ঢাকা ০৭:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল থেকে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৬তম বর্ষপূর্তি আজ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪২০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৬তম বর্ষপূর্তি আজ। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে শান্তিবাহিনীর দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সংগ্রামের। তবে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর পূর্ণ হলেও আঞ্চলিক বিভিন্ন সংগঠনের সংঘাতে পাহাড়ে পূর্ণাঙ্গ শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। খুন, গুম, অপহরণ, হানাহানি আর রক্তক্ষয়ী সংঘাতে এখনো অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম।

তবে উন্নয়নসহ নানাভাবে বদলে গেলেও, শান্তি ফেরেনি পুরোপুরি। কেননা, এখনও পাহাড়ে অস্ত্রের ঝনঝনানি, চাঁদাবাজি, খুনোখুনি, নতুন সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা মিলে নিয়মিতই অশান্ত হয়ে ওঠে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এবং বান্দরবান। পাহাড়ে এখনো সক্রিয় অন্তত ৬টি সশস্ত্র সংগঠন। অপহরণ, খুন ও চাঁদাবাজির কারণে মাঝে মাঝেই অস্থির হয়ে উঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম।

১৯৯৭ সালে সরকারের পক্ষে তৎকালীন চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লার সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে সই হয় পার্বত্য শান্তি চুক্তি। এর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে দীর্ঘকালের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটে। ইতিবাচক অনেক পরিবর্তনের সূচনাও হয়। পাহাড়ের অবহেলিত ক্ষুদ্র্র নৃগোষ্টীর মনে আশার সঞ্চার করে, এই পার্বত্য শান্তি চুক্তি। তবে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তৈরি হয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা।

শান্তিচুক্তির ফলে প্রাথমিকভাবে শান্তি বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। সরকার তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে।

দিবসটি উপলক্ষে আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, ‘পার্বত্য শান্তি চুক্তি শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উদ্যোগ শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

রাষ্ট্রপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ২৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য এলাকার সব অধিবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ধারাবাহিকতায় পার্বত্য অঞ্চল উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে এগিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর কোনো তৃতীয় পক্ষ বা বহিঃশক্তির মধ্যস্থতা ছাড়াই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে এ ঐতিহাসিক শান্তির দলিলটি স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্ব ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি বন্ধ হয়। অনগ্রসর ও অনুন্নত পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়নের ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার অর্জন এ চুক্তির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির স্মারক।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির আলোকে এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করেছি।’

রাঙামাটির স্থানীয়রা বলেন, আজকে ২৬ বছর হয়ে গেছে কিন্তু উনি শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করেননি। এজন্য এখানকার লোকজনের কাছে, এখানকার অধিবাসীদের মধ্যে এ ব্যাপারে হতাশা রয়ে গেছে। আরেকজন বলেন, ২০১৬ সাল থেকে এ চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো এখনো বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না।

শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন নিয়ে পাহাড়ে আছে পরস্পরবিরোধী আলোচনা। বান্দরবানের দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অং চ মং মারমা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো রয়ে গেছে। সব ধারা না হওয়া পর্যন্ত আমার মনে হয় না পূর্ণাঙ্গ শান্তি এখানে প্রতিষ্ঠা হবে।

বান্দরবানের সমাজকর্মী লেলুং খুমী বলেন, যাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে তারা যদি চুক্তি বাস্তবায়ন না করে, তাহলে আমরা সহজে বুঝে নিতে পারি যে তাদের কোনো রাজনৈতিক সদিচ্ছাই নাই।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবুর রহমান বলেন, এখন অশান্তি আরও অনেক বেশি বেড়েছে বলে আমি মনে করি। প্রতিনিয়ত এখানে গুম, খুন হচ্ছে।

তবে সরকারপক্ষের দাবি, অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে বলে পাহাড়ে বইছে শান্তির বাতাস। বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ দাশ বলেন, আজকে যেদিকেই তাকাবেন সেখানে উন্নয়ন আর উন্নয়ন। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে।

রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, স্কুল-কলেজ এগুলো জাতীয়করণ করা হয়েছে। মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাইলের পর মাইল রাস্তা, মাইলের পর মাইল বিদ্যুৎ আছে।

৭২টি ধারার এই শান্তিচুক্তির বেশিরভাগ বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানই নিষ্ক্রিয়। ফলে পাহাড়ে ঝুলে আছে সবধরনের ভূমি জটিলতা।

শান্তি চুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে রাজধানীতে এক আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তিন পার্বত্য এলাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরদের নিয়ে বিশেষ আয়োজন করেছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা।

