আজ-কালের মধ্যে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে সিদ্ধান্ত
- আপডেট সময় : ০৯:২৪:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪২৩ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে সমঝোতা অবশ্যই হবে। ১৪ দলের প্রত্যাশা ও বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখে আজ-কালের মধ্যে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির চেয়ে রাজনৈতিক আলোচনা গুরুত্ব পেয়েছে। প্রত্যেকে বর্তমান প্রেক্ষপটে নিউজদের ভিউজ, করণীয় জানিয়েছেন। দেশে-বিদেশে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বতন্ত্র তো স্বতন্ত্রের জায়গায় আছেন। আমি যদি এখন কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীকে চাপ দিয়ে সরে দাঁড়াতে বলি। তাহলে কি সেটা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হবে না?’
১৪ দলীয় জোটের বেশি আসন চাওয়া কতটা যৌক্তিক? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অযৌক্তিক বলে কিছু নেই। তারা দাবি করতেই পারে। তারা জোট করে, তারা দল করে, দলের কাছে তো তাদের মর্যাদার একটা ব্যাপার আছে। তারা বিভিন্ন দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা চাইতে পারে। কিন্তু এখানে এডজাস্টমেন্ট করতে হবে। একজনকে আমরা দিলাম কিন্তু সে নট এ ইলেক্টেবল, সেই অবস্থায় একটা সমস্যা হয়ে যাবে। সেখানে অন্য কেউ বেরিয়ে আসতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘একদলকে চল্লিশটার দিয়ে দেওয়া যায়, দিলে কি হবে? আমরা খুব সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশে কথা বলেছি। একটা বিষয়ে লক্ষ্যণীয়, রাজনৈতিক আলোচনাটা বেশি হয়েছে।
কাদের বলেন, ‘বৈঠকে রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে। প্রত্যেকে প্রত্যেকের ডিউজ, কি করণীয় এ নিয়ে আলোচনা করেছেন’
আসন ভাগাভাগির প্রসঙ্গে তিনি বলেন ‘আমু ভাই (আমি হোসেন আমু) আছেন, উনি বিষয়য়টি সমন্বয় করছেন।’
বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৪ দলের সভাপতির কথা তারা শুনতে আগ্রহী ছিলেন। তার কাছে তারা অনেক জাতীয়, আন্তর্জাতিক, ভূ-রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে তাদের জানারও আগ্রহ ছিল। জোটের চেয়ারম্যান আমাদের প্রধানমন্ত্রী কি ভাবছেন। বাংলাদেশকে নিয়ে বাইরের শক্তিরও খেলা আছে। নিশ্চয়ই এখানে প্রত্যেকেরই একটা স্বার্থ রয়েছে। বাংলাদেশকে ঘিরে ভারত মহাসাগর, বঙ্গপোসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোর এখানে এদের মধ্যেই একটা কর্ডিনেশন আছে। এ বিষয়গুলো তারা সময়ে সময়ে আলাপ আলোচনা করে ব্যালেন্স একটা নীতি গ্রহণ করার বিষয়ে তারা ঐকমত্য পোষণ করেন। নেত্রী এখানে বাংলাদেশকে নিয়ে বাইরের স্বার্থের যে খেলা বহুদিন আগে থেকে আছে, এদেশে ৭৫ ঘটে গেছে, ৩ নভেম্বর ঘটেছে। বারবার তো হামলা আসে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের মূল কথা হচ্ছে, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। সে ব্যাপারে আমরা সবাই একমত।’
কয়েক জায়গায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এটা কি নতুন কোনো দৃষ্টান্ত? এটা তো প্রায় নির্বাচনেই হয়। তাতে কি ক্ষতি হবে? প্রার্থীরা যদি যৌক্তিকভাবে নির্বাচন কমিশন বাতিল করে, তাহলে আমরা কোনো অজুহাত, আপত্তি করতে যাবো না। শূন্য এবার কোথাও থাকবে না।’
নির্বাচন দলের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে সফট স্টাইল, ফ্রি স্টাইলের বিষয় না। এটা আমাদের ইলেকশন স্ট্রাটেজি। আমাদের চেয়ারম্যান ওপেনলি বলে দিয়েছেন। জোটের চেয়ারম্যান, আমাদের সভাপতি একাধিকবার বলে দিয়েছেন।’
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের কথা হচ্ছে। আলোচনা চলছে। কথাবার্তা বলেই তো সমাধান করতে হবে।’
বৈঠকে ১৪ দল নেতারা সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘১৪ দলের নেতারা সন্তুষ্ট কি না এ তথ্য নেওয়ার দায়িত্ব সাংবাদিকদের। আমাদের মধ্যে ঐক্যের কোনো ঘাটতি নেই। উই আর হ্যাপি।’
নির্বাচন এক তরফা হচ্ছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘এক তরফা নির্বাচন যারা বলে, তারা এক তরফা বাধা দিচ্ছে। এটা এক তরফা নির্বাচন নয়। যারা এক তরফা বাধা দিচ্ছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।’
দলীয় প্রার্থী ও দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়া প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। একে অন্যকে বাধা দেওয়ার ঘটনাও আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পার্টির লোক হোক, যেই হোক, কেউ বাধা দিতে পারবে না।’
এসময় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।