অর্থ সংকটে গত চার মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপির বাস্তবায়ন গত আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। এরপর নির্বাচনের বছরে অনুমোদন পেয়েছে আরও ২৫০ প্রকল্প। যা বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৫০৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গুরুত্ব বিবেচনায় কেবল প্রথম সারির প্রকল্পই পাবে বরাদ্দের পুরো অর্থ, সেখানেও নিতে হবে অনুমতি। আর দেখে শুনে খরচের পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
গত কয়েকবছর ধরে দেশের উন্নয়নের গতি বেশিরভাগই দৃশ্যমান অবকাঠোমো নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে। এর ফলে ব্যয় বাড়ে হিসাবের খাতায় সমৃদ্ধ হয় সরকারের সাফল্যের ঝুড়িও। তাই নির্বাচনের বছরে সব সরকারেরই নজর থাকে বাড়তি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনে।
গত ১০ মাসে অনুষ্ঠিত হয় একনেকের ১৪টি সভা। যেখানে অনুমোদন পায় ২৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্প। যাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৫০৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। যার মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ১২৭ কোটি টাকার যোগান দেবে সরকার। বাকিটা আসবে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ থেকে। এই তালিকায় রয়েছে সরকারি দপ্তরের ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, সড়ক, সেতু নির্মাণের মতো প্রকল্প। যা বাস্তবায়নও হবে দেশের কেন্দ্র থেকে প্রান্তের পুরো এলাকা জুড়েই।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, নির্বাচনী আইনে বলা হয়েছে তিন মাস কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করা যাবে না। আমাদের নিয়ম-কানুন মেনে চলতেই হবে। এরপর কাগজপত্র প্রস্তুত করে কাজ শুরু করতেও আরও দুই থেকে তিন মাস লাগবে। প্রকল্পের কাজ বন্ধ হলেও আয়ের কাজ বন্ধ হয়নি। এ সময়ের মধ্যে বাজেটের টাকা আসতে থাকবে।
চলতি অর্থবছরে এডিপিতে বরাদ্দ ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে সরকারের যোগান দিতে হবে ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গেল চারমাসে এডিপি বাস্তবায়নের যে হার, তা গেল ৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। যার কারণ হিসেবে আর্থিক সংকটকেই দুষছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিপিডি সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকারের ডলারের সংকটের পাশাপাশি টাকার সংকটও রয়েছে। সেদিক থেকে আমাদের প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই ও অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অর্থনীতির জন্য মেকা প্রকল্প ইত্যাদি নিতে হয়েছিল। কিন্তু এখন সময় হয়েছে অর্থনৈতিক যে সামষ্টিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মধ্যে পরেছে সেটাকে আগে সামাল দেওয়া।
গত অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৮৪ শতাংশ। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ কম। আর চলতি অর্থবছরেও শতভাগ অর্থ ছাড়ের গুরুত্ব রয়েছে কেবল প্রথম সারির প্রকল্পেই।