাল বুধবার ভোর ৬টা থেকে যে অবরোধ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে সেই কর্মসূচিতে দেশের জনগণ, দলের নেতাকর্মী, সমমনা জোট ও দলের সকল নেতাকর্মীরা অবরোধ কর্মসূচিকে স্বার্থক করবেন, সাফল্যমণ্ডিত করবেন। এই অবরোধ কর্মসূচি আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ। আমরা সত্যের পথে আছি, আমরা ন্যায়ের পথে আছি, আমরা মানুষের কল্যাণের পথে আছি, আমরা গণতান্ত্রিক দর্শনের পক্ষে আছি।

সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপি বুধবার ভোর ৬টা থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। গত ২৮ অক্টোবরে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেওয়ার পর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিএনপি হরতাল-অবরোধের মতো টানা কর্মসূচি করে যাচ্ছে। গত রোববার থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের পর একদিন বিরতি দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো।