Dhaka ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেনের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু

পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও রাজধানী ঢাকার মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে আজ। এতে যাত্রী ছিল ১ হাজার ৩০ জন। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজার থেকে যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকার পথে যাত্রা শুরু করে ১৩ বগির কক্সবাজার একপ্রেস ট্রেনটি। ট্রেনটি আজ রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ফিরতি ট্রেন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন ছাড়বে রাত সাড়ে ১০টায়।

প্রথম দিনের রেলের যাত্রী হতে অনেক মানুষ স্টেশনে খুব ভোরে উপস্থিত হন। সকালে স্টেশন ও স্টেশনের বাইরে বিপুলসংখ্যক যাত্রী দেখা যায়। তাদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।

বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা ভোর পাঁচটার দিকে স্টেশন এলাকায় আসেন। তার পর থেকে ট্রেনে ওঠার জন্য অপেক্ষা করেন। আগামী ১০ তারিখ পর্যন্ত টিকিট বুকিং থাকায় টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন অনেক মানুষ।

ফায়সাল নামের আরেক যাত্রী বলেন, কক্সবাজার থেকে যে ট্রেন ছাড়বে সেটি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না। মনে হচ্ছে আমি এখনো ঘুমে স্বপ্ন দেখছি। তবে ট্রেনে উঠতে পেরে খুব ভালো লাগছে।

ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় পর্যটকসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পের জন্য তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসতে ইতোমধ্যে হোটেল বুকিং দিয়েছে। আগামী ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রুটে ট্রেনের সকল টিকেট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে।

ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ১ হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ২ হাজার ৩৮০ টাকা। অপর দিকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ৪৬৬ এবং এসি বার্থের ভাড়া ৬৯৬ টাকা।

কক্সবাজারের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ চালুর লক্ষ্যে কক্সবাজার শহরের ঝিলংজায় ঝিনুকের আদলে তৈরি করা হয়েছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ আইকনিক রেল স্টেশন।

চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জুন মাসে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয় প্রায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা।

গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

স্টেশন মাস্টার গোলাম রাব্বানী জানান, এই রুটে আপাতত দুটি ট্রেন চলাচল করবে। কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন ট্রেন ছাড়বে দুপুর সাড়ে ১২টায়। চট্টগ্রাম হয়ে এটি ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ৯টা ১০ মিনিটে। অন্যদিকে, ঢাকা থেকে ট্রেন ছাড়বে রাত সাড়ে ১০টায়। এটি কক্সবাজার পৌঁছাবে পরদিন সকাল ৭টা ২০ মিনিটে।

কক্সবাজার শহরের ঝিলংজায় ঝিনুকের আদলে তৈরি আইকনিক রেল স্টেশন এখন দর্শনার্থীদের জন্য অন্যতম আকর্ষনীয় স্থাপনায় পরিণত হয়েছে। পর্যটকসহ হাজার হাজার লোক প্রতিদিন এই স্টেশনটি দেখার জন্য ভিড় করছেন। কক্সবাজার শহর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর নির্মিত এই স্টেশন ভবনটির আয়তন এক লাখ ৮২ হাজার বর্গফুট। ছয় তলা এই ভবনে রয়েছে নানান সুযোগ সুবিধা।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, ‘ট্রেনে চড়ে হাজারো পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসছে। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। ট্রেন যোগাযোগের কারণে বদলে যাবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প। অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে, এটা অনেক আনন্দের।’

কক্সবাজার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, ‘স্বপ্নের রেল এখন পর্যটন শহর কক্সবাজারে। এই রেলপথ বাংলাদেশের উন্নয়নে যুগান্তকারী ঘটনা। ব্রিটিশ, পাকিস্তানের সুদীর্ঘ সময় ও স্বাধীন বাংলাদেশের অর্ধশত বছরে যা হয়নি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার তা করে দেখালেন।’

আয়াছুর রহমান বলেন, ‘এই রেলপথ কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পরিপূর্ণতা দেবে। বিদেশি পর্যটক আনতে সহায়ক হবে। শুধু শীতকালে নয়, বর্ষাসহ সারা মৌসুম পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণে উৎসাহিত হবে।’

কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য সমিতির পরিচালক মোস্তাক আহমদ বলেন, ‘সহজ রেল যোগাযোগের কারণে কক্সবাজার এলাকায় উৎপাদিত পণ্য মাছ, শুঁটকি, লবণ, পান, সবজিসহ নানান পণ্য পরিবহণ ও বিদেশে রপ্তানির সুযোগ বাড়বে। কক্সবাজারসহ দেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে।’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম মো. নাজমুল ইসলাম জানান, কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সব টিকিট অনলাইনে অগ্রিম বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর প্রায় ৬০ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে আসেন। তাদের বেশির ভাগই যাতায়াত করেন বাসে। অনেকে বিমানে যাতায়াত করেন। এখন বেশির ভাগ পর্যটক ট্রেনে ভ্রমণ পছন্দ করছেন।’

কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন জানান, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে দোহাজারি থেকে কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণে মেগা প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই মেগা প্রকল্পে দোহাজারি থেকে কক্সবাজার ১০২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনপথ ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে দোহাজরি পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার পথ ব্রিটিশ আমলে তৈরি। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেয় বর্তমান সরকার। এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার বিবেচনায় গৃহীত একটি মেগা প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় সংস্কার করা হয়েছে শতবর্ষী কালুরঘাট সেতু।

ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেনের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু

