ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’
- আপডেট সময় : ০৭:১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪৫১ বার পড়া হয়েছে
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’। এর প্রভাবে বাংলাদেশের কোনো কোনো জায়গায় ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্র বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর ও মছলিপত্তনমের মাঝখান দিয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়া মিগজাউমের চোখ স্থানীয় সময় দুপুর নাগাদ স্থলভাগে উঠে পড়বে। এরপর এটি তামিলনাড়ু হয়ে সরে যাবে। রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া ঝড়-বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিতে চেন্নাইয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
চেন্নাই পুলিশ জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিতে শহরে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। শহরের বেসান্ত নগর এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন মারা গেছেন। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এক নারী ও পুরুষের অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া চেন্নাই শহরে আরও দুজনের মরদেহ পাওয়া গেছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেছেন, গতকাল সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের কাছে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার এবং অন্ধ্র প্রদেশের নেলোর ও প্রকাশম জেলা বরাবর ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তাই তামিলনাড়ুর চেন্নাই, তিরুভাল্লুর এবং কাঞ্চিপুরম জেলার কাছে বাতাসের গতিবেগ ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে বলে জানান মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র। তিনি বলেন, মিগজাউমের গতিবেগ এখন প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার। তামিলনাড়ু উপকূলের কাছে গিয়ে এর গতিবেগ আরও কমবে।
তবে অন্ধ্র প্রদেশে গিয়ে ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়টির গতি বাড়বে এবং মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত নেলোর এবং মাচিলিপাথনাম এলাকায় এর গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করছেন মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র।
এদিকে চেন্নাইয়ে গতকাল সোমবার ঘূর্ণিঝড় ও প্রবল বৃষ্টিজনিত কারণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। চেন্নাই পুলিশের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা পিটিআই বলেছে, চেন্নাই শহরের বেসান্ত নগর এলাকায় ঝড়ে গাছ উপড়ে গিয়ে বিদ্যুতের ছিন্ন করেছে এবং এ সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন মারা গেছে। অন্যদিকে নগরীর ইস্ট কোস্টাল রোডের কানাথুর এলাকায় একটি নির্মাণাধীন দেওয়াল ধসে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নগরের অন্যান্য এলাকা থেকে আরও দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তামিলনাড়ুর চেন্নাইসহ একাধিক জায়গায় একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। প্লাবিত চেন্নাই বিমানবন্দরের রানওয়ে। ফলে বাতিল করা হয়েছে একাধিক ফ্লাইট। অন্তত ২০টি ফ্লাইটের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। চেন্নাই বিমানবন্দর আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং রাজ্য সরকার চেন্নাই, চেঙ্গলপাট্টু, কাঞ্চিপুরম এবং তিরুভাল্লুর জেলায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে।
তবে মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতির হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ধীরে ধীরে ভারী বৃষ্টিপাত কমে আসবে এবং একই সঙ্গে বাতাসের গতিবেগও কমে আসবে।
যে কারণে মিলছে না শাহজালালের ই–গেইটের সুফলযে কারণে মিলছে না শাহজালালের ই–গেইটের সুফল
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতকাল তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় সমস্ত সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে অন্ধ্র প্রদেশ সরকার আটটি জেলায় সতর্কতা জারি করেছে। জেলাগুলো হচ্ছে—তিরুপতি, নেলোর, প্রকাশম, বাপটলা, কৃষ্ণা, পশ্চিম গোদাবরী, কোনাসিমা এবং কাকিনাদা। উপকূলীয় এলাকা পুদুচেরিতে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।