দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তা আর নিচে নামতে দেওয়া যাবে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংককে সতর্ক করে দিয়েছে পিআরআই। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োচনা সভায় অংশ নেয়া অর্থনীতিবিদরা বলেন, দেশের অর্থনীতি ভালোর দিকে যাচ্ছে না। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকায় জাতীয় নির্বাচনের পর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো হবে, সে নিশ্চয়তা নেই।
গত ৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থা বা আইএমএফের বিপিএম-৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) ম্যাথডের ভিত্তিতে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সেই রিজার্ভ নেমে এসেছে ১৯ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে। যদিও ১৫ দিন আগে অর্থাৎ ১ নভেম্বর এই রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে গত এক সপ্তাহে আইএমএফের বিপিএম-৬ ম্যাথডের ভিত্তিতে রিজার্ভ কমেছে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন (১১৮ কোটি) ডলার। আর একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভ কমেছে ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন (১২৫ কোটি) ডলার।
অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবায়ন পদ্ধতি অনুযায়ী এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ ৮ নভেম্বর রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। আর ১৫ নভেম্বর এটি কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ৭ দিনের ব্যবধানে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।
গত ৬ নভেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের আমদানি বিল বাবদ ১২১ কোটি ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ। এর ফলে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী চলতি বছরের ১৩ জুলাই থেকে বিপিএম-৬ নিয়মে রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী, দেশে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৩৫৬ কোটি) ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার। বুধবার (১৫ নভেম্বর) এটি কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৫২৬ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত ১৫ দিনে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ কমেছে ১১৬ কোটি ডলার। অবশ্য প্রকৃত নেট রিজার্ভ এখন ১৭ বিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের নিচে বলে জানা গেছে। প্রকৃত রিজার্ভের এই তথ্য কেবল আইএমএফকে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ৮৯৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি বা প্রায় ৯০০ কোটি ডলার। তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৪২৩ কোটি ডলার।