তাপমাত্রা নামার সঙ্গে সঙ্গেই দেশের বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানা রোগের আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন বয়সী মানুষ ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। অনেক হাসপাতালে শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় মেঝেতে রেখেই চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে গত কয়েকদিন ধরে বেড়েছে রোগীর চাপ। শীতের প্রকোপ বাড়ায় ঠান্ডাজনিত উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে অনেক রোগী। এদের মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশি।
রোগীর চাপ বাড়ায় একই শয্যায় একাধিক শিশুকে রেখে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। এর পরও হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় রাখতে হচ্ছে রোগীদের। শেরপুর জেলা হাসপাতালেও দেখা গেছে একই চিত্র। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে গত কয়েকদিনে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও বেড়েছে শিশু ও বয়স্ক রোগীর চাপ।
রোগীর স্বজনরা জানান, 'দুই-তিন দিন অসুস্থ বাচ্চাকে নিয়ে বাড়িতে অপেক্ষা করেছি, যেন সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে এখন অনেক বেশি শরীর খারাপ হয়ে গেছে বলে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।'
আরেক রোগী জানান, এত রোগীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জায়গা দিতে পারে নাই। তাই এক শয্যায় এখন দুই জন করে থাকতে হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১৫ শয্যার বিপরীতে গড়ে প্রতিদিন রোগী আসছে দেড়শর বেশি। একই অবস্থা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও। চিকিৎসকেরা জানালেন, ঠাণ্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা।
হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনরা বলছেন, 'আমাদের রোগীকে আমরা অনেক দুর্বল অবস্থায় হাসপাতালে এনেছি। এখন যে ওকে একটু বিশ্রাম নিতে বলব, সে জায়গাটুকুও নেই।'
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আরএমও আনোয়ার হোসেন বলেন, 'আমরা আমাদের সাধ্যমত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।'
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন গড়ে দেড় শতাধিক রোগী আসছেন। আর নড়াইল সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে দৈনিক চিকিৎসা নিচ্ছেন একশর বেশি রোগী।
নড়াইল সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আলিমুজ্জামান সেতু বলেন, হাসপাতালে রোগী যা আছে তাদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো জায়গার অভাব।
ঠান্ডাজনিত রোগ এড়াতে শিশু ও বয়স্কদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।