আপডেট : ০৯:৪১:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৩

পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও রাজধানী ঢাকার মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে আজ। এতে যাত্রী ছিল ১ হাজার ৩০ জন। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজার থেকে যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকার পথে যাত্রা শুরু করে ১৩ বগির কক্সবাজার একপ্রেস ট্রেনটি। ট্রেনটি আজ রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ফিরতি ট্রেন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন ছাড়বে রাত সাড়ে ১০টায়।

প্রথম দিনের রেলের যাত্রী হতে অনেক মানুষ স্টেশনে খুব ভোরে উপস্থিত হন। সকালে স্টেশন ও স্টেশনের বাইরে বিপুলসংখ্যক যাত্রী দেখা যায়। তাদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।

বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা ভোর পাঁচটার দিকে স্টেশন এলাকায় আসেন। তার পর থেকে ট্রেনে ওঠার জন্য অপেক্ষা করেন। আগামী ১০ তারিখ পর্যন্ত টিকিট বুকিং থাকায় টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন অনেক মানুষ।

ফায়সাল নামের আরেক যাত্রী বলেন, কক্সবাজার থেকে যে ট্রেন ছাড়বে সেটি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না। মনে হচ্ছে আমি এখনো ঘুমে স্বপ্ন দেখছি। তবে ট্রেনে উঠতে পেরে খুব ভালো লাগছে।

ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় পর্যটকসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পের জন্য তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসতে ইতোমধ্যে হোটেল বুকিং দিয়েছে। আগামী ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রুটে ট্রেনের সকল টিকেট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে।

ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ১ হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ২ হাজার ৩৮০ টাকা। অপর দিকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ৪৬৬ এবং এসি বার্থের ভাড়া ৬৯৬ টাকা।

কক্সবাজারের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ চালুর লক্ষ্যে কক্সবাজার শহরের ঝিলংজায় ঝিনুকের আদলে তৈরি করা হয়েছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ আইকনিক রেল স্টেশন।

চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জুন মাসে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয় প্রায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা।

গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

স্টেশন মাস্টার গোলাম রাব্বানী জানান, এই রুটে আপাতত দুটি ট্রেন চলাচল করবে। কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন ট্রেন ছাড়বে দুপুর সাড়ে ১২টায়। চট্টগ্রাম হয়ে এটি ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ৯টা ১০ মিনিটে। অন্যদিকে, ঢাকা থেকে ট্রেন ছাড়বে রাত সাড়ে ১০টায়। এটি কক্সবাজার পৌঁছাবে পরদিন সকাল ৭টা ২০ মিনিটে।

কক্সবাজার শহরের ঝিলংজায় ঝিনুকের আদলে তৈরি আইকনিক রেল স্টেশন এখন দর্শনার্থীদের জন্য অন্যতম আকর্ষনীয় স্থাপনায় পরিণত হয়েছে। পর্যটকসহ হাজার হাজার লোক প্রতিদিন এই স্টেশনটি দেখার জন্য ভিড় করছেন। কক্সবাজার শহর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর নির্মিত এই স্টেশন ভবনটির আয়তন এক লাখ ৮২ হাজার বর্গফুট। ছয় তলা এই ভবনে রয়েছে নানান সুযোগ সুবিধা।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, ‘ট্রেনে চড়ে হাজারো পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসছে। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। ট্রেন যোগাযোগের কারণে বদলে যাবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প। অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে, এটা অনেক আনন্দের।’

কক্সবাজার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, ‘স্বপ্নের রেল এখন পর্যটন শহর কক্সবাজারে। এই রেলপথ বাংলাদেশের উন্নয়নে যুগান্তকারী ঘটনা। ব্রিটিশ, পাকিস্তানের সুদীর্ঘ সময় ও স্বাধীন বাংলাদেশের অর্ধশত বছরে যা হয়নি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার তা করে দেখালেন।’

আয়াছুর রহমান বলেন, ‘এই রেলপথ কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পরিপূর্ণতা দেবে। বিদেশি পর্যটক আনতে সহায়ক হবে। শুধু শীতকালে নয়, বর্ষাসহ সারা মৌসুম পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণে উৎসাহিত হবে।’

কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য সমিতির পরিচালক মোস্তাক আহমদ বলেন, ‘সহজ রেল যোগাযোগের কারণে কক্সবাজার এলাকায় উৎপাদিত পণ্য মাছ, শুঁটকি, লবণ, পান, সবজিসহ নানান পণ্য পরিবহণ ও বিদেশে রপ্তানির সুযোগ বাড়বে। কক্সবাজারসহ দেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে।’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম মো. নাজমুল ইসলাম জানান, কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সব টিকিট অনলাইনে অগ্রিম বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর প্রায় ৬০ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে আসেন। তাদের বেশির ভাগই যাতায়াত করেন বাসে। অনেকে বিমানে যাতায়াত করেন। এখন বেশির ভাগ পর্যটক ট্রেনে ভ্রমণ পছন্দ করছেন।’

কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন জানান, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে দোহাজারি থেকে কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণে মেগা প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই মেগা প্রকল্পে দোহাজারি থেকে কক্সবাজার ১০২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনপথ ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে দোহাজরি পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার পথ ব্রিটিশ আমলে তৈরি। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেয় বর্তমান সরকার। এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার বিবেচনায় গৃহীত একটি মেগা প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় সংস্কার করা হয়েছে শতবর্ষী কালুরঘাট সেতু।