নিউজটি শেয়ার করুন

পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৬তম বর্ষপূর্তি আজ

আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৬তম বর্ষপূর্তি আজ। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে শান্তিবাহিনীর দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সংগ্রামের। তবে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর পূর্ণ হলেও আঞ্চলিক বিভিন্ন সংগঠনের সংঘাতে পাহাড়ে পূর্ণাঙ্গ শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। খুন, গুম, অপহরণ, হানাহানি আর রক্তক্ষয়ী সংঘাতে এখনো অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম।

তবে উন্নয়নসহ নানাভাবে বদলে গেলেও, শান্তি ফেরেনি পুরোপুরি। কেননা, এখনও পাহাড়ে অস্ত্রের ঝনঝনানি, চাঁদাবাজি, খুনোখুনি, নতুন সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা মিলে নিয়মিতই অশান্ত হয়ে ওঠে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এবং বান্দরবান। পাহাড়ে এখনো সক্রিয় অন্তত ৬টি সশস্ত্র সংগঠন। অপহরণ, খুন ও চাঁদাবাজির কারণে মাঝে মাঝেই অস্থির হয়ে উঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম।

১৯৯৭ সালে সরকারের পক্ষে তৎকালীন চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লার সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে সই হয় পার্বত্য শান্তি চুক্তি। এর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে দীর্ঘকালের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটে। ইতিবাচক অনেক পরিবর্তনের সূচনাও হয়। পাহাড়ের অবহেলিত ক্ষুদ্র্র নৃগোষ্টীর মনে আশার সঞ্চার করে, এই পার্বত্য শান্তি চুক্তি। তবে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তৈরি হয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা।

শান্তিচুক্তির ফলে প্রাথমিকভাবে শান্তি বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। সরকার তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে।

দিবসটি উপলক্ষে আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, ‘পার্বত্য শান্তি চুক্তি শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উদ্যোগ শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

রাষ্ট্রপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ২৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য এলাকার সব অধিবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ধারাবাহিকতায় পার্বত্য অঞ্চল উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে এগিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর কোনো তৃতীয় পক্ষ বা বহিঃশক্তির মধ্যস্থতা ছাড়াই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে এ ঐতিহাসিক শান্তির দলিলটি স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্ব ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি বন্ধ হয়। অনগ্রসর ও অনুন্নত পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়নের ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার অর্জন এ চুক্তির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির স্মারক।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির আলোকে এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করেছি।’

রাঙামাটির স্থানীয়রা বলেন, আজকে ২৬ বছর হয়ে গেছে কিন্তু উনি শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করেননি। এজন্য এখানকার লোকজনের কাছে, এখানকার অধিবাসীদের মধ্যে এ ব্যাপারে হতাশা রয়ে গেছে। আরেকজন বলেন, ২০১৬ সাল থেকে এ চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো এখনো বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না।

শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন নিয়ে পাহাড়ে আছে পরস্পরবিরোধী আলোচনা। বান্দরবানের দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অং চ মং মারমা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো রয়ে গেছে। সব ধারা না হওয়া পর্যন্ত আমার মনে হয় না পূর্ণাঙ্গ শান্তি এখানে প্রতিষ্ঠা হবে।

বান্দরবানের সমাজকর্মী লেলুং খুমী বলেন, যাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে তারা যদি চুক্তি বাস্তবায়ন না করে, তাহলে আমরা সহজে বুঝে নিতে পারি যে তাদের কোনো রাজনৈতিক সদিচ্ছাই নাই।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবুর রহমান বলেন, এখন অশান্তি আরও অনেক বেশি বেড়েছে বলে আমি মনে করি। প্রতিনিয়ত এখানে গুম, খুন হচ্ছে।

তবে সরকারপক্ষের দাবি, অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে বলে পাহাড়ে বইছে শান্তির বাতাস। বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ দাশ বলেন, আজকে যেদিকেই তাকাবেন সেখানে উন্নয়ন আর উন্নয়ন। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে।

রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, স্কুল-কলেজ এগুলো জাতীয়করণ করা হয়েছে। মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাইলের পর মাইল রাস্তা, মাইলের পর মাইল বিদ্যুৎ আছে।

৭২টি ধারার এই শান্তিচুক্তির বেশিরভাগ বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানই নিষ্ক্রিয়। ফলে পাহাড়ে ঝুলে আছে সবধরনের ভূমি জটিলতা।

শান্তি চুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে রাজধানীতে এক আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তিন পার্বত্য এলাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরদের নিয়ে বিশেষ আয়োজন করেছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা।