‘ইসরায়েলি সেনারা আমাদের ওপর হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দিত’
- আপডেট সময় : ১০:৩২:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪৪৬ বার পড়া হয়েছে
‘লাঠি দিয়ে মারধর, গালমন্দ ও দুর্ব্যবহার করত ইসরায়েলি সেনারা। ভয় দেখাতে হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দেওয়া হতো আমাদের ওপর। খাবার ও কম্বল কেড়ে নেওয়া হতো। বন্দি নারীদের ধর্ষণের হুমকিও দিত।’
ইসরায়েলের কারাগারে অসহ্য নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ফিলিস্তিনি বন্দীরা। মারধর, গালাগালিসহ নানা ধরনের নিপীড়ন চালানো হচ্ছে তাদের ওপর। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে ইসরায়েলি কারাগারের ভেতরের এই ভয়াবহ চিত্র।
হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে সবশেষ ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পায় ৩০ ফিলিস্তিনি। সেখানে তারা কঠিন সময় পার করেছেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিপ্রাপ্ত অনেকেই।
মুক্তিপ্রাপ্তরা বলছে, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দিদের ওপর অসহনীয় নির্যাতন চালাচ্ছে কারারক্ষীরা।
Teenage Palestinian prisoner Mohammad Nazzal says that Israeli jailers beat him in prison last week, resulting in fractures on his hand and finger. He reported that no medical attention was paid to his injury until the Red Cross applied a sling after his release.
With the #UN… pic.twitter.com/rrs3IukxzU
— AHMED | أحمد (@ASE) November 29, 2023
মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দী আবদাল্লাহ আল বাও বলেন, ‘ইসরায়েলের কারাগারের ভেতরের অবস্থা খুবই খারাপ। কারারক্ষীরা ফিলিস্তিনি বন্দীদের অত্যধিক মারধর ও নিপীড়ন চালায়। যারা এখনো বন্দী আছেন, তাদের এসব অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে। তারা খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। আশা করি, শিগগির যেন তারা মুক্তি পায়।’
আলি আকসার নামের মুক্তি পাওয়া আরেক বন্দী বলেন, ‘তারা আমাদের খাবার ও পানি দিত না। আমাদের ওপর শারীরিক, মানসিক সবভাবেই নির্যাতন চালাত। আমাদের মেরে রক্তাক্ত করা হতো। তারা যেই নির্যাতন চালাত, সবগুলো আমি বলতেও পারব না।’
ইসরায়েলি কারারক্ষীদের নির্যাতনে কারাগারের ভেতরে কয়েকজন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের প্রিজনারস সোসাইটি।
এদিকে সাময়িক যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতে না হতেই শুক্রবার থেকে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এ পর্যন্ত ১৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা ও ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই শুক্রবার সকাল থেকে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছে অন্তত ৫৮৯জন। এ ছাড়া ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে ২০টিরও বেশি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু বলে দাবি করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রণালয়ের এ দাবির সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে গোলাগুলিতে দক্ষিণ লেবাননে তিনজন নিহত হয়েছেন। লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল–জাজিরা।
সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষে গতকাল শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলি হামলার পর লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলা চালাল হামাসের সমর্থক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ইরান সমর্থিত এ সশস্ত্র সংগঠনটি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তাদের একজন যোদ্ধাও রয়েছে।
গত ৭ অক্টোবরের পর হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে এবং হামাস অন্তত ২৪০জনকে জিম্মি করে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।