নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট জয়
- আপডেট সময় : ০৫:৫৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪২২ বার পড়া হয়েছে
ঘরের মাঠে এবার জয় উদযাপন করলো বাংলাদেশ। আজ যেন মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের স্মৃতি ফিরিয়ে আনল টাইগাররা। গত বছরের জানুয়ারিতে বে ওভালে নিউজিল্যান্ডকে তাদেরই ঘরের মাটিতে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে প্রথমবারের মত হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
ঐতিহাসিক সেই জয়ের দুই বছর না পেরোতেই আরও এক স্মরণীয় জয় পেলো বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর ঘরের মাটিতে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে কিউইদের আমন্ত্রণ জানায় টাইগাররা। এ সিরিজেরই প্রথম টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে আজ সফরকারীদের উড়িয়ে ১৫০ রানের বিশাল এক জয় পেয়েছে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
বাংলাদেশের দেয়া ৩৩২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কাল চতুর্থ দিনে ১১৩ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। তবে জয় থেকে ৩ উইকেট দূরে থেকেই কাল দিনের খেলা শেষ করতে হয় টাইগারদের। অবশেষে কিউইদের শেষ ৩ উইকেটও আজ তুলে নিয়েছেন টিম টাইগার্স।
বাংলাদেশের পক্ষে ৬ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। সব মিলিয়ে এই টেস্টে ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। নাঈম হাসান নিয়েছেন ২ উইকেট।
এই ম্যাচের আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে ওই একটাই জয়, যেটা ২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে উদযাপন করেছিল বাংলাদেশ। এখন সিলেটে আরেকটি উদযাপনের অপেক্ষা। তৃতীয় দিন নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরি আর চতুর্থ দিনে তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে সেই স্বপ্নটা দারুণভাবে দেখছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি মুশফিক এবং মিরাজও রেখেছেন অবদান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ পায় ৩৩১ রানের বড়োসড়ো লিড, যা সিলেটের স্পিনবান্ধব উইকেটে করাটা যে মহাকঠিন, সেটা এরই মধ্যে টের পেয়েছে নিউজিল্যান্ড।
৩৩২ রান করার আশায় নেমেই চাপে পড়ে তারা। দলের রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে যান ওপেনার টম লাথাম। এর পর ১৯ রান তুলতেই সবচেয়ে অভিজ্ঞ কেন উইলিয়ামসনকে প্যাভিলিয়নে পাঠান তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে এই উইলিয়ামসনের ক্যাচ মিসের পর তাঁর উইকেট শিকার করেছিলেন তাইজুল। গতকালও যখন বোলিংয়ে আসেন, তখন স্ট্রাইকে উইলিয়ামসনকে দেখে দলনেতা শান্ত বোধ হয় বলে দেন এই উইকেট তোমাকেই নিতে হবে। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। তাইজুলের এলবির ফাঁদে পা দেন উইলিয়ামসন। ম্যাচ শেষে এ নিয়ে তাইজুলের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি খানিকটা হেসেই বলেন, ‘দেখুন ভাই, ৯ বছর তো খেলছি। হয়তো সবাই এ জন্যই আমার ওপর তখন আস্থা রাখে। তবে কোনোকিছু পরিকল্পনা করে করা হয়নি।’
দু’বার কেন উইলিয়ামসনের উইকেট নেওয়া, এর পর নিউজিল্যান্ডের জুটি একের পর এক তছনছ করা তাইজুল তো ধন্যবাদ পেতেই পারেন। প্রতিপক্ষ স্পিনার এজাজ প্যাটেল অবশ্য ধন্যবাদ না দিলেও তাঁর বোলিংয়ের সুনাম করেছেন। তবে তাইজুল-মিরাজদের ব্যবহারটা চমৎকারভাবে করছেন অধিনায়ক শান্ত। এই টেস্ট দিয়ে তিনি দলনেতা হিসেবে নতুন ঘরে নাম লেখান। তাই জিতলে তাঁর কৃতিত্বও কম হবে না। তবে এই ম্যাচের আশাও ছাড়তে নারাজ নিউজিল্যান্ড। সংবাদ সম্মেলনে আসা দলটির স্পিনার এজাজ তেমনটাই মনে করিয়ে দেন। বাংলাদেশের চাই তিন উইকেট। আর নিউজিল্যান্ডের করতে হবে ৩ উইকেট নিয়ে ২১৯ রান। কার পথ কঠিন। কে পাবে গন্তব্যের দেখা। আজই মিলে যাবে সেই উত্তর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
প্রথম ইনিংস বাংলাদেশ : ৮৫.১ ওভারে ৩১০/১০
প্রথম ইনিংস নিউজিল্যান্ড : ১০১.৫ ওভারে ৩১৭/১০
দ্বিতীয় ইনিংস বাংলাদেশ : ১০০.৪ ওভারে ৩৩৮/১০। (জয় ৮, জাকির ১৭, শান্ত ১০৫, মমিনুল ৪০, মুশফিক ৬৭, দিপু ১৮, মিরাজ ৫০*, সোহান ১০, নাঈম ৪, তাইজুল ০, শরিফুল ১০; সাউদি ১৫-৩-৩৩-১, জেমিসন ১৩-৩-২৫-০, প্যাটেল ৩৬.৪-১-১৪৮-৪, ফিলিপস ১৬-৪-৪৭-১, সোধি ১৯-২-৭৪-২, মিচেল ১-০-২-০)
দ্বিতীয় ইনিংস নিউজিল্যান্ড : ৭১.১ ওভারে ১৮১/১০। (লাথাম ০, কনওয়ে ২২, উইলিয়ামসন ১১, নিকোলস ২, মিচেল ৫৮, টম ৬, ফিলিপস ১২, জেমিসন ৯, সোধি ১২, সাউদি ৩৪, প্যাটেল ০*; শরিফুল ৬-২-১৩-১, মিরাজ ১৫-৪-৪৪-১, তাইজুল ৩১.১-৮-৭৫-৬, নাঈম ১৭-৩-৪০-২, মমিনুল ২-০-৫-০)
ফল : বাংলাদেশ ১৫০ রানে জয়ী