গাজায় অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি আজ শেষ
- আপডেট সময় : ০৫:৩২:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪১২ বার পড়া হয়েছে
গাজায় ইসরাইলের নজিরবিহীন বর্বরতা ও গণহত্যা থামানো অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষ হচ্ছে সোমবার। রোববারই মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন-হামাস। বলা হয়েছে, রাজি হলে আরও ২০ থেকে ৪০ জন জিম্মিকে ছাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে। যুদ্ধবিরতির সময় শেষ দিকে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ নিয়ে বাড়ছে উৎকণ্ঠা। যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়বে কি না এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।
গাজায় অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে হামাসের প্রস্তাবে নানামুখী আলোচনা শুরু করেছে ইসরাইল। এদিকে, গাজায় আবার গণহত্যা শুরুর হুমকি সত্বেও অত্যাধুনিক মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারে ইসরাইলের ওপর সিনেটের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
প্রস্তাব পাওয়ার পর জরুরি বৈঠক করে সম্ভাব্যতা পর্যালোচনা করে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। রোববার (২৬ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় বৈঠকে বসে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। এ বৈঠকেই যুদ্ধ বিরতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। খবর আল জাজিরা
ওই সভায় যুদ্ধবিরতির পূর্ণাঙ্গ চুক্তির শর্তপূরণ সাপেক্ষে এর মেয়াদ বাড়াতে রাজি ইসরায়েল সরকার। হামাস যদি প্রতিদিন ১০ জন করে জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে একদিন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। এই শর্তের কথা বলেছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যস্থতাকারী কাতারের সাথেও আলোচনা করেছে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা-মোসাদ। চুক্তি অনুযায়ী চারদিনে ৫০ জিম্মিকে ছাড়ার কথা থাকলেও তিনদিনেই ৫৪ জিম্মিকে ছেড়েছে হামাস।
বিনিময়ে শর্তে উল্লেখ করা দেড়শ’ ফিলিস্তিনি বন্দির মধ্যে ১১৭ জনকে ছেড়েছে ইসরাইল। এদিকে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে শুরু হওয়া গাজায় গণহত্যার তীব্রতা নিয়ন্ত্রণে মার্কিন অস্ত্রের মজুদ ব্যবহারে ইসরাইলকে রুখতে প্রতিবন্ধকতা দিয়েছিলো মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট। এবার এটিও উঠিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন মানবাধিকারের পক্ষে সোচ্চার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইয়েমেন উপকূলের কাছাকাছি এডেন সাগরে মোতায়েন হয়েছে বিমানবাহী মার্কিন রণতরি ইউএসএস আইজেনহাওয়ার। একে সঙ্গ দিচ্ছে আরও চারটি যুদ্ধ জাহাজ। গত সপ্তাহের শুরুতে ইয়েমেনের হুতি গেরিলারা ২৫ ক্রুসহ ইসরাইলের একটি জাহাজ জব্দের ধারাবাহিকতায় এই পদক্ষেপ নিলো যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিন গতকাল ৩৯ কারাবন্দি ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। এ নিয়ে যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন থেকে মোট মুক্তিপ্রাপ্তদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৭ জনে। এর আগে তৃতীয় ধাপে ১৩ ইসরায়েলিসহ ১৭ জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। খবর আল জাজিরা
চার দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের তৃতীয় দিনে সবমিলিয়ে ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের মুক্তি উপলক্ষে রোববার (২৬ নভেম্বর) রাতে অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় বিশাল সংখ্যক ফিলিস্তিনি জনতা রাস্তায় নেমে আসেন।
সেখানে তারা মুক্তি পাওয়া বন্দিদের বহনকারী রেড ক্রসের বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় কেউ কেউ ফিলিস্তিনের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল হামাস ও ফাতাহ-এর পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনি পতাকাও ওড়ান।
দীর্ঘ দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের পর গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। চার দিনের এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষ হবে আজ। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ১৩ ইসরায়েলিসহ ২৪ জনকে মুক্তি দেয় হামাস। অপরদিকে, ৩৯ জন কারাবন্দি ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় তেল আবিব।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়, সঙ্গে জিম্মি করা হয় ২৪০ জনকে। এরপরই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ধরে চলা এ যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫০০০ ফিলিস্তিনি।