গাজার ৪০০টির বেশি স্থাপনায় হামলা, দোটানায় ইসরায়েল
- আপডেট সময় : ০৮:৩৩:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪৩২ বার পড়া হয়েছে
বর্ধিত যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষের পর গত শুক্রবার থেকে গাজায় পুনরায় হামলা শুরুর পর প্রথম দিনই এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে ে চালায় ইসরায়েল। এদিন গাজার দক্ষিণাঞ্চল ও মিসর সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিংয়েও হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এতদিন গাজা যুদ্ধের ফোকাস উপত্যকাটির উত্তরাঞ্চলে ছিল বলে মনে হচ্ছিল। আর ইসরায়েল যে গাজা সিটির কেন্দ্রস্থলের দিকে অগ্রসর হবে এ নিয়েও বিশ্লেষকদের সন্দেহ কম ছিল। খবর আল জাজিরা।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সি-১৭ বিমান দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ১৫ হাজার বোমা ও ৫৭ হাজার গোলাবারুদ ইসরায়েলে পাঠিয়েছে। আর কম জরুরি সরবরাহগুলো জাহাজের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে।
গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইসরায়েলে পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের বোমগুলো বাঙ্কার ব্লাস্টার। শক্তিশালী এ বোমাটি কংক্রিটের দুর্ভেদ্য কাঠামোও ভেদ করতে পারে নিমিষেই। ‘ব্লু-১০৯’ নামে নতুন পাঠানো ব্লাস্টার বোমাগুলো ২ হাজার পাউন্ড (৯০০ কেজি)।
এছাড়া ইসরায়েলে ৫ হাজারেরও বেশি আনগাইডেড এমকে ৮২ বোমা, ৫ হাজার ৪শরও বেশি এমকে ৮৪ বোমা, প্রায় হাজারখানেক জিবিইউ ৩৯ ক্ষুদ্র ব্যাসের বোমা এবং ৩ হাজার জেডিএএম পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে যুদ্ধবিরতি মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার থেকে খবর আসছিল যে, তারা মিসর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। শনিবার কাতার জানায়, তাদের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। ওইদিন বিকেলেই ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নেয়াকে তাঁর দলসহ কাতার থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কাতার থেকে চলে আসলেও ইসরায়েলি প্রতিনিধিদের একটি ছোট দল সেখানে আছেন। কারণ আলোচনার সুযোগ না রেখে সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্যই বোকামি হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য কাতারে কমপক্ষে একটি দল রাখার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল ঐতিহ্যবাহী মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েন এড়ানো। যেটি ৭ অক্টোবর-পরবর্তী সংকটে ইসরায়েলকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছে। এই সমর্থনের বড় উদাহরণ হলো ইসরায়েলকে ১৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী প্রতিষ্ঠান হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পরই যুক্তরাষ্ট্র সি-১৭ বিমান এবং বাণিজ্যিক বিমান দ্বারা ইসরায়েলে অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠাচ্ছে।
এসব গোলাবারুদ ও অস্ত্র পাঠিয়েও যুদ্ধে বেসামরিক জনগণের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ইসরায়েল সতর্ক করছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার নতুন করে ইসরায়েল হামলা শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, গাজায় উত্তরাঞ্চলের ব্যাপক প্রাণহানি ও বাস্তুচ্যুতি আমরা দেখেছি, তা দক্ষিণ গাজায় পুনরাবৃত্তি করা ঠিক হবে না।
এদিকে ইসরায়েল আশ্বস্ত করেছে যে তারা বেসামরিক জনগণের কম ক্ষয়ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। তবে গাজায় পুনরায় হামলা শুরুর পর একদিনই ২০০ গাজাবাসীকে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
এদিকে হামাসের দীর্ঘ টানেলগুলো বেশিরভাগই কংক্রিটের পুরু স্তরে আবৃত থাকে না, তাই ইসরায়েলের যে খুব বেশি বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা ব্যবহার করতে হবে তা নয়।
ইসরায়েল কেমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে তা তাঁদের রসদে থাকা অস্ত্রশস্ত্রের পরিমাণ না জেনে আঁচ করা সম্ভব নয়। তবে ইসরায়েল তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কথা অনুযায়ী, লক্ষ্য বা হামলার ধরন পরিবর্তন করবে কি না তা বুঝতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।