অবরোধের আগে রাজধানীতে ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ২
- আপডেট সময় : ০৫:৩২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪৩০ বার পড়া হয়েছে
সরকারের পদত্যাগের এক দফাসহ বিভিন্ন দাবিতে আবারও ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় বিএনপি। আগামীকাল রোববার (৩ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা দেশব্যাপী এ কর্মসূচি ডেকেছে দলটি। এর আগের দিন আজ শনিবার সন্ধায় রাজধানীর ফার্মগেটে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ফার্মভিউ সুপার মার্কেটের সামনে ককটেল বিস্ফোরণে মোটরসাইকেলে থাকা চালকসহ দুইজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের জয়েন্ট ডিরেক্টর এমদাদুল হক খান (৫৬) এবং সামিট গ্রুপের ইঞ্জিনিয়ার নাজমুস শাহাদাত প্রতীক (৩৮)।
শনিবার রাত আটটার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। পরে পথচারীদের সহায়তায় প্রথমে তাদের মগবাজারের আল-রাজি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ৯টার দিকে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আহতরা জানান, মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহ রোডে তাঁদের বাসা। সন্ধ্যার দিকে কারওয়ান বাজারে কাজ শেষ করে দুজন মোটরসাইকেল নিয়ে বাসার দিকে রওনা হন। ফার্মগেটের ফার্মভিউ সুপার মার্কেটের সামনে পৌঁছানো মাত্রই রাস্তায় তাঁদের পাশে পরপর দুটি বিকট বিস্ফোরণ হয়। এতে তাঁদের শরীরে স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত জখম হন। পরে আশপাশের পথচারীরা তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে আল-রাজি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতে তাঁদের ঢামেকে নেওয়া হয়।
বিস্ফোরণের পর ব্যস্ত রাস্তাটি ফাঁকা হয়ে যায়। রাস্তা ও ফুটপাতে থাকা লোকজন আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওপর থেকে নিক্ষেপ করা ককটেল বিস্ফোরণে মোটরসাইকেলের ২ আরোহী আহত হয়েছেন।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান জানান, আশপাশের কোনো ভবন থেকে ককটেলটি ছোড়া হয়েছে। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে আছে।
অন্যদিকে, অবরোধের সমর্থনে রাজধানীতে মশাল মিছিল করেছে বিএনপি। আগারগাঁওয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে অবরোধের সমর্থনে মশাল মিছিল হয়েছে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি’র কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ- সভাপতি ডক্টর খন্দকার বাবলু, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য নাদিয়া পাঠান পাপনসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে সরকারের পদত্যাগের এক দফাসহ বিভিন্ন দাবিতে আবারও ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় বিএনপি। আগামীকাল রোববার (৩ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা দেশব্যাপী এ কর্মসূচি ডেকেছে দলটি। এর আগের দিন আজ শনিবার সন্ধায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ৪৮ ঘণ্টার এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এর আগে গত সোমবার (২৭ নভেম্বর) একই সঙ্গে দুই কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বিএনপি। সেদিন ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বুধবার ভোর ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার অবরোধ এবং বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
পরে ওইদিনই এক বিবৃতিতে একই কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে পরদিন ২৯ অক্টোবর এবং ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি-জামায়াত ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরা। পরবর্তীতে ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় এবং ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করে সরকারবিরোধী দলগুলো।
পরে ১১ ও ১২ নভেম্বর চতুর্থ দফায় এবং ১৫ ও ১৭ নভেম্বর পঞ্চম দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় তারা। এরপর জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তা প্রত্যাখ্যান করে ফের ১৯ ও ২০ নভেম্বর সারাদেশে হরতাল পালন করে সরকারবিরোধী দলগুলো। পরবর্তীতে ২২ নভেম্বর ভোর ৬টা থেকে ষষ্ঠ দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ পালন করে দলটি। গত ২৪ নভেম্বর ভোর ৬টায় শেষ হয় ওই অবরোধ কর্মসূচি। এরপর আবারও একদিন বিরতি দিয়ে ২৬ নভেম্বর ভোর ৬টা থেকে ২৮ নভেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি দেয় বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।