বৈদেশিক ঋণ বোঝা বাড়ছে
চলতি মাসে রিজার্ভ আর কমবে না: বাংলাদেশ ব্যাংক
- আপডেট সময় : ০৩:১৩:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪২৫ বার পড়া হয়েছে
প্রতিমাসেই কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে এবার রিজার্ভ নিয়ে কিছুটা সুখবর দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি ডিসেম্বর মাসে দেশের রিজার্ভ আর কমবে না, বরং কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।
সম্প্রতি গণমাধ্যমের কাছে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি। রিজার্ভ না কমার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক মুখপাত্র উল্লেখ্য করেছেন বিদেশি ঋণ ও সহায়তার বড় অংক আসবে ডিসেম্বরে।
জানা গেছে, ডিসেম্বরে বড় অংকের বিদেশি ঋণ ও বাজেট–সহায়তা আসবে। চলতি মাসে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে বাজেট–সহায়তার ৪০ কোটি ডলার যুক্ত হবে রিজার্ভে । এ ছাড়া ১২ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাদের পর্ষদে ঋণের অনুমোদন দেওয়ার কথা। অনুমোদিত হলে পরের দিনই দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ডলার রিজার্ভে যুক্ত হবে। ফলে চলতি মাসে মোট ১০৮ কোটি ডলার আসতে পারে বিদেশি সংস্থাগুলো থেকে।
মুখপাত্র মেজবাউল হক আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, চলতি ডিসেম্বরেই এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সহায়তা ও ঋণ বাবদ ১ মিলিয়ন ডলারের বেশি পাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর তাতেই প্রতিদিনের ডলার বিক্রির চাপ সামাল দেওয়ার পাশাপাশি রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে।
রাসায়নিক সার, জ্বালানিসহ সরকারি আমদানির জন্য নিয়মিত ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। মঙ্গলবার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার। তবে আইএমএফের হিসেব পদ্ধতিতে রিজার্ভ ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের মতো। চলতি অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অন্যদিকে একবছরে বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৩৪৯ কোটি ডলার । টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৩৯ হাজার কোটি। গত বছরের জুনে মোট বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৫৪৫ কোটি ডলার। যা চলতি বছরের জুনে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮৯৪ কোটি ডলার।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বৈদেশিক ঋণ ও বিনিয়োগে গত জুন পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, একবছরে বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণ সামগ্রিক ভাবে বাড়লেও, গত বছর ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে নেমেছে মাত্র ৩ দশমিক ৭ ভাগে। আগের বছর যা ছিলো ১৭ শতাংশ।
দীর্ঘমেয়াদি বিদেশি ঋণ বেড়েছে, কমেছে স্বল্পমেয়াদি ঋণ। গত বছরের জুনে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ছিল ৭ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার। চলতি বছরের জুনে যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ২৯০ কোটি ডলারে। আর এক বছরে স্বল্পমেয়াদি ঋণ, ২ হাজার ৬৫ কোটি ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬০৩ কোটি ডলারে। গত কয়েক মাসে এ ধরনের ঋণ আরও কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মোট এফডিআইয়ের মধ্যে মাত্র ৮০ কোটি ডলার এসেছে বিদেশ থেকে পুঁজি হিসাবে। বাকি অর্থ দেশে কার্যরত বিদেশি কোম্পানিগুলোর মুনাফা থেকে পুনরায় বিনিয়োগ ও এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণ। দেশে ক্রিয়াশীল বিদেশি কোম্পানিগুলোর অর্জিত মুনাফা থেকে পুনরায় বিনিয়োগ হিসাবে এফডিআই এসেছে ২৩৭ কোটি ডলার।
মাত্র ৮ কোটি ডলার এসেছে এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণ হিসাবে। গত অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি নিট পুঁজি এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৬ কোটি ডলার। সব মিলে এসেছে ২৯ কোটি ডলার।