উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে শেষ হাসি আর্জেন্টিনার
- আপডেট সময় : ০৬:৩১:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪৪৯ বার পড়া হয়েছে
আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত চলাকালে দুয়ো দিয়ে চাপ বাড়ানোর চেষ্টাও করেছিলেন সেলেসাও সমর্থকরা। তাতে ম্যাচ আধঘণ্টা পরে শুরু হলেও ম্যাচের ভাগ্য বদলায়নি। উল্টো লালকার্ডের সূত্র ধরে ব্রাজিলের উপরেই বেড়েছে চাপ। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হারটাই সঙ্গী ব্রাজিলের।
পুরো ম্যাচে গোল হয়েছে একটিই। ৬৩ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণী গোল করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। তাতেই নির্ধারিত হয় ব্রাজিলের টানা তৃতীয় হার। আর খেলা গড়ানোর আগে দুই পক্ষের মারামারি, এক লালকার্ড ব্রাজিলের ক্ষতটাই কেবল বাড়িয়েছে।
যার ফলে ম্যাচে ৪২টি ফাউলের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ব্রাজিল একাই করেছে ২৬টি। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে লাল কার্ড দেখতে হয়েছে ব্রাজিলের একজন খেলোয়াড়কে। এমন ঘটনা বহুল ম্যাচে শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এতে করে লাতিন অঞ্চলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করে আলবিসেলেস্তেরা।
খেলা শুরুর আগের সংঘাত যে মাঠে বইবে তা অনুমেয় ছিল। মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই যা পরিলক্ষিত হয়। শুরুটা হয় রদ্রিগো ডি পল ও লিওনেল মেসিকে দিয়ে। এরপর বাকিরাও জড়িয়ে পড়েন তাতে। ফুটবল খেলায় যে জয় পরাজয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হয় গোলের ব্যবধানে বিষয়টি বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন উভয় দলের খেলোয়াড়রা। ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে ফাউল ও কার্ডের ছড়াছড়ি চলতে থাকে।
মারাকানায় ঘরের মাঠে ম্যাচের দুই মিনিটের মাথায় আর্জেন্টাইন রক্ষণকে চমকে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন বার্সেলোনা তারকা রাফিনহা। তবে রেফারি অফসাইড পতাকা উঠালে তাকে থামতে হয়। ম্যাচের ৬ মিনিটে বল পেয়ে আর্জেন্টাইন রদ্রিগো ডি পলকে ড্রিবল করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন জেসুস। কিন্তু তার হাত গিয়ে লাগে ডি পলের মুখে। ফলে ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন এ আর্সেনাল তারকা। ম্যাচের ১৩তম মিনিটে আবারও ডি পল ফাউলের শিকার হয়। এবার করেন রাফিনহা, ফলে ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। প্রথম ১৮ মিনিটেই ব্রাজিল ফাউল করে ৮টি।
ম্যাচের ২৬ মিনিটে গিয়ে প্রথমবারের বল পায়ে আক্রমণে উঠেন মেসি। কিন্তু সেখান থেকে গোলের কোনো সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেননি ইন্টার মায়ামি তারকা। ৩৩ মিনিটে অ্যালিসন বেকারের ট্রেডমার্ক পাস থেকে বল পেয়ে এগিয়ে যান মার্তিনেল্লি। কিন্তু আর্জেন্টাইন ডি বক্সের কাছাকাছি এসে বলের নিয়ন্ত্রণ হারান তিনি।
প্রথমার্ধের শেষ মিনিটের আগে মার্তিনেল্লির নেয়া শট মার্টিনেজকে পরাস্ত করলেও গোললাইনের কাছ থেকে বল ক্লিয়ার করেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার। প্রথমার্ধে সব মিলিয়ে ২২টি ফাউল করে দু’দল। যেখানে ব্রাজিলের ১৬টি ফাউলের বিপরীতে আর্জেন্টিনার ছিল ৬টি।
দ্বিতীয়ার্ধেও একাধিকবার আক্রমণে গিয়ে সুযোগ তৈরির চেষ্টা চালায় ব্রাজিল। কিন্তু আলবিসেলেস্তেদের রক্ষণদেয়াল ভাঙতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে মার্তিনেল্লির প্রচেষ্টা মার্টিনেজ দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন। তবে খেলার ধারার বিপরীতে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে এগিয়ে যায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। লো সেলসোর কর্নার থেকে হেড দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন নিকোলাস ওতামেন্দি।
এরপর ম্যাচের ৭৮ মিনিটে ম্যাচে নিজেকে খুঁজে বেড়ানো মেসিকে তুলে নিয়ে ডি মারিয়াকে নামায় আর্জেন্টিনা। ৮১ মিনিটে ব্রাজিলের বিপদ আরও বাড়ে জেয়েলিংটন লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে। শেষ পর্যন্ত সেই এক গোলের লিড নিয়েই মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা। সেই সঙ্গে ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো তাদেরই ঘরে বাছাইপর্বের ম্যাচে জয়ের মুখ দেখে আলবিসেলেস্তেরা।
উল্লেখ্য, ব্রাজিল তাদের ইতিহাসে কখনও বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে হারেনি। কিন্তু এবার সেই হারের স্বাদ দিল আর্জেন্টিনা। টানা ৬৪ ম্যাচ পর ৬৫তম ম্যাচে এসে হারল ব্রাজিল।